Thank you for trying Sticky AMP!!

রংপুর চিনিকল শ্রমিক, কর্মচারি ও আখচাষিরা হরতাল পালনকালে মহিমাগঞ্জ রেলস্টেশনে রেলপথ অবরোধ করেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে

আখমাড়াই বন্ধের প্রতিবাদে মহিমাগঞ্জে অর্ধদিবস হরতাল পালিত

রংপুর চিনিকলসহ রাষ্ট্রায়ত্ত ছয়টি চিনিকলে আখমাড়াই বন্ধ রাখার সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জে অর্ধদিবস হরতাল পালিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত হরতাল চলাকালে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সকাল থেকে এখানকার ব্যাংক-বিমা, দোকানপাট, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল।

গত শনিবার আখচাষি, শ্রমিক-কর্মচারী, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সুধী সমাজের যৌথ সংবাদ সম্মেলন থেকে এ হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল। চলতি আখমাড়াই মৌসুম শুরুর আগমুহূর্তে মহিমাগঞ্জের রংপুর চিনিকলসহ ছয়টি চিনিকলে মাড়াই বন্ধের আকস্মিক ঘোষণায় এ মাসের প্রথম থেকেই ব্যাপক বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে আসছেন শ্রমিক-কর্মচারী ও আখচাষিরা।

রংপুর চিনিকল শ্রমিক, কর্মচারি ও আখচাষিরা হরতাল পালনকালে মহিমাগঞ্জ রেলস্টেশনে রেলপথ অবরোধ করেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে

হরতাল চলাকালে গোবিন্দগঞ্জ-মহিমাগঞ্জ সড়কের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন হরতাল সমর্থকেরা। এ কারণে এ সড়কে কোনো যানবাহনই চলাচল করেনি। সকাল ১০টায় রংপুর চিনিকল এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে মহিমাগঞ্জের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিলটি মহিমাগঞ্জ রেলস্টেশনে গেলে বিক্ষোভকারীরা রেললাইনের ওপর বসে বিক্ষোভ শুরু করেন। বেলা ১১টার দিকে সান্তাহার থেকে ছেড়ে আসা বুড়িমারীগামী করতোয়া এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে মহিমাগঞ্জ স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ঢোকার আগেই বিক্ষোভকারীরা ট্রেনটি আটকে দেন। একই কারণে পার্শ্ববর্তী বোনারপাড়া স্টেশনে সান্তাহারগামী দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস ট্রেনটিও আটকা পড়ে।

রংপুর চিনিকল শ্রমিক, কর্মচারি ও আখচাষিরা হরতাল পালনকালে বিক্ষোভ মিছিল করেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে গাইবান্ধার মহিমাগঞ্জে

খবর পেয়ে গোবিন্দগঞ্জের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজির হোসেন, গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম মেহেদী হাসান অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে পরিস্থিতি শান্ত রাখার চেষ্টা করেন। এ ছাড়া সকাল থেকেই মহিমাগঞ্জ রেলস্টেশনে রেলওয়ে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য সতর্ক অবস্থায় দায়িত্ব পালন করেন। রেলপথ অবরোধ করে সেখানে বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সমাবেশ করেন শ্রমিক-কর্মচারী ও আখচাষিরা।

এ সময় বক্তব্য দেন গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি এম এ মতিন মোল্লা, রংপুর চিনিকল আখচাষি সমিতির সভাপতি জিন্নাত আলী প্রধান, শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আবু সুফিয়ান, সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, সহসাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন প্রমুখ। সমাবেশ শেষে দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে ট্রেনটি মহিমাগঞ্জ ত্যাগ করে। অপর দিকে মহিমাগঞ্জ স্টেশনে রেলপথ অবরুদ্ধ থাকায় পার্শ্ববর্তী বোনারপাড়া স্টেশনে সান্তাহারগামী আন্তনগর দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস ট্রেনটিও এক ঘণ্টা আটকে থাকে। বেলা একটার পর হরতাল কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।

রংপুর চিনিকল শ্রমিক, কর্মচারি ও আখচাষিরা হরতাল পালনকালে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে গাইবান্ধার মহিমাগঞ্জে

সমাবেশে বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিভিন্ন প্রকল্পের নামে সীমাহীন দুর্নীতি, অপ্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, বিলাসবহুল গাড়িসহ সব ধরনের কেনাকাটায় ব্যাপক লুটপাটের জন্য পুরো সংস্থাই লোকসানের মুখে পড়েছে। চিনিশিল্প আধুনিকায়নের নামে বিশ্বব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের টাকা পরিশোধ না করে সব চিনিকলকেই ঋণে জর্জরিত করে রেখে বিদেশে প্রচুর টাকা পাচার করেছেন এই আমলারা। এখন তাঁদের অপকর্মের ভার সাধারণ চাষি ও শ্রমিকদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। বর্তমান চেয়ারম্যান দেশের সব চিনিকল বন্ধ করার মাধ্যমে চিনিশিল্পটাকেই ধ্বংস করার অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।

শ্রমিক, কর্মচারী ও আখচাষিরা অবিলম্বে সব চিনিকল আধুনিকায়নের মাধ্যমে এগুলো চালু রাখা ও দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।