Thank you for trying Sticky AMP!!

বাগানের গাছ নিতে বন উজাড় করে রাস্তা

বন থেকে গাছ নিয়ে যেতে পাহাড় কেটে তৈরি করা হয়েছে প্রায় ৩০০ মিটারের রাস্তা। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে মিরসরাইয়ের করেরহাটের নলখোঁ ত্রিপুরাপাড়ায়। প্রথম আলো

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে পাহাড় কেটে ও বন উজাড় করে গাড়ি চলাচলের রাস্তা তৈরি করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল হোসেন। ৩০০ মিটারের এই রাস্তা তৈরিতে কাটা পড়ছে গাছপালা। উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের নলখোঁ ত্রিপুরাপাড়ার উত্তর পাশের পাহাড়ে তৈরি করা হচ্ছে এই রাস্তা। এলাকাটি অলিনগর বন বিটের অধীনে ।

কামরুল হোসেন মিরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক। এক মাস ধরে পাহাড়নিধন ও বন উজাড় চলছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সূত্র।

নলখোঁ এলাকার স্থানীয় লোকজন জানায়, ২০১২-১৩ সালের দিকে সেখানকার পাহাড়ে সামাজিক বনায়ন করা হয়। ওই সময় পাহাড়ে সেগুন, গামারি, আকাশমণিসহ বিভিন্ন জাতের গাছের চারা লাগানো হয়েছিল। স্থানীয় লোকজনই পাহাড়ে এসব বনায়নের উপকারভোগী ছিল। মাসখানেক আগে বন উজাড় ও পাহাড় কাটা শুরু হয়। গাড়ি চলাচলের জন্য সেখানে একটি রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে সামাজিক বনায়নের গাছ কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এই কাজে তাঁকে সহযোগিতা করছেন স্থানীয় দুই যুবক।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, প্রতিদিন পিকআপে করে করেরহাট বন কার্যালয়ের সামনে দিয়ে এসব গাছ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বন বিভাগ কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে করেরহাটের নলখোঁ এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে, বনের ভেতর থেকে কাটা গাছ পরিবহন করতে পাঁচটি পাহাড়ের উপরিভাগ কেটে ১০-১২ ফুট প্রস্থের রাস্তা তৈরি করা হচ্ছিল। রাস্তার দৈর্ঘ্য আনুমানিক ৩০০ মিটার। এই রাস্তা তৈরি করতে কাটা হচ্ছিল শত শত গাছ ও পাহাড়ি লতা-গুল্মের ঝোপঝাড়। রাস্তার আশপাশে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা গেছে গাছের টুকরো। কাটা পাহাড়ের শেষ মাথায় হাজারো গাছ কেটে ন্যাড়া করে করে ফেলা হয়েছে।

স্থানীয় কৃষক একরাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, দিন-রাত পাহাড়ের গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছেন প্রভাবশালী এক নেতা। বন বিভাগ কিছু করছে না।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের নেতা কামরুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটি তো আমার নিজের বাগান। এক ব্যক্তির কাছ থেকে মালিকানা কিনে নিয়েছি। এখন এসব গাছে আর লাভ নেই। তাই গাছ কেটে এখানে লেবুবাগান করব।’

কামরুল হোসেন বলেন, শ পাঁচেক গাছ কাটা হয়েছে। তবে রাস্তা বানানোর কথা ঠিক নয়। আর বন বিভাগের স্থানীয় কর্মকর্তাকে জানিয়ে গাছ কাটা হচ্ছে বলে কামরুল দাবি করেন।

করেরহাট রেঞ্জের অলিনগর বন বিটের কমকর্তা কে বি এম ফেরদৌস প্রথম আলোকে বলেন, ‘গাছ কাটতে কেউ আমাদের অনুমতি নেয়নি।’

এ বিষয়ে করেরহাটহাট রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক এ জেড এম হাছানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় সরেজমিনে অলিনগর বন বিটের নলখোঁ এলাকায় গিয়ে পাহাড় কেটে রাস্তা তৈরি করা ও বনের গাছ কাটার প্রমাণ পেয়েছি। এই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তির বিরুদ্ধে বন মামলা দায়ের করা হবে।’