Thank you for trying Sticky AMP!!

মাদকসেবনের প্রতিবাদ করায় স্ত্রীর হাত-পা ভেঙে দিলেন স্বামী

স্বামীর নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ পারভিন আক্তার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন

মাদকসেবনের প্রতিবাদ করায় লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে স্ত্রীর হাত-পা ভেঙে দিয়েছেন বলে স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার রাতে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের পল্লিবিদ্যুৎ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। রাতেই স্বামী নুর ইসলামকে আটক করে পুলিশ। পরে তাঁকে তাঁর শ্বশুরের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে শনিবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ পারভিন আক্তারকে (২৪) ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি বর্তমানে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় শনিবার সকালে পারভিনের বাবা শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে নুর ইসলামের বিরুদ্ধে ঠাকুরগাঁও থানায় মামলা করেন।

বিয়ের পর থেকে পারভিনকে নুর ইসলাম মারধর করতেন, এটা তিনি শুনেছেন। কিন্তু অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে মারধর করে হাত-পা ভেঙে দেওয়া হবে, এটা মেনে নেওয়া যায় না।
পারভিনের বাবা শফিকুল ইসলাম

পারভিন আক্তারের স্বজন ও স্থানীয় রহিমানপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু হাসান মো. আব্দুল হান্নানের ভাষ্য, প্রায় আট মাস আগে রহিমানপুর ইউনিয়নের পল্লিবিদ্যুৎ এলাকার নুর ইসলামের সঙ্গে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড়বাড়ী ইউনিয়নের মালঞ্চা গ্রামের পারভিন আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে প্রায়ই মাদকসেবন করে বাড়িতে ফিরতেন নুর ইসলাম। মাদকসেবনের প্রতিবাদ করলে পারভিনকে মারধর করতেন তিনি।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার পারভিন তাঁর বাবার বাড়িতে বেড়াতে যান। শুক্রবার বিকেলে ফিরে এসে নুর ইসলামকে মদ্যপ অবস্থায় দেখতে পান তিনি। এর প্রতিবাদ করলে নুর ইসলাম উত্তেজিত হয়ে পারভিনকে চড়-থাপ্পড় মারতে শুরু করেন। একপর্যায়ে তিনি ঘরের দরজা বন্ধ করে লোহার রড দিয়ে পারভিনকে বেধড়ক পেটান। স্থানীয়রা দরজা ভেঙে পারভিনকে উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে পাঠান।

ওই হাসপাতালের চিকিৎসক সাকিব ইবনে আব্দুল্লাহ বলেন, আহত পারভিন আক্তারের দুই হাত ও দুই পায়ের মধ্যভাগে রড জাতীয় কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। এতে সেই অংশের হাড় ভেঙে গেছে। এখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর রাত ১২টার দিকে তাঁকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

পারভিনের বাবা শফিকুল ইসলাম বলেন, তাঁর মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা। বিয়ের পর থেকে পারভিনকে নুর ইসলাম মারধর করতেন, এটা তিনি শুনেছেন। কিন্তু অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে মারধর করে হাত-পা ভেঙে দেওয়া হবে, এটা মেনে নেওয়া যায় না।

ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বলেন, খবর পাওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে অভিযান চালিয়ে নুর ইসলামকে আটক করা হয়। পরে পারভিনের বাবা শফিকুল ইসলামের দায়ের করা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। আদালতে পাঠানো হলে বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।