Thank you for trying Sticky AMP!!

আক্কেলপুরে আমগাছে ঝুলছিল গৃহবধূর লাশ

প্রতীকী ছবি

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার উত্তর জালালপুরে এক গৃহবধূর মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে ৫০ গজ দূরে একটি আমগাছের ডালে রশিতে ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। প্রতিবেশী আলম হোসেনের উদ্দেশে লেখা একটি চিরকুট ওই গৃহবধূর শরীরে পাওয়া গেছে।

পুলিশ বলছে, ওই গৃহবধূ চিরকুটটি নিজ হাতে লিখেছেন কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। গৃহবধূর স্বামী ও গ্রামবাসীরা বলছেন, চিরকুটের লেখার সঙ্গে গৃহবধূর হাতের লেখার অমিল রয়েছে। চিরকুটের হাতের লেখা সুন্দর। তৃতীয় কোনো পক্ষ এ ঘটনা ঘটিয়েছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ তাঁদের।

নিহত ওই গৃহবধূর নাম মেমী বেগম (৩৭)। তিনি ওই গ্রামের নূর মোহাম্মদ ওরফে ধলার দ্বিতীয় স্ত্রী।

এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, নূর মোহাম্মদের প্রথম স্ত্রী মারা যান। তিনি ১০ থেকে ১২ বছর আগে মেমী বেগমকে বিয়ে করেন। মেমীর কোনো সন্তান হয়নি। তাঁরা স্বামী-স্ত্রী দুজন গতকাল রোববার রাতে খাওয়াদাওয়া শেষে ঘুমিয়ে পড়েন। রাতের কোনো এক সময় তিনি বাড়ির বাইরে যান। রাতে তাঁকে ঘরে না পেয়ে নূর মোহাম্মদ প্রতিবেশীদের সঙ্গে নিয়ে ভোররাতে মেমীকে খুঁজতে বের হন। নূর মোহাম্মদের ভাতিজা সুমন হোসেন বাড়ি থেকে ৫০ গজ দূরে একটি আমগাছের ডালে মেমীকে রশিতে ঝুলতে দেখেন। তাঁরা থানা–পুলিশকে ঘটনাটি জানান। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ এসে মেমীর লাশ নামিয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে। পুলিশ লাশের শরীর থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করে।

ওই চিরকুটে লেখা ছিল, ‘আলম হোসেনের সঙ্গে আমার সর্ম্পক রয়েছে। সে জীবনটা নষ্ট করে দিচ্ছে।’

মেমীর স্বামী নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘আমার স্ত্রীর সঙ্গে স্থানীয় আলমের সম্পর্ক ছিল। দুই মাস আগে আমাকে শ্বাশুড়ি জানিয়েছিল। আলম আমার স্ত্রীকে উপহারসামগ্রীও দিয়েছিল। আমার স্ত্রী আমাকে কখনো তার সম্পর্কের কথা জানায়নি। আমি স্ত্রীর সম্পর্কের কথা জেনেছি, সে কথা স্ত্রীকেও কখনো বলিনি। আমাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্ক ভালো ছিল। রোববার রাত দুইটার দিকে টয়লেটে যাওয়ার জন্য বের হয়ে আর ঘরে ফেরেনি। আমরা ভোররাতে আমগাছে তাকে ঝুলতে দেখেছি। পুলিশ আমার স্ত্রীর শরীর থেকে একটি চিরকুট পেয়েছে। আমার স্ত্রী লিখতে পারে। তবে তার লেখা সুন্দর নয়।’

আলমের বাড়িতে গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁর ভাতিজার বউ রুনা লায়লা বলেন, ‘আমার চাচা শ্বশুর আলম দুই সন্তানের জনক। আমার চাচা শ্বশুর ভালো মানুষ। তিনি গৃহশিক্ষকতা করে সংসার চালান। মেমীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল তা, আমরা কেউ জানি না। আমার চাচা শ্বশুরকে ফাঁসাতে কেউ চিরকুট লিখে রাখতে পারে।’
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল লতিফ খান বলেন, মেমীর লাশ একটি আমগাছে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে। এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যা, তা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর জানা যাবে। লাশের শরীরে পাওয়া চিরকুটটি মেমী নিজেই লিখেছেন কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।