Thank you for trying Sticky AMP!!

বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতার বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশন

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া পশ্চিম ইউনিয়ন ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি সাজেদুল ইসলাম সজলের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে ১০ দিন ধরে অনশন করছেন এক তরুণী। এই ঘটনায় বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছেন সাজেদুল। ওই তরুণীর ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা ছাত্রলীগ।

সাজেদুলের কানিকশালগাঁও গ্রামের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অবস্থান নেওয়া ওই তরুণীর অভিযোগ, কয়েক বছর ধরে তাঁর সঙ্গে সাজেদুলের প্রেমের সম্পর্ক। বিয়ের কথা বলে তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন সাজেদুল। এরপর তিনি বিয়ের জন্য চাপ দিলে সাজেদুল রাজি হচ্ছিলেন না। একপর্যায়ে গত ২৬ জুন তিনি বাদী হয়ে রুহিয়া থানায় সাজেদুলের বিরুদ্ধে একটি ধর্ষণ মামলা করেন।

তরুণীর করা ধর্ষণ মামলার বিষয়টি রুহিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার রায় নিশ্চিত করেছেন।

ধর্ষণ মামলায় সাজেদুলকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। দুই মাস কারাভোগের পর উচ্চ আদালতের মাধ্যমে তিনি জামিন পেয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন। গত ৩১ আগস্ট সাজেদুল বাসায় ফিরে এলে ওই তরুণী তাঁর বাড়িতে এসে বিয়ের দাবি করে অনশন শুরু করেন।

এ বিষয়ে ওই তরুণী বলেন, ‘সজল জেলে থাকা অবস্থায় তাঁর সঙ্গে কয়েকবার দেখা করি। সে সময় ও আমাকে বলেছিল, যেদিন সে জেল থেকে বের হয়ে আসবে, সেদিন যেন আমি ওদের বাড়িতে চলে আসি। তাঁর কথামতো আমি ওদের (সজলের) বাড়িতে চলে এসেছি। ওদের পরিবারের লোকজন বিষয়টি মেনে না নেওয়ায় আমি এখানে অনশন শুরু করি। আমাকে বিয়ে না করলে, আত্মহত্যা ছাড়া কোনো পথ নেই। আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিতে সজলের আত্মীয়স্বজন নির্যাতন করছেন। যতই অত্যাচার হোক, আমি এ বাড়ি ছেড়ে যাব না।’

এ বিষয়ে সাজেদুলের মা সাহেরা বানু ওই তরুণীর সঙ্গে তাঁর ছেলের সম্পর্কের কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘কিছুদিন আগে ওই মেয়ে সজলকে নিয়ে এলাকার একটি পার্কে ঘুরতে যায়। এরপর মেয়েটির ভাই ও তার পরিবারের লোকজন পার্ক থেকে সজলকে ধরে নিয়ে তাঁদের বাড়িতে আটকে রাখেন এবং সজলকে বিয়ের জন্য চাপ দেন। সে সময় সজল বিয়েতে রাজি না হওয়ায় ফাঁসানোর জন্য ধর্ষণ মামলা দেওয়া হয়।’

সাজেদুলের বাবা হামিদুল ইসলাম বলেন, ‘সজল বাড়িতে আসার পরপরই মেয়েটি তাঁর পরিবারের লোকজনকে নিয়ে আমার বাড়ির একটি রুমে ঢুকে পড়ে। পরে মেয়েটি সজলের সঙ্গে তাঁকে বিয়ে দেওয়ার দাবি করতে থাকে। আমরা বাধা দিলে গেলে মেয়েটি উল্টো বাড়ির সদস্যদের মারধর করে। এ ঘটনায় আমরা আদালতে একটি মামলাও করেছি। মেয়েটি সেই থেকে আমাদের বাড়িতেই রয়েছে।’

ছাত্রলীগ নেতার বাড়িতে তরুণীর অনশনের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সদর উপজেলার রুহিয়া পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অনিল কুমার সেন। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে বিড়ম্বনার মধ্যে আছি। একটা সমাধানের চেষ্টা চলছে।’

মেয়েটি বাড়িতে অবস্থান নেওয়ার পর থেকে সাজেদুল এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন। তাঁর সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগে চেষ্টা করেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার পারভেজ জানান, ছাত্রলীগ কখনই অনৈতিক কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করে না। সাজেদুলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলার পর সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা ও দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য তাঁকে ২৭ জুন ছাত্রলীগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।