Thank you for trying Sticky AMP!!

স্ত্রী-সন্তানেরা তাঁকে শিকলবন্দী রাখেন ১০টি বছর

আমির আলী

নাটোরের গুরুদাসপুরে একটি সুপারমার্কেটের মালিক তিনি। সম্পত্তির দিক দিয়েও তাঁর পরিবার এলাকায় প্রভাবশালী। অথচ মানসিক ভারসাম্যহীনতার অজুহাতে নিজ স্ত্রী ও সন্তানদের হাতে ১০ বছর শিকলবন্দী ছিলেন। অবশেষে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে গত বৃহস্পতিবার মুক্তি মিলেছে আমির আলী (৬০) নামের ওই ব্যক্তির।

আমির আলীর বাড়ি গুরুদাসপুরের নাজিরপুর ইউনিয়নের চন্দ্রপুর গ্রামে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আমির আলীর পরিবারে স্ত্রীসহ তিন ছেলে আছেন। ১০ বছর আগে মানসিক অসুস্থতার কথা বলে তাঁরা আমির আলীর পায়ে শিকল পরিয়ে বাড়ির পাশে একটি নোংরা কক্ষে বন্দী করে রাখেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ খবর পাওয়ার পর গত বৃহস্পতিবার তাঁকে উদ্ধার করেন।

ইউএনও তমাল হোসেন বলেন, নিজ সন্তানদের কাছে বাবার শিকলবন্দী থাকার ঘটনা দুঃখজনক। আমির আলীকে যে কক্ষে বন্দী রাখা হয়েছিল, সেই কক্ষের পাশেই শৌচাগার। বৃষ্টি হলেই কক্ষটিতে হাঁটুসমান পানি জমত। ছিল পোকামাকড়ের উপদ্রব। স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা শুনে তাঁকে বন্দিদশা থেকে মুক্ত করে নিজ বাড়িতেই ভালো কক্ষে থাকার ব্যবস্থা করা হয়।

তমাল হোসেন বলেন, উদ্ধারের পর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁদের কাছে কারণ জানতে চাইলে তাঁরা আমির আলীর মানসিক ভারসাম্যহীনতার কথা বলেছেন। কিন্তু যত কিছুই হোক নিজের স্ত্রী ও সন্তানের কাছে শিকলবন্দী থাকা যে কোনো দিক থেকেই অমানবিক। এ দিকটি বিবেচনা করেই আমির আলীকে মুক্ত করে পরে তার স্বজনদের সতর্ক করা হয়েছে, যাতে এমন ঘটনা আর না ঘটে।

আমিরের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম ও ছেলে মো. মঞ্জু জানান, ১৪ বছর আগে পাবনার মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয় আমির আলীর। কিন্তু তাতেও অবস্থার উন্নতি হয়নি। তাই শিকলবন্দী করে রাখা হয়।