Thank you for trying Sticky AMP!!

ঢাকায় যেভাবে চলছে মুঠোফোন ছিনতাইয়ের সিন্ডিকেট

রাজধানীতে ছিনতাইয়ে জড়িত ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ

রাজধানীতে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যদের প্রত্যেকের প্রতিদিন ৩০০টি মোবাইল ফোন ছিনতাই করার লক্ষ্য থাকে। ছিনতাইকারী চক্রের ১৬ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর আজ শনিবার এ তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন-অর রশীদ।

রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ বলেন, রাজধানীর উত্তরখান থেকে ছিনতাইকারী চক্রের এই সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, ছিনতাইকারীদের দলনেতা (মহাজন) প্রত্যেককে দিনে তিনটি করে মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ের লক্ষ্য দিয়ে থাকেন। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অন্তত ১০০ ছিনতাইকারীর দিনে ৩০০ মুঠোফোন ছিনিয়ে নেওয়ার লক্ষ্য থাকে।

গ্রেপ্তার ১৬ জন হলেন মো. মিজান (৩৮), আমিরুল ইসলাম, শরিফ হোসন (২৩), হৃদয় (২১), মো. রাজ (২০), মো. সুমন (৩২), সোহেল বাবু (২৬), হৃদয় (২২), মনিরুজ্জামান (৪০), মো. নাজমুল (২৬), মো. মনির (৪০), মো. ইমরান (২০), মো. ফারুক (২৮), আশরাফুল ইসলাম সজীব (৩১), মো. আরিফ (১৪) ও হাসান (২০)।

এই ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে ডিএমপির লালবাগ বিভাগের (ডিসি) উপকমিশনার মশিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এই ছিনতাইকারী চক্রে ৫০ থেকে ৬০ সক্রিয় সদস্য রয়েছে। এরা গাজীপুর থেকে টঙ্গী, আবদুল্লাহপুর, হাউস বিল্ডিং, জসীমউদ্দীন, বিমানবন্দর, খিলক্ষেত বিশ্বরোড, হোটেল র‌্যাডিসনের মোড়, বনানী, কাকলি ও মহাখালী পর্যন্ত থাবা দিয়ে মুঠোফোন ছিনতাই করে। প্রত্যেককে দিনে তিনটি করে মুঠোফোন ছিনিয়ে নেওয়ার লক্ষ্য দেওয়া হয়। এ চক্রে মিজান, শরীফ ও জয় বাবু দলনেতা কাজ করেছেন।

উপকমিশনার মশিউর বলেছেন, শিগগির তাঁরা সাভার থেকে রাজধানীর গাবতলী, কল্যাণপুরসহ এ রুটে ছিনতাইয়ে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হবে।

ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার নিয়ে ডিবির লালবাগ বিভাগ বলেছে, গত ১ জানুয়ারি আসবাব ব্যবসায়ী আসাদুজ্জামান অসুস্থ বাবাকে ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে নিজের প্রাইভেট কারে করে মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে মহাখালী হয়ে বনানী যাচ্ছিলেন। রাত সাড়ে আটটার দিকে সড়ক ও জনপথের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের পশ্চিম পাশে রাস্তায় যানজট থাকায় তিনি গাড়িতে আটকা পড়েন। এ সময় একজন ছিনতাইকারী জানালার ফাঁকে হাত ঢুকিয়ে থাবা দিয়ে তাঁর মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে দৌড় দেন। তখন ডিবি লালবাগ বিভাগের কোতোয়ালি জোনাল টিমের সদস্যরা ওই ছিনতাইকারী ও তাঁর দুই সহযোগীকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন। পরে তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ডিবির উপকমিশনার মশিউর রহমান বলেন, এ চক্রের সদস্যরা বখে যাওয়া সক্ষম তরুণদের থাকার জায়গা, খাবার, গাঁজা, ইয়াবাসহ নেশার সামগ্রী দেয়। একটা পর্যায়ে ছিনতাই করতে সহযোগী হিসেবে নিয়ে যায়। ছিনতাইয়ে হাতেখড়ি পাওয়া যুবকেরা পরে রিকশা, বাস, সিএনজি অটোরিকশা ও প্রাইভেট কারের যাত্রীদের থেকে মুঠোফোন ছিনিয়ে লাফিয়ে পালিয়ে যায়।

ডিএমপি সূত্র বলছে, গত বছর রাজধানীতে ছিনতাইয়ের ঘটনায় ১০৩টি মামলা হয়েছে। আর দস্যুতার ঘটনা ঘটেছে ১৪৫টি।