সাতক্ষীরায় ২১ দফা বাস্তবায়নের দাবি
সাতক্ষীরাসহ উপকূলীয় এলাকার মানুষকে বেড়িবাঁধ ভাঙন এবং শহরের জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষাসহ ২১ দফা দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে জেলা নাগরিক কমিটির উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়। পরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর ১০ হাজার ৮৮৭ জন স্বাক্ষরিত স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
সকাল সাড়ে নয়টা থেকে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন। সাড়ে ১০টার দিকে সেখানে মানববন্ধন হয়। মানববন্ধন চলার সময় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কমিটির আহ্বায়ক আনিসুর রহিম। বক্তব্য দেন অধ্যক্ষ আবু আহমেদ, সাবেক অধ্যক্ষ আবদুল হামিদ ও আশেক-ই-এলাহী, আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ, শেখ আজাদ হোসেন ও কাজী আবদুল্লাহ আল হাবিব, জেলা সিপিবির সভাপতি আবুল হোসেন প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের পর সাতক্ষীরাসহ উপকূলের মানুষ অবর্ণনীয় দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছে। এখনো অনেক স্থানে মানুষের বাড়িঘর রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে রয়েছে। জোয়ার-ভাটায় নদ-নদীর পানি ওঠা–নামা করছে। দু-তিন ফুট পানিতে বসবাস করছে সাতক্ষীরা শহরের বদ্দিপুর, ইটাগাছা, কাটিয়া মাঠপাড়া, কামাননগর, মধুমল্যারডেঙ্গীসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ। কিন্তু সমস্যা সমাধানে সরকার কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও তা মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে তেমন কোনো কাজে আসছে না।
বক্তারা আরও বলেন, উজানের নদ-নদীগুলোর সঙ্গে জেলার নদ-নদীর সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) যত্রতত্র প্রকল্প বাস্তবায়ন ও অপরিকল্পিতভাবে ঘের করে মাছ চাষ করা হচ্ছে। পোল্ডারের ভেতরের পানিনিষ্কাশনের খালগুলো ইজারা দেওয়া ও বেদখল হয়ে যাওয়ায় উপকূলীয় এলাকা এখন দেশের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ।
বক্তারা বলেন, একটি পোল্ডার বা একটি এলাকাকে কেন্দ্র করে প্রকল্প তৈরি করে ভাঙন বা জলাবদ্ধতা সমস্যার দীর্ঘস্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়। এ জন্য উপকূলীয় এলাকা তথা সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট জেলা নিয়ে সমীক্ষার পর একটি সমন্বিত প্রকল্প গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধন ও সমাবেশ শেষে বেলা একটার দিকে জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামালের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর ২১ দফা দাবি–সংবলিত স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, নদীভাঙন ও জলাবদ্ধতা–কবলিত উপকূলীয় এলাকাকে ‘দুর্যোগপ্রবণ এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা, এ এলাকার উন্নয়নে পৃথক কর্তৃপক্ষ গঠন, দুর্যোগের কারণে ব্যাপকহারে অভিবাসন বন্ধ করতে বিশেষ বরাদ্দ ও অর্থনৈতিক প্রকল্প গ্রহণ, জলাবদ্ধ ও ভাঙনকবলিত এলাকার দরিদ্র মানুষের জন্য স্থায়ী রেশনের ব্যবস্থা, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগকে মাথায় রেখে স্থায়ী, মজবুত ও টেকসই বেড়িবাঁধ পুনর্নির্মাণ, সামগ্রিক উন্নয়ন অংশীদার, সুনির্দিষ্ট এসডিজি অর্জনে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গৃহীত ডেল্টা ও ব্লু প্ল্যানের আওতায় টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা, বেড়িবাঁধ নির্মাণে স্থানীয় জনগণের মতামতকে গুরুত্ব, সাতক্ষীরা শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত প্রাণসায়ের খালের স্বাভাবিক প্রবাহ চালু, বেতনা ও মরিচ্চাপের সঙ্গে সংযুক্ত করা এবং নদী–খালের নেট-পাটা অপসারণ।
আরও পড়ুন
-
সকাল ৯টার ট্রেন ছাড়েনি বেলা ২টায়ও, স্টেশনেই ঘুমিয়ে পড়েছেন ক্লান্ত মা-মেয়ে
-
বাংলাদেশ ব্যাংকে ঢুকতে সাংবাদিকদের বাধা ব্যাংক লোপাটকারীদেরই উৎসাহিত করবে: নোয়াব সভাপতি
-
পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল ভারত
-
মোদির বিভাজনের রাজনীতির পেছনের কারিগর, যেভাবে উত্থান অমিত শাহর
-
ঝড়বৃষ্টি হতে পারে ৬ দিন ধরে, বলছে আবহাওয়া অফিস