Thank you for trying Sticky AMP!!

ইউজিসির প্রতিবেদন ‘একপেশে’ ও ‘পক্ষপাতমূলক’

সংবাদ সম্মেলনে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের ব্যাখ্যা দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এম আবদুস সোবহান। আজ সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম আবদুস সোবহান তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোর বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি ও এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। একই সঙ্গে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তদন্ত প্রতিবেদনকে ‘একপেশে’ ও ‘পক্ষপাতমূলক’ বলে উল্লেখ করেছেন।

আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য এসব কথা বলেন। গত বৃহস্পতিবার প্রথম আলোসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে ইউজিসির তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর বিভিন্ন মহলে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

নিজের মেয়ে-জামাতাকে নিয়োগের জন্য ‘শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা’ পরিবর্তনের অভিযোগ প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী ইউজিসির তদন্ত কমিটি যদি ‘মেয়ে-জামাইকে নিয়োগদানের জন্য উপাচার্য নীতিমালা প্রণয়ন করেছেন’—এমন মন্তব্য করে থাকে, তাহলে সেই তদন্ত পক্ষপাতহীন হয়নি। ২০১৭ সালের নীতিমালা অনুযায়ী ২৪টি বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। এর মধ্যে ছয়টি বিভাগের নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেও কোনো মহল থেকে এই নীতিমালা সম্পর্কে আপত্তি বা অভিযোগ উত্থাপিত হয়নি। মূলত, প্রগতিশীল শিক্ষকসমাজ নামধারী কিছু দুর্নীতিপরায়ণ শিক্ষক নিজেদের অপকর্ম আড়াল করার জন্যই স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের যোগসাজশে অসত্য অভিযোগ উত্থাপন করে বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।

২০১৭ সালের ২০ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে ২০১৫ সালের নীতিমালা বাতিল করে ২০১২ সালের নীতিমালা পুনর্বহালের কথা বলা হয়।
অধ্যাপক এম আবদুস সোবহান, উপাচার্য, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য বলেন, সাবেক উপাচার্য মিজান উদ্দিনের সময় প্রণয়ন করা ২০১৫ সালের নিয়োগ নীতিমালা অনুযায়ী আইন বিভাগ এবং আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। এই বিজ্ঞপ্তিতে আইন বিভাগের তিনটি পদের বিপরীতে পাঁচটি আবেদন এবং আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের দুটি পদের বিপরীতে পাঁচটি আবেদন পাওয়া যায়। পদের বিপরীতে অল্পসংখ্যক আবেদন জমা পড়ার কারণে উভয় বিভাগের সভাপতিরা ২০১৫ সালের শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালায় উল্লেখ থাকা শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেন। এ ছাড়া অন্য অনেক বিভাগও ওই নীতিমালায় শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল করা না হলে সেসব বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ সম্ভব হবে না বলে মৌখিকভাবে জানায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ২০ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে ২০১৫ সালের নীতিমালা বাতিল করে ২০১২ সালের নীতিমালা পুনর্বহালের কথা বলা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক এই নীতিমালার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন করেন। পরে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ শুনানি শেষে শিক্ষক নিয়োগের বর্তমান নীতিমালা অনুসরণের জন্য নির্দেশনা দেন।

উপাচার্য আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭২তম সিন্ডিকেট সভায় নিয়োগ নীতিমালা নতুন করে প্রণয়নের জন্য একটি কমিটি গঠিত হয়। এই কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৭ সালের ৩০ ডিসেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা-২০১৭ সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদিত হয়। কিন্তু এই নীতিমালা সম্পর্কে গণমাধ্যমে অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়। এমন প্রেক্ষাপটে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক এই নীতিমালার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন করেন। পরে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ শুনানি শেষে শিক্ষক নিয়োগের বর্তমান নীতিমালা অনুসরণের জন্য নির্দেশনা দেন। সুতরাং এই নীতিমালা নিয়ে তোলা অভিযোগ ভিত্তিহীন।

Also Read: ভিসির মেয়ে ও জামাতাকে নিয়োগ দিতেই নীতিমালা বদল