Thank you for trying Sticky AMP!!

লাঠিটিলা সংরক্ষিত বনে গাছচোরদের তৎপরতা

চুরির উদ্দেশ্যে সেগুনগাছের গোড়া কেটে রেখেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল লাঠিটিলা সংরক্ষিত বনের লাঠিছড়া এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার লাঠিটিলা সংরক্ষিত বনে দুই হাজার একর টিলাভূমিজুড়ে সেগুনগাছের বাগান রয়েছে। বাগানের গাছগুলোর বয়স ১৭ থেকে ৮১ বছর পর্যন্ত। সম্প্রতি দুর্বৃত্তরা ওই বাগান থেকে সাতটি সেগুনগাছ চুরি করে নিয়েছে। পাচারের চেষ্টাকালে একটি গাছের কয়েকটি টুকরা জব্দ করার ঘটনাও ঘটেছে। চুরির ঘটনায় ফরেস্ট ভিলেজাররা (বনে বসবাসকারী লোক) জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে।

বন বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লাঠিটিলা বনের আয়তন ৫ হাজার ৬৩১ একর। সেখানে বিভিন্ন প্রজাতির বনজ গাছ রয়েছে। বন বিভাগের উদ্যোগে ১৯৩৮ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত সেখানকার দুই হাজার একর টিলাভূমিতে সেগুনগাছের বাগান করা হয়। ২০০১–০২ অর্থবছরে দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে কিছু গাছ বিক্রি হয়। এরপর আর গাছ বিক্রি হয়নি।

লাঠিটিলা বনের বিভিন্ন স্থানে বন বিভাগের অনুমোদিত অন্তত ৩০০ পরিবারের বসতি রয়েছে। এসব পরিবারের লোকজন বনের গাছপালা দেখাশোনা করেন। এপ্রিলের শেষ দিকে দুর্বৃত্তরা বনের লাঠিছড়া, উফতাছড়া ও তাইয়াছড়া এলাকা থেকে বড় আকারের সাতটি সেগুনগাছ চুরি করে কেটে নিয়ে যায়। ২৫ এপ্রিল একটি ট্রাকের পেছনে বালু দিয়ে সেগুনগাছের টুকরা ঢেকে রেখে তা অন্যত্র পাচারের চেষ্টা চলছিল। খবর পেয়ে বন বিভাগের লোকজন পাশের বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ এলাকায় ট্রাকটি আটকান। এ সময় বালুর ভেতর গাছের ছয়টি টুকরা (প্রায় ২২ ঘনফুট) পাওয়া যায়। পরে ট্রাকসহ গাছের টুকরাগুলো জব্দ করা হয়। তবে ট্রাকচালকসহ পাচারকারী ব্যক্তিরা টের পেয়ে আগেই সটকে পড়েন। লাঠিছড়ায় একটি বড় সেগুনগাছের গোড়া অর্ধেক কাটা অবস্থায় রয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে লাঠিছড়া এলাকার অন্তত পাঁচজন বাসিন্দা বলেন, একসময় লাঠিটিলা বন থেকে প্রায়ই গাছ চুরি হতো। ১৫-২০ বছর ধরে এ কাজ বন্ধ ছিল। সম্প্রতি গাছচোরেরা আবারও তৎপর হয়ে উঠেছে। রাতে এসব গাছ চুরি হয়। ফলে স্থানীয় লোকজনের বাধা দেওয়ার সুযোগ থাকে না।

লাঠিটিলা বিটে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা রাঘনা বিটের ফরেস্টার নজরুল ইসলাম বলেন, লাঠিটিলা বনের লাঠিছড়া এলাকা থেকে চুরি হওয়া সেগুনগাছের কয়েকটি ২৫ এপ্রিল জব্দ করা হয়। এ কাজে স্থানীয় তিনজন ফরেস্ট ভিলেজারের জড়িত থাকার প্রাথমিক তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে বন আইনে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা হবে। তদন্তের স্বার্থে জড়িত ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন।

লাঠিটিলা বনের হেডম্যান (ফরেস্ট ভিলেজারদের প্রধান) আবদুর রাজ্জাক বলেন, গাছ চুরির ঘটনায় কোনো ফরেস্ট ভিলেজার জড়িত থাকলে, তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হোক। গাছ চুরি প্রতিহত করতে বন বিভাগকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।