Thank you for trying Sticky AMP!!

'আমি পরীক্ষা দেব'

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালের বিছানায় এসএসসি পরীক্ষার্থী ইসরাত জাহান। গতকাল দুপুরে। ছবি: প্রথম আলো
>
  • লুনার মা কদভানু থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন
  • গ্রাম্য মাতবররা বিষয়টি মীমাংসার উদ্যোগ নিয়েছেন

‘আমি পরীক্ষা দেব’—খুব আস্তে এই শব্দ ছাড়া আর কিছুই বের হলো না ইসরাত জাহান লুনার মুখ থেকে। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে যাকে দেখছে, তার দিকেই ফ্যালফ্যাল করে তাকাচ্ছে। মাথা নাড়াতে পারছে না।

ভাইয়ের শাশুড়ি ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের বেধড়ক পিটুনিতে আহত হয়ে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় লুনাকে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সে এ বছর মির্জাপুরের বাঁশতৈল এম মনসুর আলী উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। আজ শনিবার তার জীববিজ্ঞান পরীক্ষা হওয়ার কথা।

পারিবারিক সূত্রমতে, লুনার ভাই কামরুল হাসান পার্শ্ববর্তী তেলিপাড়া গ্রামে বিয়ে করেছেন। বিয়ের পর নানা কারণে শাশুড়ির সঙ্গে কামরুলের পরিবারের বাগ্বিতণ্ডা হয়। গত সোমবার রাতে কামরুলের স্ত্রী ছেলেসন্তানের জন্ম দেন। এ খবর শুনে গত বৃহস্পতিবার কামরুলের তিন বোন নবজাতককে দেখতে যায়।

কামরুল হাসান বলেন, হাসপাতালে তাঁর বোনদের সঙ্গে শাশুড়ির কাথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে তিনি লুনাকে প্রথমে থাপ্পড় ও কিল–ঘুষি মারেন। এতে সে অচেতন হয়ে পড়ে। একই সময় ফাতেমার পরিবারের সদস্যরা অন্য দুই বোনকে মারধর করে আটকে রাখে। খবর পেয়ে তিনি এলাকাবাসীর সহায়তায় তাদের উদ্ধার করেন। পরে লুনাকে কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

হাসপাতালের কর্তব্যরত নার্সরা জানান, লুনার শরীরে ও মাথায় আঘাত করা হয়েছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে সারা রাত অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছিল।

লুনার আহত হওয়ার খবরে তার সহপাঠীরা কান্নায় ভেঙে পড়ে। তার সঙ্গে একই বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে কাকলী আক্তার। সে বলে, লুনা খুবই ভালো মেয়ে। সে যদি পরীক্ষা না দিতে পারে, তাহলে তার জীবন নষ্ট হয়ে যাবে।

লুনার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্রসচিব ইমরান হোসেন বলেন, সে যেন পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে, তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ জন্য ইউএনওর সহায়তা দরকার। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবদুল মালেক বলেন, লুনার পরীক্ষা নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হবে।

মুঠোফোনে মির্জাপুর থানার বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক জাকির খান বলেন, এ ঘটনায় লুনার মা কদভানু থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। গ্রাম্য মাতবররা বিষয়টি মীমাংসার উদ্যোগ নিয়েছেন। এ ছাড়া প্রয়োজনে লুনার পরিবারের সদস্যদের সব ধরনের আইনি সহায়তা দেওয়া হবে।

মুঠোফোনে কামরুলের শাশুড়ি বলেন, তাঁরা কাউকেই মারেননি। কামরুলের বোনেরা তার নাতিকে না বলে নিয়ে যাচ্ছিল। এতে বাধা দেওয়ায় ধস্তাধস্তি হয়।