Thank you for trying Sticky AMP!!

সুবর্ণচরে আবার গণধর্ষণ, নেপথ্যে নির্বাচনী দ্বন্দ্ব?

প্রতীকী ছবি

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে স্বামীকে আটকে রেখে ছয় সন্তানের মাকে (৩৫) গণধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় ওই নারীর স্বামীকে মারধর করা হয়। গতকাল রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। একই দিন অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদের এক প্রার্থীকে ভোট না দেওয়ায় এ নির্যাতন চালানো হয় বলে নির্যাতনের শিকার নারী ও তাঁর স্বামীর অভিযোগ।

নির্যাতনের শিকার নারীকে গতকাল রাত সাড়ে ১২টার দিকে মুমূর্ষু অবস্থায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আজ সোমবার সকালে ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর হাসপাতালে ছুটে যান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপক জ্যোতি খীসা।

হাসপাতালে দীপক জ্যোতি খীসা সাংবাদিকদের বলেন, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ওই নারী অভিযোগ করেছেন যে স্বামীর সঙ্গে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফেরার পথে কিছু লোক তাদের পথ রোধ করেন। পরে পাশের একটি কলাবাগানে নিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কোনো এক প্রার্থীকে ভোট দেওয়াকে কেন্দ্র করে কিছু লোকের সঙ্গে তাঁর বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এর জের ধরে এই ধর্ষণের ঘটনা বলে ওই গৃহবধূ দাবি করেছেন। তবে তদন্তে এ বিষয়ে বিস্তারিত বের হয়ে আসবে বলে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন। তিনি আরও বলেন, ওই নারীর স্বামী মামলা করবেন।

হাসপাতালে ভর্তি নির্যাতনের শিকার নারী বলেন, সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তাঁরা চশমা প্রতীকের পক্ষে ছিলেন। নির্বাচনের আগে থেকে তালা প্রতীকের সমর্থক ইউছুফ মাঝি তাদের হুমকি-ধমকি দেন। কিন্তু তাঁরা তাদের অবস্থানে অনড় ছিলেন। গতকাল স্থানীয় ভোটকেন্দ্রে গিয়ে চশমা প্রতীকে ভোট দেন। ওই নারীর দাবি, গতকাল দুপুর আড়াইটার দিকে তিনি আর তাঁর স্বামী মোটরসাইকেলে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে চশমা প্রতীকে ভোট দেন। এ নিয়ে কেন্দ্রেই ইউছুফ মাঝির সঙ্গে তাদের স্বামী-স্ত্রীর বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। তাঁদের ওই সময় বাড়ি ফেরার পথে দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।

নির্যাতনের শিকার নারী বলেন, হুমকির কারণে তখন তাঁরা ভোটকেন্দ্র থেকে বাড়িতে না গিয়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে যান। সেখান থেকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফেরার পথে স্থানীয় একটি বাজারের কাছে ১০-১২ জন তাদের পথরোধ করেন। তাদের মধ্যে বেচু মাঝি (৩৫), ফজলু (৩০) ও আবুল বাসার (২৫) তাঁকে কলাবাগানে নিয়ে ধর্ষণ করেন। আর বাকিরা তাঁর স্বামীকে অন্যদিকে নিয়ে আটকে রেখে মারধর করেন।

ওই নারীর স্বামীর ভাষ্য, রাত আটটার দিকে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে হামলাকারীরা সবাই দৌড়ে পালিয়ে যান। এ সময় তিনি চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে তাঁর স্ত্রীকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। তিনি বলেন, নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থীই ছিলেন আওয়ামী লীগের

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম প্রথম আলোকে বলেন, আজ ওই নারীর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে।

এর আগে গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর রাতে স্বামী-সন্তানদের বেঁধে রেখে এক নারীকে (৪০) মারধর ও গণধর্ষণ করা হয়। ওই ঘটনায় নির্যাতনের শিকার নারীর স্বামী বাদী হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে চরজব্বার থানায় মামলা করেন। নির্যাতিত নারীর অভিযোগ ছিল, ভোটকেন্দ্রে থাকা ব্যক্তিদের পছন্দের প্রতীকে ভোট না দেওয়ার জের ধরে ওই হামলা ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে গত ২৭ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।