Thank you for trying Sticky AMP!!

আলী মাহমেদের ইতিহাস ঐতিহ্যের সংগ্রহশালা

নতুন প্রজন্মকে ঐতিহ্যবাহী জিনিসপত্র দেখাতে ও চেনাতে সংগ্রহশালাটি গড়ে তুলেছেন তিনি।

আলী মাহমেদের সংগ্রহশালা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার লেখক ও কবি আলী মাহমেদ। ইতিহাস ও ঐতিহ্যের জিনিসপত্র সংগ্রহ করাই তাঁর নেশা। আখাউড়ায় তিনি গড়ে তুলেছেন এ ধরনের দুর্লভ সামগ্রীর এক সংগ্রহশালা। প্রতিনিয়ত মূল্যবান জিনিসপত্র যোগ হচ্ছে তাঁর এ সংগ্রহশালায়। নতুন প্রজন্মকে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী জিনিসপত্র দেখাতে ও চেনাতে সংগ্রহশালাটি গড়ে তুলেন তিনি।

আলী মাহমেদের তিনতলা বাড়িটি গ্রামবাংলার প্রাচীন ঐতিহ্য, বিশ্বযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের স্মরণীয় জিনিসপত্র, শ্রমজীবী মানুষের জীবনযাপনে ব্যবহৃত উপকরণসহ বিভিন্ন দৃষ্টিনন্দন ও ব্যতিক্রমী সামগ্রী দিয়ে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। দেয়ালের তাকে সাজানো অসংখ্য বই।

আলী মাহমেদের সংগ্রহে রয়েছে দুর্লভ সব জিনিসপত্র। কৃষি উপকরণের মধ্যে যেমন রয়েছে লাঙল, মই, ফলা, দা, কাস্তে, হাতুড়ি, ছাম, ডালা, খুন্তি, ডেকি। আরও রয়েছে হুক্কা, বল্লম, বদনা, পাদুকা, থালাবাটি, কোরবানির ছুরি, যুদ্ধের অস্ত্র, বুলেট, খোসা, শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার পোশাক, কলের গান, ঢাকঢোল, প্রাচীন ধর্মীয় গ্রন্থ, মঙ্গলসূত্র, মাটির তৈরি তৈজসপত্র, বাঁশের খড়ের পণ্য, ঘোড়ার চাবুক, পুরোনো টেলিভিশন, রেডিও, ঘড়ি, পুরোনো পত্রিকা। এ ছাড়া সানাই, বাঁশি, টোপর, ডুলি, জায়নামাজ, তজবিহ, পুঁথিসহ হাজারখানেক জিনিসপত্রে সাজানো এ সংগ্রহশালা। আলী মাহমেদের বাড়িটি দুর্লভ জিনিসপত্রের জাদুঘরে পরিণত হয়েছে।

ছিন্নমূল-অভুক্ত মানুষকে খাওয়ানো আলী মাহমেদের আরেকটি নেশা। এ ছাড়া সুবিধাবঞ্চিত পথশিশুদের বিনা মূল্যে পড়াশোনার জন্য তিনি পরিচালনা করছেন একটি প্রাক্‌-প্রাথমিক বিদ্যালয়। বয়স্কদের সাক্ষরতা কার্যক্রমও হয় তাঁর স্কুলটিতে।

আলী মাহমেদের বাবা আখাউড়ার দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের প্রথম চেয়ারম্যান মরহুম নিজাম উদ্দিন আহমেদ। এই লেখক ও কবি এলাকায় সবার কাছে মোহাম্মদ আলী নামে পরিচিত। তাঁর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ১৫। অনলাইনে লেখালেখির জন্য পেয়েছেন জার্মানভিত্তিক ডয়চে ভেলের পুরস্কার।

আলী মাহমেদ বলেন, ‘দুর্লভ জিনিসপত্র যখন যেখানে পেয়েছি, চেষ্টা করেছি সংগ্রহ করে রাখতে। তা ছাড়া বিভিন্ন এলাকার অনেক লোক নিজ উদ্যোগে ঐতিহ্যবাহী মূল্যবান জিনিসপত্র এনে আমার কাছে দিয়ে গেছেন। তাঁদের বিশ্বাস ছিল, আমার কাছে জিনিসপত্রগুলো যত্নে থাকবে। সংগ্রহশালায় এমন অনেক দুর্লভ জিনিস রয়েছে, যা বর্তমান প্রজন্ম এখানে এসে প্রথম দেখছে ও তার পরিচয় জানতে পারছে।’

আখাউড়া উপজেলা সচেতন নাগরিক উন্নয়ন কমিটির সহসভাপতি মুসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘গ্রামবাংলার ইতিহাস-ঐতিহ্যের বহু জিনিস আমাদের কাছে অনেকটাই অপরিচিত হয়ে উঠেছিল। কিন্তু আজ আমরা তাঁর মাধ্যমে সেগুলো দেখতে ও চিনতে পারছি।’