Thank you for trying Sticky AMP!!

বায়োমেট্রিক হাজিরাযন্ত্রের জন্য বেশি টাকা আদায়

কুমিল্লা মনোহরগঞ্জ উপজেলার দিশাবন্ধ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বায়োমেট্রিক যন্ত্রে হাজিরা দিচ্ছেন এক শিক্ষক। গতকাল সকালে। ছবি: প্রথম আলো

কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার ১০৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কম দামের বায়োমেট্রিক হাজিরাযন্ত্রের জোগান দিয়ে বেশি টাকা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মো. আমিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে।

গত রোববার থেকে ওই যন্ত্র বিভিন্ন বিদ্যালয়ে স্থাপন করা হচ্ছে। এতে ৯ হাজার টাকার যন্ত্র ২৩ হাজার টাকায় কিনতে বাধ্য হচ্ছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ উপজেলার শিক্ষকেরা। তাঁরা বলছেন, প্রতিটি যন্ত্রের জন্য ১৪ হাজার টাকা বেশি আদায় করা হচ্ছে। ১০৪টি বিদ্যালয় থেকে অতিরিক্ত ১৪ লাখ ৫৬ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ভাইস চেয়ারম্যানের বলেন, ‘একই কোম্পানির বিভিন্ন দামের যন্ত্র রয়েছে। তিন বছর ওয়ারেন্টি নেওয়া ওই যন্ত্রের দাম পড়েছে ১৯ হাজার টাকা। ভালো জিনিসের দাম একটু বেশিই। বাড়তি নিচ্ছি মাত্র চার হাজার টাকা।’

জানা গেছে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ডিজিটাল হাজিরা নিশ্চিত করার জন্য এ বছর প্রতিটি বিদ্যালয়ে বায়োমেট্রিক হাজিরাযন্ত্র বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও মনোহরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম শিক্ষকদের ডেকে এই যন্ত্র তিনি সরবরাহ করবেন বলে জানান। এরই পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলার ১০৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রোববার থেকে ওই যন্ত্র স্থাপনের কাজ শুরু হয়। এতে রিয়েল টাইম ব্র্যান্ডের আরএস২০ ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিডার মেশিন বসানো হয়। শিক্ষকদের দাবি, ওই মেশিনের দাম ৯ হাজার টাকা। কিন্তু প্রতিটি বিদ্যালয় থেকে ২৩ হাজার টাকা করে নেওয়া হচ্ছে।

সরেজমিনে মনোহরগঞ্জ উপজেলার হাটিরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দিশাবন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আশিরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খানাতুয়া, গোয়ালিয়ারা, মৈশাতুয়া, ছিখটিয়া বিদ্যালয়ে দেখা গেছে, বায়োমেট্রিক হাজিরাযন্ত্র বসানো আছে।

হাটিরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘২৩ হাজার টাকা দিয়ে ওই মেশিন আমাদের বিদ্যালয়ে রোববার বসানো হয়েছে।’

আশিরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক মজুমদারও একই দামে যন্ত্র বসিয়েছেন বলে জানান।

জানতে চাইলে মনোহরগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মইনুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সৌন্দর্যবর্ধন ও ক্ষুদ্র মেরামতের জন্য ৫০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেয় সরকার। ওই টাকা থেকে এবার বায়োমেট্রিক হাজিরাযন্ত্র কেনা হচ্ছে। আগামী দু-এক দিনের মধ্যে স্লিপের মাধ্যমে ওই টাকা ছাড় দেওয়া হবে। তখন সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় টাকা পরিশোধ করবে। যন্ত্রের দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে হলে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলেন।

জানতে চাইলে আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘তিন বছরের ওয়ারেন্টি নেওয়া মেশিন সরবরাহ করছি। একই কোম্পানির নানা দামের মেশিন রয়েছে। আমি ভালো যন্ত্র দিয়েছি। তাই দাম বেশি।’

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন সিদ্দিকী বলেন, কোথাও অনিয়ম হলে সেটি খতিয়ে দেখা হবে।