Thank you for trying Sticky AMP!!

সহকর্মীর মুখে থাকা আঁচড়ের দাগে খুলল হত্যার রহস্য

অপরাধ

সিলেটের গোয়াইনঘাটে নিখোঁজের দুদিন পর ধানখেত থেকে পাথরশ্রমিক রাসেল আহমদের (২০) লাশ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটনে তাঁর সহকর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। এ সময় মেহেদী হাসান (২৫) নামের এক শ্রমিকের মুখে নখের আঁচড় দেখতে পান গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল আহাদ।

এরপরই মেহেদীকে আটক করে শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। এ সময় মেহেদীর শরীরে আরও বিভিন্ন স্থানে নখের আঁচড় পাওয়া যায়। একপর্যায়ে পুলিশের জেরার মুখে মেহেদী হাসান স্বীকার করেন নিহত রাসেলের সঙ্গে ধস্তাধস্তিকালে এ ক্ষতগুলো হয়েছে। এরপরই রাসেল হত্যার ঘটনায় মেহেদীকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। পরে তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন তাহিরপুর শ্রীপুর এলাকার মেহেদী হাসান (২৫), একই এলাকার ইব্রাহিম মিয়া (৩০), সুলেমান মিয়া (৩৫), তরং এলাকার নজির হোসেন (২৮) ও শাহিদুল ইসলাম (২৬)।

প্রাথমিকভাবে জানা গেছে রাসেল আহমদ ওই পাঁচজনকে টাকা ধার দিয়েছিলেন। ১৫ অক্টোবর তাঁরা বাড়ি চলে যেতে চাইলে রাসেল পাওনা টাকা চান। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাসেল সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বেতগড় এলাকার বাসিন্দা। মাসখানেক আগে তিনি তাহিরপুর থেকে বালু-পাথরশ্রমিক হিসেবে কাজ করতে জাফলংয়ে আসেন। গত বুধবার রাতে নিখোঁজ হন রাসেল। সহকর্মীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার গোয়াইনঘাট থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন বাবা সবুর মিয়া। এরপর থেকে তদন্তে নামে পুলিশ। গত শুক্রবার দুপুরে জাফলং কান্দুবস্তি এলাকার একটি পুকুর পাড়ের পাশের ধানখেত থেকে রাসেল আহমদের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

রাসেল জাফলংয়ে মেলার মাঠ এলাকার কলোনিতে থাকতেন। পুলিশের একটি দল সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে শুক্রবার দুপুরে কথা বলতে গেলে মেহেদী হাসানের মুখে নখের আঁচড় এবং অসংলগ্ন কথাবার্তার একপর্যায়ে তাঁকে আটক করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে তথ্য দেন মেহেদী হাসান। তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁরাও জাফলংয়ে বালু-পাথরশ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। এ ঘটনায় রাসেলের বাবা সবুর মিয়া বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে গোয়াইনঘাট থানায় হত্যা মামলা করেন।

গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল আহাদ প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে রাসেল আহমদ ওই পাঁচজনকে টাকা ধার দিয়েছিলেন। ১৫ অক্টোবর তাঁরা বাড়ি চলে যেতে চাইলে রাসেল পাওনা টাকা চান। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। একপর্যায়ে তাঁকে মারধর করে পাথর এবং টাইলসের ধারালো অংশ দিয়ে খুন করে লাশ ধানখেতে ফেলে দেওয়া হয়। এর আগে রাসেলের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে মেহেদী হাসানের মুখ-বুক ও শরীরের বিভিন্ন অংশে নখের আঁচড়ের দাগ লাগে।

ওসি জানান, এ ঘটনায় রাসেলের বাবা হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের শনিবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

গৃহবধূর মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা

এদিকে কানাইঘাটে ফাতেমা বেগম (২৯) নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলায় ফাতেমার স্বামী মহরম আলীকে আসামি করা হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে ফাতেমার মা জুলেখা বেগম বাদী হয়ে মহরম আলীর নামে কানাইঘাট থানায় হত্যা মামলা করেন।

শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে কানাইঘাটের লক্ষ্মীপ্রসাদ পশ্চিম আগফৌদ পূর্ব গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে ফাতেমা বেগমের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল। পুলিশ ধারণা করছে, ফাতেমা বেগমকে ভারী কিংবা ধারালো কিছু দিয়ে আঘাতের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।

কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামসুদ্দোহা বলেন, ফাতেমা বেগমের মা বাদী হয়ে মেয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা করেছেন। মামলায় পারিবারিক কলহের জেরে মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।