Thank you for trying Sticky AMP!!

‘অপরাধ না করেও তিন কলেজছাত্র জেলে’

প্রতীকী ছবি

‘ঠিকাদারি কাজ নেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ কিংবা চাঁদা দাবির ঘটনা নয়, বরং খুলনার এক ঠিকাদারের মেয়ের সঙ্গে প্রেমের বিষয়ে কথা বলতে তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন কলেজছাত্র মো. আবু সাঈদ ও তাঁর তিন সহপাঠী। তাঁরা বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় তাঁদের লক্ষ্য করে ঠিকাদার গুলি চালালে তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে কিশোরী লামিয়ার পায়ে লাগে। এ ঘটনায় উল্টো চার কলেজছাত্রের বিরুদ্ধে ঠিকাদার বাদী হয়ে চাঁদাবাজির মামলা করেন। ওই মামলায় তিন ছাত্র অপরাধ না করেও প্রায় এক মাস ধরে কারাগারে আছেন।’

বেসরকারি সংস্থা বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল রোববার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান কমিশনের খুলনা বিভাগীয় সভাপতি শেখ অলিউল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সরকারি সুন্দরবন আদর্শ কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সম্মান তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মো. আবু সাঈদের সঙ্গে তিন বছর ধরে নগরের মিস্ত্রিপাড়া এলাকার ঠিকাদার ইউসুফ আলীর মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ঠিকাদার তাঁর মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দিচ্ছেন এমন খবর শুনে গত ২৮ আগস্ট আবু সাঈদ ও তাঁর তিন সহপাঠী ঠিকাদারের বাড়িতে যান। তাঁরা ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলার একপর্যায়ে তিনি উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তখন ঠিকাদারের স্ত্রী ও শ্যালক ওই চার ছাত্রকে দ্রুত বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার পরামর্শ দেন। ছাত্ররা সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় ঠিকাদার লাইসেন্স করা পিস্তল হাতে তাঁদের ধাওয়া করেন। এ ছাড়া তিনি তাঁদের লক্ষ্য করে দুটি গুলিও ছোড়েন। লক্ষ্যভ্রষ্ট একটি গুলি প্রতিবেশী কিশোরী লামিয়ার পায়ে বিদ্ধ হয়।

পুলিশ কমিশনারের দপ্তরে জমা দেওয়া মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত প্রতিবেদনে চাঁদাবাজির মামলাটি সুষ্ঠুভাবে তদন্ত এবং গুলি করার ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণসহ ১০ দফা সুপারিশ করা হয়েছে।
শেখ অলিউল ইসলাম, খুলনা বিভাগীয় সভাপতি, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন

তবে ঠিকাদার ইউসুফ আলী মেয়ের প্রেমের ঘটনা গোপন করে ওই চার ছাত্রের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, তিনি একটি ঠিকাদারি কাজ পান, সেই কাজটি বিক্রি করার জন্য তাঁকে চাপ দেওয়া হয়। তিনি কাজ বিক্রি করতে না চাইলে চার যুবক বাড়িতে গিয়ে তাঁর কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন।

গতকালের সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২৯ আগস্ট মামলা দায়েরের পর পুলিশ ওই চার কলেজছাত্রকে গ্রেপ্তার করে। এর মধ্যে ইসমাইল মল্লিক সম্প্রতি জামিনে মুক্ত হয়েছেন। অপর তিনজন এখনো কারাগারে। মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত দল ইউসুফ আলীর বাড়িতে কথা বলতে গেলেও তাঁরা কথা বলেননি, এমনকি গেটও খোলেননি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পুলিশ কমিশনারের দপ্তরে জমা দেওয়া মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত প্রতিবেদনে চাঁদাবাজির মামলাটি সুষ্ঠুভাবে তদন্ত এবং গুলি করার ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণসহ ১০ দফা সুপারিশ করা হয়েছে।