অগ্নিসংযোগকারী কাউকে রেহাই দেওয়া হবে না
কোটালীপাড়ায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নির্বাচন–পরবর্তী শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় সভা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ভবিষ্যতে কেউ যাতে জীবন্ত পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করতে না পারে, সে জন্য অগ্নিসংযোগকারীসহ এ কর্মকাণ্ডের মূল হোতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘যারা এ ধরনের জঘন্য কাজ করেছে, তাদের কাউকে রেহাই দেওয়া হবে না। আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি ও অন্যদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা অব্যাহত রাখব।’
গতকাল রোববার গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা চত্বরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নির্বাচন–পরবর্তী শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় সভায় প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। এ সময় তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জড়িত অনেক ব্যক্তি ও তাদের কর্তাদের ইতিমধ্যে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। অন্যদের সর্বত্র থাকা ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ যাচাই-বাছাই করে ধরা হবে।
গণতন্ত্রের নামে বিএনপি-জামায়াত চক্র যা করেছে, তার কঠোর সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাদের আন্দোলন মানেই মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা, বাস-ট্রেনসহ যানবাহনে আগুন দেওয়া।’ তিনি বলেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঠেকাতে আন্দোলনের নামে তারা ২০১৩, ’১৪ ও ’১৫ সালে যা করেছিল, এবারও একই কাজ করেছে। একজন মা তাঁর সন্তানকে বাঁচাতে বুকে আঁকড়ে ধরেছিলেন, সেভাবেই ট্রেনে দেওয়া আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়েছেন; যে দৃশ্য সহ্য করা যায় না। তারা নাকি গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করছে। কিন্তু সন্দেহ হয় গণতন্ত্র বানানটা করতেই তারা জানে কি না।’
এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, জনগণ বিএনপি-জামায়াতের নির্বাচন প্রতিহত করার আহ্বানে সাড়া না দিয়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি দেশে গণতান্ত্রিক সরকার বা রাজনৈতিক নেতারা ক্ষমতায় না থাকলে কোনো উন্নয়ন হয় না। যদিও গত জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করার ষড়যন্ত্র হয়েছিল। তবে জনগণ ভোট দিয়ে ষড়যন্ত্রের যোগ্য জবাব দিয়েছে।
৭ জানুয়ারির নির্বাচন জনগণ ও গণতন্ত্রের বিজয় বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে আবারও ক্ষমতায় আনায় দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানান তিনি। দেশবাসীর প্রত্যাশানুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য এ সময় সবার দোয়া চান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘আমার হারানোর কিছু নেই। আমার একটাই লক্ষ্য, কতটুকু আমি দেশকে দিতে পারলাম।’
দেশবাসীকে সতর্ক করে শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি যারা দেশের উন্নয়ন চায় না, তারা এখনো সক্রিয় ও ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। তবে তিনি বলেন, ‘সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেই আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলব, যার স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেছিলেন।’
কোটালীপাড়া আওয়ামী লীগের সভাপতি বাবু ভবেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভা পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ।