Thank you for trying Sticky AMP!!

সগিরা মোর্শেদ

৩৫ বছর আগে খুন হওয়া সগিরা মোর্শেদের মামলার রায় আবার পেছাল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী সগিরা মোর্শেদ হত্যা মামলার রায় দ্বিতীয়বারের মতো পিছিয়েছে। আগামী ১৩ মার্চ এই মামলার রায় ঘোষণার দিন ঠিক করেছেন আদালত।

৩৫ বছর আগে হত্যা করা হয় সগিরা মোর্শেদকে। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩–এর বিচারক মোহাম্মদ আলী হোসাইন আজ মঙ্গলবার এই দিন ঠিক করেন। এর আগে এই মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য ছিল ৮ ফেব্রুয়ারি। সেদিন আদালত রায় ঘোষণা না করে আজ রায় ঘোষণার জন্য নতুন দিন ঠিক করেছিলেন।

মামলার কাগজপত্রের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই সগিরা মোর্শেদ সালাম ভিকারুননিসা নূন স্কুল থেকে মেয়েকে আনতে যাওয়ার পথে ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন। একপর্যায়ে দৌড় দিলে তাঁকে গুলি করা হয়। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে সগিরা মোর্শেদ মারা যান। সেদিনই রমনা থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন নিহত নারীর স্বামী সালাম চৌধুরী।

Also Read: ৩৫ বছর আগে খুন হওয়া সগিরা মোর্শেদের মামলার রায় পেছাল

রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনাকারী সরকারি কৌঁসুলি রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সগিরা মোর্শেদ হত্যার দায়ে অভিযুক্ত চার আসামির সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড চেয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। তবে আসামিপক্ষ থেকে মামলা থেকে খালাস চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।

বহুল আলোচিত এই মামলায় যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হয় গত ২৫ জানুয়ারি। মামলার অভিযুক্ত চার আসামি হলেন সগিরার ভাশুর চিকিৎসক হাসান আলী চৌধুরী (৭০), তাঁর স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা শাহিন (৬৪), সায়েদাতুলের ভাই আনাছ মাহমুদ রেজওয়ান (৫৯) এবং মারুফ রেজা (৫৯)। তাঁদের মধ্যে আনাছ ও মারুফকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। চিকিৎসক হাসান ও তাঁর স্ত্রী সায়েদাতুল জামিনে আছেন।

এই মামলায় ২০২০ সালের ১৬ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। অভিযোগপত্রে বলা হয়, মূলত পারিবারিক দ্বন্দ্ব থেকে হত্যার পরিকল্পনা করেন আসামিরা। পরিকল্পনামাফিক তা বাস্তবায়নের জন্য ভাড়াটে সন্ত্রাসী নিয়োগ দেওয়া হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী রিকশাচালক দুজন জড়িত থাকার কথা বললেও মিন্টু ওরফে মন্টু নামের একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। ১৯৯১ সালের ১৭ জানুয়ারি মন্টুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। নেওয়া হয় সাতজনের সাক্ষ্য। বাদীপক্ষের সাক্ষ্যে আসামি মন্টু ও তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদুল হাসানের নিকটাত্মীয় মারুফ রেজার নাম আসে। সাক্ষ্য গ্রহণের সময় মারুফ রেজার নাম আসায় রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯১ সালের ২৩ মে বিচারিক আদালত অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন। এই আদেশের বিরুদ্ধে মারুফ রেজা হাইকোর্টে আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯১ সালের ২ জুলাই হাইকোর্ট রুল দিয়ে অধিকতর তদন্তের আদেশ স্থগিত করেন। পরে স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ান। থমকে যায় মামলার কার্যক্রম।

বিষয়টি নজরে এলে ওই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেয় রাষ্ট্রপক্ষ। শুনানি নিয়ে ২০১৯ সালের ২৬ জুন হাইকোর্ট মামলার অধিকতর তদন্তের আদেশে এর আগে দেওয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেন। একই সঙ্গে ৬০ দিনের মধ্যে ওই মামলার অধিকতর তদন্ত শেষ করতে পিবিআইকে নির্দেশ দেন। তদন্ত শেষে পিবিআই চারজনের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ১৪ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। একই বছরের ২ ডিসেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেওয়া হয়।

একজন রিকশাচালকের তথ্যে ৩৫ বছর আগের ঢাকার একটি চাঞ্চল্যকর খুনের মামলার প্রকৃত রহস্য উদ্‌ঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে পিবিআই। গ্রেপ্তার চার আসামি সগিরা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। প্রত্যক্ষদর্শী রিকশাচালকের নাম ছালাম মোল্লা। ছালামের সামনে ১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই রমনা এলাকায় সগিরা মোর্শেদ খুন হন।

পিবিআইয়ের অভিযোগপত্রে বলা হয়, মূলত পারিবারিক দ্বন্দ্ব থেকে হত্যার পরিকল্পনা করেন আসামিরা। পরিকল্পনামাফিক তা বাস্তবায়নের জন্য ভাড়াটে সন্ত্রাসী নিয়োগ দেওয়া হয়।