Thank you for trying Sticky AMP!!

৩৭টি পদ, স্টেশনমাস্টার আছেন মাত্র আটজন

রাজবাড়ীতে অবস্থিত ১৫টি রেলস্টেশনে ৩৭টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন আটজন স্টেশনমাস্টার। এ ছাড়া রয়েছে বগি ও অন্যান্য জনবলের সংকট। এতে রেলের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
রাজবাড়ী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টারের কার্যালয় সূত্র জানায়, ব্রিটিশ আমলে ১৮৭১ সালে রাজবাড়ীতে রেলপথ স্থাপিত হয়। দেড় যুগ আগে রাজবাড়ীর কালুখালী থেকে গোপালগঞ্জের ভাটিয়াপাড়া ও পাঁচুরিয়া থেকে ফরিদপুর রেলযোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখন কারণ হিসেবে লোকসানের কথা বলা হয়েছিল। বন্ধ হওয়া এই দুটি রেলপথ সম্প্রতি পুনঃস্থাপন করে চালু করা হয়। বর্তমানে রাজবাড়ী জেলায় লুপলাইন ছাড়া রেলপথের দৈর্ঘ্য ৯৩ কিলোমিটার। এই রেলপথে স্টেশন রয়েছে মোট ১৫টি। স্টেশনগুলো হলো রাজবাড়ী, গোয়ালন্দঘাট, গোয়ালন্দ বাজার, পাঁচুরিয়া, সূর্যনগর, বেলগাছি, কালুখালী, পাংশা, মাছপাড়া, খানখানাপুর, বসন্তপুর, রামদিয়া, বহরপুর, আড়কান্দি ও নলিয়া জামালপুর। এর মধ্যে কালুখালী ও পাঁচুরিয়া রেলস্টেশনকে জংশন হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কালুখালী থেকে গোপালগঞ্জের ভাটিয়াপাড়া ও পাঁচুরিয়া থেকে ফরিদপুরের উদ্দেশে ট্রেনের ক্রসিং করানো হয়।
রাজবাড়ী রেলস্টেশন থেকে প্রতিদিন ফরিদপুরে উদ্দেশে ফরিদপুর এক্সপ্রেস, রাজশাহীর উদ্দেশে মধুমতী এক্সপ্রেস, খুলনার উদ্দেশে মেইল ট্রেন, পোড়াদহে শাটল ট্রেন ও গোপালগঞ্জের উদ্দেশে ট্রেন ছেড়ে যায়। প্রায় পাঁচ বছর আগে পণ্য পরিবহনকারী শিলিগুড়ি নামে একটি ট্রেন বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ ছাড়া রয়েছে বিভিন্ন ট্রেনের বগি-সংকট।
রাজবাড়ী রেলস্টেশনে স্টেশনমাস্টারের পদ রয়েছে চারটি। এ ছাড়া গোয়ালন্দঘাট, গোয়ালন্দ বাজার, পাঁচুরিয়া, বেলগাছি, কালুখালী, মাছপাড়া, খানখানাপুর, বসন্তপুর, বহরপুর, আড়কান্দি ও নলিয়া জামালপুর স্টেশনের প্রতিটিতে স্টেশনমাস্টারের তিনটি করে পদ রয়েছে। এর মধ্যে রাজবাড়ীতে দুজন ও গোয়ালন্দঘাট, গোয়ালন্দ বাজার, পাঁচুরিয়া, কালুখালী, পাংশা ও বহরপুর রেলস্টেশনে একজন করে স্টেশনমাস্টার কর্মরত রয়েছেন। এর মধ্যে পাঁচুরিয়া স্টেশনমাস্টার দায়িত্ব পালন করেন চারটি রেলস্টেশনে।
কালুখালী উপজেলার চরশ্রীপুর গ্রামের বাসিন্দা ইমরান খান বলেন, ট্রেনে যাতায়াতে খরচ কম ও নিরাপদ। তাই এই অঞ্চলের মানুষের কাছে ট্রেন জনপ্রিয় বাহন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে যাত্রী বাড়লেও বাড়ানো হয়নি ট্রেনের বগি; বরং কমানো হয়েছে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিভিন্ন অনিয়ম।
রাজবাড়ী রেলস্টেশনমাস্টার মো. কামরুজ্জামান বলেন, একটি রেলস্টেশনের সব দায়িত্ব পালন করেন স্টেশনমাস্টার। কিন্তু স্টেশনমাস্টারের সংকট থাকায় অনেক স্টেশন বন্ধ হয়ে গেছে। নতুন কিছু রেলস্টেশন চালু করা যাচ্ছে না। আবার পদ অনুযায়ী কর্মরত স্টেশনমাস্টারের সংখ্যা কম থাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হয়।
সদ্য অবসর নেওয়া স্টেশনমাস্টার আবদুল গফুর খান বলেন, রেলওয়ের নিয়োগপ্রক্রিয়া খুবই জটিল। কয়েক বছর ধরে নিয়োগসংক্রান্ত বিষয়ে হাইকোর্টে মামলা থাকায় নতুন নিয়োগ দেওয়া হয়নি। আবার অবসরপ্রাপ্তদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের রাজশাহী অঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক খাইরুল আলম বলেন, স্টেশনমাস্টারের সংকট শুধু রাজবাড়ীতে নয়, সারা দেশে। স্টেশনমাস্টারের অভাবে ইতিমধ্যে ৯০টি রেলস্টেশন বন্ধ হয়ে গেছে। নতুন নিয়োগের বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।