Thank you for trying Sticky AMP!!

রামগঞ্জে বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়ার নামে বাণিজ্য

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ইছাপুর ইউনিয়নে বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়ার নামে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, আওয়ামী লীগ নেতা ও বিদ্যুৎ বিভাগের এক কর্মচারী স্থানীয়দের কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা আদায় করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত জুলাই থেকে তাঁরা টাকা আদায় শুরু করেন। কিন্তু এখনো বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়া হয়নি।
বিদ্যুৎ-সংযোগ নেওয়ার জন্য টাকা দিয়েছে এমন ১০ জন অভিযোগ করেন, উপজেলার ইছাপুর ইউনিয়নের ইছাপুর, দক্ষিণ শ্রীরামপুর, নারায়ণপুর, উত্তর শ্রীরামপুর, নয়নপুর, নুনিয়াপাড়া, শিবপুর ও সান্দানপুর গ্রামে বিদ্যুৎ নেই। ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শহিদ উল্যাহ, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সিরাজুল ইসলাম, ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মামুনুর রশিদ, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. লিটন, ইছাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নূর মোহাম্মদ খান, ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি লোকমান হোসেন, ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক নেতা নূর হোসেন ও রামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ের বিদ্যুৎ ব্যবহার সমন্বয়কারী (পিওসি) আনোয়ার হোসেন মিঝি বিদ্যুৎ-সংযোগ সরবরাহের নামে তাঁদের কাছ থেকে টাকা তুলেছেন। প্রত্যেকের কাছ থেকে তাঁরা তিন থেকে সাত হাজার টাকা আদায় করেছেন।
দক্ষিণ শ্রীরামপুর গ্রামের কার্তিক চন্দ্র নন্দী নামের এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, উত্তর শ্রীরামপুর গ্রামের হৈদের বাড়ি, স্বর্ণকার বাড়ি, বণিক বাড়ি, কবিরাজ বাড়ি, দপ্তরি বাড়ি, সরকার বাড়ি, বলাইর বাড়ি থেকে ৩৮টি মিটারের জন্য ১ লাখ ৯ হাজার টাকা তোলা হয়। পরে এ টাকা ইছাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নূর মোহাম্মদ খানের হাতে তিনি তুলে দেন। দক্ষিণ শ্রীরামপুর গ্রামের বাসিন্দা আবদুর রশিদসহ আটজন জানিয়েছেন, ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম চকিদার বাড়ি থেকে সাতজন, বশির চেরাং বাড়িতে ছয়জন, রায়ছাড়া বাড়ির তিন, লোচার বাড়ির দুই, ছাড়া বাড়ির আট, মনু পাটোয়ারী বাড়ির চারজনসহ ৩০ জন গ্রাহকের কাছ থেকে জনপ্রতি ৫ হাজার টাকা করে আদায় করেন।
ইছাপুর ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ইউপি চেয়ারম্যানসহ তাঁরা মিটার প্রতি তিন হাজার টাকা করে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। খরচের জন্য আমি ২৬-২৭ জনের কাছ থেকে টাকা তুলেছি।’ ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি লোকমান হোসেন বলেন, লক্ষ্মীপুর ও রামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ের লোকজনকে খরচ দিতে হয়েছে। এ খরচের জন্য গ্রাহকের কাছ থেকে দুই-তিন হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছে।
রামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ের পিওসি আনোয়ার হোসেন মিঝি জানান, বিদ্যুতের জন্য টাকা উত্তোলন বা ভাগ-বাঁটোয়ারার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।
ইছাপুর ইউপির চেয়ারম্যান শহিদ উল্যা বলেন, ‘খরচের জন্য এক-দুই হাজার টাকা করে উত্তোলন করা হয়েছে। একটি চক্র চাচ্ছেন আমাদের এলাকায় বিদ্যুতের এ কাজ না হউক। আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত করতে তাঁরা প্রচার করছেন।’
রামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক আকবর হোসেন মিয়া বলেন, ‘বিষয়টি আমিও জেনেছি। এ নিয়ে পিওসি আনোয়ারের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। টাকা নেওয়ার ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িত নন বলে আমাকে জানিয়েছেন। ওই এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য জরিপ হয়েছে।’
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম রুহুল আমিন বলেন, ‘এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’