Thank you for trying Sticky AMP!!

মুঠোফোনে কিশোরীর বিয়ে, আট মাস পর শ্বশুরবাড়িতে লাশ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে শ্বশুরবাড়ি থেকে খাদিজা বেগম (১৫) নামের এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ সোমবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে উপজেলা সদরের বড্ডাপাড়া থেকে পুলিশ ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে। খাদিজার পরিবারের অভিযোগ, তাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর বাড়িতে লাশ রেখে শ্বশুরবাড়ির লোকজন পালিয়েছে।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র জানায়, আট মাস আগে সরাইল উপজেলা সদরের বড্ডাপাড়া গ্রামের আলী আকবরের মধ্যপ্রাচ্যপ্রবাসী ছেলে বাপ্পি মিয়ার (৩০) সঙ্গে মুঠোফোনে একই উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের যোগিপাড়া গ্রামের আলী রাজার মেয়ে খাদিজা বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় খাদিজা নোয়াগাঁও পূর্ব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। বিদ্যালয়ের নথিপত্রে তার জন্ম তারিখ ৮ মে ২০০২। বাপ্পি মিয়া এর আগে আরও তিনটি বিয়ে করেন। দরিদ্র পরিবারের মেয়ে খাদিজা বিয়ের পর থেকে অধিকাংশ সময় শ্বশুরবাড়িতেই থাকতেন। তবে এখনো স্বামীর সঙ্গে খাদিজার দেখা হয়নি। আজ সোমবার ভোর চারটার দিকে বাপ্পি মিয়ার পরিবারের লোকজন মুঠোফোনে খাদিজার পরিবারের লোকজনকে জানান খাদিজা স্ট্রোক করে মারা গেছে। ভোরে পরিবারের লোকজন শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে খাদিজার লাশ দেখতে পান।

সরেজমিনে যোগিপাড়া গ্রামে গেলে খাদিজার মা মাঞ্জু বেগম (৩৫) প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার মাইয়া ওই বাড়ির উফরে (দোতলায়) থাকত। কিন্তু তার লাশ পাই নিচে।’ শ্বশুরবাড়ির লোকজন মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যা করে পালিয়েছে অভিযোগ করে মাঞ্জু বেগম বলেন, ‘১০–১২ দিন আগে আমি মেয়েডারে আনতে গেছিলাম, তহন তারা (বাপ্পির মা-বাবা ও ভাইবোন) আমারে মারধর কইরা তাড়াইয়া দিছে। মেয়েডারে আনতে দেই নাই।’

প্রতিবেশীরা জানান, বাপ্পি মিয়ার পরিবারের লোকজনের সঙ্গে আশপাশের কারও সম্পর্ক নেই। কেউ ওই বাড়িতে প্রবেশ করতে পারে না।

নোয়াগাঁও পূর্ব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফুল আলম মৃধা প্রথম আলোকে বলেন, বিয়ের সময় মেয়েটি সমাপনী পরীক্ষার্থী ছিল। পরিবারের লোকজন গোপনে বাল্য দিয়ে দেন। বিয়ের কারণে তার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়।

খাদিজার লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী সরাইল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাকিব হাসান প্রথম আলোকে বলেন, খাদিজার লাশের গলায় সামান্য জখমের চিহ্ন রয়েছে। সোমবার ভোর থেকে শ্বশুর বাড়ির লোকজন নিচতলার একটি কক্ষে লাশ রেখে গা ঢাকা দিয়েছে। তাদের আটকের চেষ্টা চলছে।

সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুপক কুমার সাহা প্রথম আলোকে বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ওই গৃহবধূর গলায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এটি স্বাভাবিক মৃত্যু নয় বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। তবে এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি।