Thank you for trying Sticky AMP!!

হোলি আর্টিজানে হামলা: রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু

গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন আজ বুধবার শুরু করেছে। কাল বৃহস্পতিবারও যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের শুনানির দিন ঠিক করেছেন আদালত। ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুজিবর রহমান এই দিন ঠিক করেন।

দিনের শুরুতে সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) গোলাম সারোয়ার খান যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করেন। হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার এজাহার এবং পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ আদালতে পড়ে শোনান। একই সঙ্গে এই মামলার অভিযুক্ত আট আসামি কী কী অপরাধ সংঘটিত করেছেন, তা আদালতের কাছে তুলে ধরেন সরকারি কৌঁসুলি। পিপি গোলাম ছারোয়ার খান আদালতকে বলেন, অভিযুক্ত জঙ্গি রাকিবুল ইসলাম ওরফে রিগ্যান হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার সঙ্গে জড়িত আসামিদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। হামলা করতে প্ররোচিত করেছেন। হামলার ষড়যন্ত্র করেছেন।

আদালতে দেওয়া রাকিবুল ইসলাম ওরফে রিগ্যানের ১৬৪ ধারার জবানবন্দি পড়ে শোনান পিপি ছারোয়ার। জবানবন্দিতে রাকিবুল ইসলাম আদালতকে বলেছিলেন, হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলাকারীদের তিনি মিরপুরে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে এই জঙ্গি হামলার প্রধান পরিকল্পনাকারী জঙ্গিনেতা তামিম চৌধুরীসহ অনেকের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল।
আরেক জঙ্গিনেতা জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী কীভাবে হামলাকারীদের সহায়তা করেছেন তা তুলে ধরেন পিপি ছারোয়ার। জবানবন্দিতে রাজীব গান্ধী আদালতকে বলেন, গাইবান্ধার একটি বাসায় বসে গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেন। ওই বৈঠকে অংশ নেন তামিম চৌধুরী, মেজর জাহিদ, সারোয়ার জাহান, মারজান ও শরিফুল ইসলাম খালেদ। এঁদের মধ্যে খালেদ ছাড়া সবাই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। পিপি আদালতকে বলেন, হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলায় ব্যবহার করা অস্ত্র সরবরাহ করার কাজে সহায়তা করেন জঙ্গি মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান। অভিযুক্ত জঙ্গি আবদুস সবুর খান ওরফে সোহেল মাহফুজ ওরফে হাতকাটা মাহফুজের ব্যাপারে পিপি আদালতকে বলেন, এই আসামি বিস্ফোরক দ্রব্যাদি সংগ্রহ ও বোমা বানানোর কাজে সহায়তা করেছেন। এই আসামির আদালতে দেওয়া জবানবন্দি পড়ে শোনান পিপি গোলাম ছারোয়ার। হাতকাটা মাহফুজ জবানবন্দিতে বলেন, ২০১৬ সালে তিনি নব্য জেএমবিতে যোগ দেন। এরপর গুলশানে বড় হামলা করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। তাঁকে লোক সংগ্রহ, অস্ত্র ও গ্রেনেড সরবরাহ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়।

২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে হোলি আর্টিজানে জঙ্গিরা হামলা চালায়। তারা অস্ত্রের মুখে দেশি-বিদেশি অতিথিদের জিম্মি করে। ওই রাতে অভিযান চালাতে গিয়ে পুলিশের দুই কর্মকর্তা নিহত হন। পরদিন সকালে সেনা কমান্ডোদের অভিযানে পাঁচ জঙ্গিসহ ছয়জন নিহত হয়। পরে পুলিশ ১৮ বিদেশিসহ ২০ জনের মরদেহ উদ্ধার করে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান একজন রেস্তোরাঁকর্মী। হামলার আড়াই বছরের মাথায় গত বছরের ২৩ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। এরপর ওই বছরের ২৬ নভেম্বর আট আসামির বিরুদ্ধে হোলি আর্টিজানে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মামলার বিচার।

হোলি আর্টিজান জঙ্গি হামলার মামলায় গ্রেপ্তার আট জঙ্গিকে আদালতের এজলাসকক্ষে তোলা হয়। এই মামলায় গ্রেপ্তার আট জঙ্গি আসামি হলেন রাশেদ ওরফে র‍্যাশ, রাকিবুল ইসলাম ওরফে রিগ্যান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী, মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, হাদিসুর রহমান ওরফে সাগর, আবদুস সবুর খান ওরফে সোহেল মাহফুজ ওরফে হাতকাটা মাহফুজ, শরিফুল ইসলাম খালেদ ও মামুনুর রশিদ।