Thank you for trying Sticky AMP!!

শিশুটিকে নিয়ে দর-কষাকষি চলছিল

দুই মাসের শিশু কোলে বকুলি বেগম। তাঁর বিরুদ্ধে শিশুটিকে বিক্রি করার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। ছবি: প্রথম আলো

বরিশালের উজিরপুর উপজেলায় দুই মাসের একটি শিশুকে বিক্রি করার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে এক নারীর বিরুদ্ধে। ওই নারী শিশুটিকে বিক্রির জন্য একাধিক দম্পতির সঙ্গে দরদাম করেছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিযোগ করেছেন। এ ঘটনায় ওই নারীকে আটক করে পুলিশ। পরে পুলিশ ওই শিশু ও নারীকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) জিম্মায় রাখে। গতকাল শুক্রবার উপজেলার শোলক ইউনিয়নের দত্তেশ্বর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দত্তেশ্বর গ্রামের দিনমজুর শহিদুল ইসলাম খানের স্ত্রী বকুলি বেগম (৪৮) কয়েক দিন ধরে ঘরে দুই মাসের একটি শিশু লালন-পালন করছিলেন। স্থানীয় রাহেলা বেগমসহ (৪০) কয়েকজন জানান, দুই দিন ধরে শিশুটিকে কেনার জন্য বকুলি বেগমের কাছে নিঃসন্তান একাধিক দম্পতি আসা–যাওয়া করেন। এ সময় দু–একজনের সঙ্গে দর-কষাকষি করতে দেখা যায় বকুলি বেগমকে। একপর্যায়ে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি চূড়ান্ত করা হয়। এ নিয়ে স্থানীয় লোকজন এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের জানান। একাধিক ব্যক্তি বিষয়টি উজিরপুর মডেল থানা- পুলিশকে অবহিত করেন।

উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউল আহসান জানান, স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে খবর পেয়ে গতকাল বিকেলে পুলিশ দত্তেশ্বর গ্রামের শহিদুল ইসলাম খানের বাড়িতে অভিযান চালায়। ওই সময় দুই মাসের একটি ছেলেশিশুকে উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বকুলি বেগমকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে বকুলি বেগম পুলিশকে একেকবার একেক তথ্য দেন। একবার বলেন, শিশুটি ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার মগরা গ্রামের মৃত শরিয়ত খানের পুত্র জামাল খানের। আবার কখনো বলেন, তাঁর ভগ্নিপতি দত্তেশ্বর গ্রামের ফারুক হোসেন বরিশালের শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে শিশুটিকে দত্তক নিয়ে এসে তাঁকে লালন-পালন করতে দিয়েছেন। কিন্তু কার কাছ থেকে দত্তক নিয়েছেন, সে সম্পর্কে কিছু বলতে পারেননি।

ওসি জানান, পরে পুলিশ খোঁজ নিয়ে বকুলি বেগমের কথার সত্যতা পায়নি। ফারুক হোসেন চট্টগ্রামে ব্যবসা করেন এবং তাঁর স্ত্রী প্রবাসে থাকেন। শিশুটির সঠিক পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর এ ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। শিশুটি ও বকুলি বেগমকে আপাতত শোলক ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নুরুল হক সরদারের জিম্মায় রাখা হয়েছে। শিশুটির প্রকৃত মা–বাবার খোঁজে তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। প্রকৃত মা–বাবার পরিচয় পাওয়া গেলে রহস্য উদ্‌ঘাটন হবে। তা না হলে বকুলি বেগমের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে বকুলি বেগম শিশু বিক্রির কথা অস্বীকার করে বলেন, তাঁর আত্মীয় ফারুক শিশুটিকে তাঁর কাছে রেখে গেছেন।

ফারুকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।