Thank you for trying Sticky AMP!!

‘আমাগো চিড়ে লাগবে না, বাঁচতি দিতি চাইলে বাঁধডা বাইন্দে দেন’

ভৈরব নদের পানি উপচে প্লাবিত হয়েছে গ্রাম। একটি দোকানের সামনে বসে দুর্যোগের ক্ষতির কথা ভেবে চিন্তিত দেখায় কয়েকজনকে। আজ বুধবার সদর উপজেলার মাঝিডাঙ্গা গ্রামে

ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের নদ-নদীতে অস্বাভাবিক জোয়ারের চাপে পানির উচ্চতা বাড়ছে। প্লাবিত হয়েছে বাগেরহাট সদর, মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা, রামপাল, মোংলা উপজেলার নিম্নাঞ্চলের অন্তত অর্ধশত গ্রাম। নদীর তীরবর্তী মাঠ ও মাছের ঘেরেও পানি ঢুকেছে।

আজ বুধবার দুপুরে জোয়ারের সময় ভৈরব নদের পানি উপচে সদর উপজেলার মাঝিডাঙ্গা, রহিমাবাদ, বিষ্ণুপুর, চরগ্রামসহ বেশ কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়। দড়াটানা নদীর পানি বেড়ে প্লাবিত হয়েছে বাসাবাটি, মারিয়া পল্লি, বিসিক, বৈটপুর ও ভদ্রপাড়া।

প্লাবিত এলাকাগুলোর বিষয়ে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় বাঁধ মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হলেও তীব্র জোয়ারের চাপে কাজ করা কঠিন হচ্ছে। প্লাবিত এলাকায় শুকনা খাবার সরবরাহসহ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

রাস্তার ওপর দিয়ে প্রবাহিত পানিতেও স্রোত। ঘরেও পানি ঢোকায় বাড়ির উঠানে দাঁড়ান নারী ও শিশুরা। আজ বুধবার বাগেরহাট সদরের মাঝিডাঙ্গা গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পে

এদিকে সদরের মাঝিডাঙ্গা গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ (ইউএনও) স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। এ গ্রামের বাসিন্দা নাসিমা বেগম বলেন, ‘আমাগো শুগনো চিড়ে লাগবে না। আমাগো কিছুই লাগবে না। যদি আমাগো বাঁচতি দিতি চান, তালি বাঁধডা একটু বাইন্দে দেন। প্রতিবছর এমন তলাতি হয়। এভাবে কি বাঁচা যায়?’

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে তেমন ঝোড়ো হাওয়া না থাকলেও থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে বাগেরহাটে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে শরণখোলা উপজেলার বেশ কিছু এলাকা।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বলেশ্বর নদের জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ে শরণখোলা সদরের রায়েন্দা বাজার, রাজৈর, কদমতলা গ্রামে।

বেড়িবাঁধ থাকলেও স্লুইসগেটের কপাট না থাকায় এসব এলাকায় জোয়ারে পানি ঢুকে পড়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন।

আজ বুধবার দুপুরে রামপাল উপজেলার হুড়কা এলাকায় পানির তোড়ে বগুড়া নদীর তীর রক্ষা বাঁধের একটি অংশ ভেঙে যায়। সে অংশ দিয়ে এলাকায় পানি ঢোকা বন্ধে কাজ করেন স্থানীয় লোকজন। তবে তার আগেই এলাকাটির প্রায় ২০০ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়ে।

জোয়ারের পানিতে প্লাবিত গ্রামের রাস্তাঘাট। আজ বুধবার বাগেরহাট সদরের মাঝিডাঙ্গা গ্রামে

পানি উন্নয়ন বোর্ড বাগেরহাট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী বিশ্বজিৎ বৈদ্য প্রথম আলোকে বলেন, জেলার কোথাও বাঁধের বড় কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে কয়েকটি স্থানে বাঁধের নিচু অংশ থেকে পানি উপচে লোকালয়ে ঢুকেছে। তবে ভাটার সময় এসব পানি বেরিয়ে যাবে।