Thank you for trying Sticky AMP!!

অপরাধের ‘স্বর্গরাজ্য’ তৈরি করেছে ‘হাসনাত বাহিনী’

অপরাধ

খুলনার ফুলতলা উপজেলায় অপরাধের ‘স্বর্গরাজ্য’ তৈরি করেছে হাসনাত বাহিনী। ২০ থেকে ২৫ জন উঠতি বয়সী কিশোর ও তরুণ আছেন ওই দলে। আর দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন ওই এলাকার শেখ আবু হাসনাত নামের এক তরুণ। ওই বাহিনী এলাকায় মাদক, জুয়া, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও স্কুল-কলেজপড়ুয়া মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে।

হাসনাত বাহিনীকে নিয়ে প্রায় চার মাস আগে এমন একটি প্রতিবেদন দিয়েছিল রাষ্ট্রীয় এক গোয়েন্দা সংস্থা। কলেজছাত্র আলিফ রোহান (২০) হত্যার পর হাসনাত বাহিনী সম্পর্কে আজ রোববার ওই গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।  

ওই কিশোর গ্যাংটি দেশি-বিদেশি অস্ত্র নিয়ে এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করত বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে। প্রতিবেদনটিতে কিশোর গ্যাংয়ের শীর্ষস্থানীয়দের গ্রেপ্তার করে অস্ত্র উদ্ধারের সুপারিশও করা হয়েছিল। কিন্তু এর কিছুই করা হয়নি।

এ ঘটনায় হওয়া মামলা সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার ওই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের হাতেই খুন হন কলেজছাত্র সৈয়দ আলিফ রোহান (২০)। আর ওই হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছিলেন হাসনাত বাহিনীর তিন সদস্য। ছিলেন বাহিনীর প্রধান শেখ আবু হাসনাতও।

পুলিশ ওই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত দীপ্ত সাহা (২১) নামের এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে। গতকাল শনিবার দীপ্ত আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে ওই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের নাম রয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থার দেওয়া প্রতিবেদনে দীপ্ত সাহার নাম আছে সবার শেষে।

দীপ্ত সাহার জবানবন্দির বরাত দিয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক পুলিশ কর্মকর্তা রোববার প্রথম আলোকে বলেন, মূলত মেয়েদের উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় খুন করা হয়েছে আলিফকে। কয়েক দিন আগে পায়গ্রাম কসবা এলাকার একটি স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠানে মামলার ১ নম্বর আসামি তাছিন, ৩ নম্বর আসামি শান্ত গাজীসহ আরও কয়েকজন একটি মেয়েকে উত্ত্যক্ত করছিলেন। এটি দেখে তাঁদের বাধা দেন আলিফ। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আলিফকে শায়েস্তা করার পরিকল্পনা করে হাসনাত বাহিনী।

ঘটনার দিন গত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কয়েকটি মোটরসাইকেলে করে হাসনাত বাহিনীর সদস্যরা ফুলতলা এম এম (মোজাম মহলদার) কলেজের প্রধান ফটকের সামনে এসে আলিফকে ছুরিকাঘাত করে তাজপুর গ্রামের দিকে চলে যান। পরে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যান আলিফ। তিনি ওই কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

ফুলতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াস তালুকদার বলেন, দীপ্ত সাহা গ্রেপ্তার হওয়ার পর জবানবন্দিতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে। হত্যার ঘটনার পরদিন আলিফের বাবা সৈয়দ আবু তাহের বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ৪ থেকে ৫ জনকে।

কিশোর গ্যাংয়ের ব্যাপারে জানতে চাইলে ওসি বলেন, তাঁদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ চলছে। গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মানববন্ধন
সৈয়দ আলিফকে ছুরিকাঘাতে হত্যার প্রতিবাদে এবং হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। রোববার বেলা ১১টার দিকে ফুলতলা এম এম কলেজের সামনে যশোর-খুলনা মহাসড়কে ওই মানববন্ধন হয়। মানববন্ধনটির আয়োজন করে এম এম কলেজ কর্তৃপক্ষ।

মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন ফুলতলা এম এম কলেজের অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আনোয়ারুজ্জামান মোল্যা, ফুলতলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এস এম মোস্তাফিজুর রহমান, ইউপি চেয়ারম্যান শরীফ মোহাম্মদ ভূঁইয়া, নিহত আলিফের চাচা জাহিরুল ইসলাম প্রমুখ।

Also Read: খুলনায় কলেজ ফটকে এসে শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা