Thank you for trying Sticky AMP!!

আ.লীগের প্রার্থীর কর্মীর বাড়িতে হামলার অভিযোগ, গ্রেপ্তার ৩

গ্রেপ্তার

বরগুনা পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর দুই কর্মী ও সমর্থককে মারধর ও তাঁদের বাড়িঘর ভাঙচুরের অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বরগুনা সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কর্মী মো.জাহাঙ্গীর। ওই মামলার তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ওই মামলায় আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী মো. শাহাদাত হোসেনের ১৭ জন কর্মী ও সমর্থককে আসামি করা হয়েছে। ঘটনার সময় বাদীর স্ত্রীর শ্লীলতাহানি করা হয়েছেও বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।

এ মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ মেয়র প্রার্থী শাহাদাত হোসেনের মেয়ের জামাই আরিফ হোসেন খানকে (৪০)। মামলার অপর আসামিরা হলেন আমিনুল ইসলাম (৩৫), পরান কৃষ্ণ বণিক (৫৬), লিটন বণিক (২০), জালাল ফকির (৫৫), স্বপন (৪৫), পবিত্র সমাদ্দার (৩৮), ছগির হাওলাদার (৪৫), মীর আবুল কাশেম (৪৮), মো. দুলাল (৪৫), মো. সাইফুল ইসলাম (২৮), আবদুস ছালাম (২৫), মো. শামিম (২৫), রাজিব (৩৫), বাপ্পি (২৮), ইশতি (২৬) ও রাসেল (৩০)। আসামিদের মধ্যে শেষের তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, বুধবার রাত পৌনে ১২টার দিকে নিজের ঘরের সামনের রাস্তায় নৌকা প্রতীকের পোস্টার লাগানোর সময় বাদী মো. জাহাঙ্গীর হোসেনকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ধাওয়া দেন আসামিরা। এ সময় তিনি দৌড়ে নিজ ঘরে আশ্রয় নিলে ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে তাঁকে মারধর শুরু করেন ওই ব্যক্তিরা। এ সময় তাঁকে বাঁচাতে তাঁর স্ত্রী এগিয়ে এলে তাঁকেও মারধর করে শ্লীলতাহানি করা হয়। মারধর শেষে তাঁরা জাহাঙ্গীর হোসেনের ঘরে থাকা স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকাও লুটে নেন।

আমি যাতে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে না পারি সে জন্য আমার জামাইসহ ১৭ জন কর্মী-সমর্থকের নামে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শাহাদাত হোসেন, আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ মেয়র পদপ্রার্থী, বরগুনা পৌরসভা

এ বিষয়ে বর্তমান মেয়র ও আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ মেয়র প্রার্থী শাহাদাত হোসেনের মেয়ের জামাই আরিফ খান বলেন, ‘অমি এই ঘটনার কিছুই জানি না। আমাকে ষড়যন্ত্র করে এই মামলায় আসামি করা হয়েছে। আমি যাতে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালাতে না পারি, সে জন্য এই মামলায় আমাকে আসামি  করা হয়েছে।’

আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী শাহাদাত হোসেন  প্রথম আলোকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকেরা পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা  ঘটিয়েছে। আমার লোকজন বরগুনা পৌরসভার সুজন খেয়াঘাট এলাকায় আশ্রয়ণে একদিক থেকে পোস্টার লাগাচ্ছিলেন। নৌকার সমর্থকেরা অপর দিক দিয়ে তা ছিঁড়ে ফেলছিলেন। এতে আমার লোকজন বাধা দিলে তারা তাদের ওপর চড়াও হয়। এ সময় স্থানীয় লোকজন নৌকার লোকজনকে আমার পোস্টার ছিঁড়তে বাধা দেয়। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে মারামারির ঘটনা ঘটে।’

শাহাদত হোসেন আরও বলেন, ‘আমি যাতে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে না পারি সে জন্য আমার জামাইসহ ১৭ জন কর্মী-সমর্থকের নামে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দায়ের করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী কামরুল আহসান মহারাজ বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ শাহাদাত হোসেনের সমর্থকেরা আমার পোস্টার ছিঁড়ছিল ।এ সময় আমার সমর্থকেরা বাধা দিলে তাঁদের মারধর করা হয়। স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশ ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীর কর্মী–সমর্থকদের আটক করে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া তিনজন বরগুনার বাসিন্দা না।’

বরগুনার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর মল্লিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখার জন্য আমরা সকল প্রার্থীকে নিয়ে মতবিনিময় সভা করেছি। কোনো ধরনের সহিংসতা যাতে না হয়, তার জন্য প্রার্থীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে।এই নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণায় যাতে কোনো প্রার্থীকে বাধা দেওয়া না হয়, সে বিষয়ে প্রার্থীদের সতর্ক করা হয়েছে।’

আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ শাহাদাত হোসেনের সমর্থকেরা আমার পোস্টার ছিঁড়ছিল ।এ সময় আমার সমর্থকেরা বাধা দিলে তাঁদের মারধর করা হয়। স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশ ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীর কর্মী–সমর্থকদের আটক করে।
কামরুল আহসান, আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী, বরগুনা পৌরসভা