Thank you for trying Sticky AMP!!

যাওয়ার আগে ফাঁসিয়ে গেলেন

ফেনী

ফেনীতে নাশকতার মামলায় চার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে গোপনে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে পুলিশ ফেনী সদরসহ ৪টি থানায় ৯টি মামলা করেছিল। গত ৭ থেকে ১২ মের মধ্যে সব কটি মামলায় গোপনে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। প্রায় দেড় মাস পর বিষয়টি জানাজানি হলে গণমাধ্যমের কর্মীদের মধ্যে হইচই পড়ে যায়। ফেনীর বিদায়ী পুলিশ সুপার এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকার এ কাণ্ড ঘটান বলে অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে ফেনীর সাবেক পুলিশ সুপার এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। নুসরাত হত্যা মামলায় দায়িত্বে অবহেলার জন্য গত মে মাসে তাঁকে ফেনী থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছিল।

সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান হত্যা মামলার তদন্তে পুলিশের উদাসীনতা নিয়ে খবর প্রকাশ করায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে বলে স্থানীয় সাংবাদিকেরা অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগপত্রভুক্ত চার সাংবাদিক হলেন দৈনিক ফেনীর সময়-এর মোহাম্মদ শাহাদাত হোসাইন, ‘বাংলা নিউজ’-এর স্থানীয় প্রতিনিধি সোলাইমান হাজারী, দৈনিক স্টার লাইন-এর মাঈন উদ্দিন পাটোয়ারী ও দৈনিক অধিকার-এর স্থানীয় প্রতিনিধি এস এম ইউসুফ আলী।

চার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক ব্যবহার এবং বিশেষ ক্ষমতা আইনে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। গত বছরের বিভিন্ন সময় মামলাগুলো হয়েছিল ফেনী সদর, দাগনভূঞা, সোনাগাজী ও ছাগলনাইয়া থানায়। এসব মামলায় বিএনপিজামায়াতের নেতা-কর্মীরাও আসামি। 

ফেনীর বর্তমান পুলিশ সুপার (এসপি) খোন্দকার নুরুন্নবী প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি তিনি ফেনীতে যোগদান করার পর সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন। মামলাগুলোর অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল হওয়ায় এ মুহূর্তে পুলিশের কোনো কিছু করার নেই বলে তিনি মন্তব্য করেন।

স্থানীয় সাংবাদিকদের অভিযোগ, মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহানকে আগুনে পুড়িয়ে মারার ঘটনার তদন্তে পুলিশের উদাসীনতা নিয়ে ফেনীর সাংবাদিকেরা সংবাদ প্রকাশ করে আসছিলেন। এ কারণে ফেনীর তৎকালীন পুলিশ সুপার এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকার স্থানীয় সাংবাদিকদের ওপর ক্ষুব্ধ হন। তাঁর তত্ত্বাবধান ও নির্দেশে এ চার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে নাশকতার পুরোনো মামলায় পুলিশ তড়িঘড়ি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।

নাশকতা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত সাংবাদিক শাহাদাত হোসাইন প্রথম আলোকে জানান, তিনি ফেনী থেকে প্রকাশিত স্থানীয় দৈনিকের সম্পাদক ও প্রকাশক। তাঁর পত্রিকায় নুসরাত হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রকাশিত সংবাদ ও কার্টুন দেখে তৎকালীন পুলিশ সুপার ক্ষুব্ধ হন। এ কারণে তাঁকে নাশকতার মামলায় জড়ানো হয়েছে।

এস এম ইউসুফ আলী প্রথম আলোকে জানান, দৈনিক অধিকার-এ ফেনীর কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার জেলার বিভিন্ন থানায় অবস্থান করা নিয়ে তথ্যবহুল প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে পুলিশ তাঁকে নাশকতার মামলায় জড়িয়েছে।

ফেনী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি নুরুল করিম মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, সংবাদকর্মীদের এ ধরনের মামলায় জড়ানো নজিরবিহীন। এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে অভিযোগপত্রভুক্ত চার সাংবাদিককে অব্যাহতি দিতে হবে। অন্যথায় সাংবাদিক সমাজ রাস্তায় নামতে বাধ্য হবে।