Thank you for trying Sticky AMP!!

মামলা না নেওয়ায় আত্মহননের চেষ্টা

রংপুরের বদরগঞ্জে এক কলেজছাত্রী (১৯) আত্মহননের চেষ্টা চালিয়েছেন। ছাত্রীর অভিযোগ, তাঁকে প্রতিবেশী এক তরুণ ধর্ষণের চেষ্টা চালান। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরও পুলিশ তা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত না করায় লজ্জা ও ক্ষোভে তিনি বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন।

বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিছুর রহমান বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগটি সত্য নয়। মূলত মেয়েটির সঙ্গে প্রতিবেশী এক তরুণের দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে ছেলের পরিবারের লোকজন ছেলেটিকে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে ছেলের বাবা-মায়ের কাছে বিয়ের প্রস্তাব পাঠানো হয়। এতে সাড়া না পেয়ে ওই তরুণের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ দেন ওই ছাত্রী। পরে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন। এরপরও মেয়ের বাবাকে সত্য অভিযোগ দেওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি আর থানায় আসেননি।

ওই ছাত্রীর মামলার এজাহার ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ওই ছাত্রী বদরগঞ্জ পৌর শহরের একটি কলেজ থেকে গত বছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে অকৃতকার্য হন। তাঁর অভিযোগ, কলেজে যাওয়া-আসার পথে উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের রাজরামপুর কাশিগঞ্জ গ্রামের হাশেম আলীর ছেলে নুরুন্নবী নয়ন (২২) প্রায়ই তাঁকে উত্ত্যক্ত করতেন। বছর দুয়েক আগে এ নিয়ে এলাকায় সালিস বৈঠকও হয়। ওই সালিসে উত্ত্যক্ত না করার অঙ্গীকারে নয়ন ক্ষমা চান। ওই ছাত্রীর অভিযোগ, ১৭ ফেব্রুয়ারি তিনি বাড়ির পাশে বের হলে সুযোগ বুঝে তাঁকে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা চালান নয়ন। এ ঘটনায় পরের দিনই ওই ছাত্রী নয়নকে আসামি করে বদরগঞ্জ থানায় ধর্ষণচেষ্টার লিখিত অভিযোগ দেন। দায়িত্ব পেয়ে অভিযোগটি প্রাথমিক তদন্ত করেন বদরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক জামিনুল ইসলাম।      

মেয়েটির বাবা অভিযোগ করেন, ‘লিখিত অভিযোগ দেওয়ার ছয় দিন অতিবাহিত হলেও ধর্ষণচেষ্টার ঘটনাটি পুলিশ থানায় রেকর্ড করেনি। ছেলের পরিবার প্রভাবশালী ও বিত্তশালী হওয়ার কারণে পুলিশ মামলা নিতে গড়িমসি করছে। বিচার না পেয়ে লজ্জায় ক্ষোভে অপমানে আমার মেয়ে বাড়ির লোকজনের অগোচরে গত শুক্রবার বিকেলে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছে।’

গতকাল রোববার বিকেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, মেয়েটিকে স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে। পাশে বসে আছেন তাঁর মা। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ বলে থানায় ন্যায়বিচার পাচ্ছি না। থানার পুলিশ মামলা নিলে আজ আমার মেয়ে বিষপান করত না। গরিব বলে কি বিচার পাব না?’

নুরুন্নবী নয়ন পলাতক থাকায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর বাবা হাশেম আলী বলেন, ‘ধর্ষণচেষ্টার ঘটনাটি মিথ্যা। আমার ছেলেকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবদুল হাই বলেন, ‘বিষপান করার পর ওই ছাত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসায় তিনি কিছুটা সুস্থ হয়েছেন। তবে পুরোপুরি সুস্থ হতে আরও কয়েক দিন সময় লাগতে পারে।’