Thank you for trying Sticky AMP!!

একাদশ শ্রেণির ভর্তিতে বাড়তি টাকা আদায়ের অভিযোগ

সুসং সরকারি মহাবিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির রসিদ

শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে টাকার পরিমাণ নির্ধারণ করে দেওয়ার পরও নেত্রকোনায় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সরকারনির্ধারিত ফির তুলনায় ভর্তি হতে ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকা বেশি খরচ হচ্ছে।

প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মনোনীত শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রকাশের পর ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়। গত রোববার তা শেষ হয়।

এর আগে ৭ সেপ্টেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মু. জিয়াউল হক স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনায় বলা হয়, এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একাদশে সেশন চার্জসহ ভর্তি ফি সাকল্যে উপজেলা এলাকায় এক হাজার টাকা ও জেলা সদরে দুই হাজার টাকার বেশি আদায় করা  যাবে না। শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ বিরতি ফি ১৫০ টাকা এবং বিলম্ব ভর্তি ফি ১০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এ ছাড়া কোভিড-১৯ ও অভিভাবকদের আর্থিক অসচ্ছলতার কথা বিবেচনা করে দরিদ্র, মেধাবী ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ভর্তিতে ফি যত দূর সম্ভব মওকুফের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নেত্রকোনা সরকারি কলেজ ও নেত্রকোনা সরকারি মহিলা কলেজ ছাড়া অধিকাংশ কলেজে ভর্তিতে বেশি টাকা নেওয়া হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ভর্তি ফি আদায় করেছে নেত্রকোনা শহরের আবু আব্বাছ ডিগ্রি কলেজ ও দুর্গাপুরে সুসং সরকারি মহাবিদ্যালয়। আবু আব্বাছ কলেজে সব মিলিয়ে পাঁচ হাজার টাকা করে নিয়েছে। এ কলেজে দুই হাজার টাকা করে নেওয়ার কথা। আর সুসং সরকারি কলেজে মানবিক ও ব্যবসা শাখায় ২ হাজার ৬৭০ টাকা এবং বিজ্ঞান শাখায় ২ হাজার ৯২০ টাকা করে দিতে হয়েছে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের। এ কলেজে এক হাজার টাকা করে নেওয়ার কথা।

আবু আব্বাছ কলেজের অধ্যক্ষ মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, কলেজটি বেসরকারি। শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্যে এখনো প্রায় ৩৫ জনের এমপিওভুক্ত হয়নি। তাঁরা নিরলসভাবে কাজ করছেন। কলেজের আয় থেকে তাঁদের বেতন-ভাতা দিতে হয়।

মোহনগঞ্জ সরকারি ডিগ্রি কলেজে ১০০০ টাকার বদলে মানবিকে ১ হাজার ৮০০ টাকা এবং বিজ্ঞানে ১ হাজার ৯০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। অধ্যক্ষ আবুল হোসেন চৌধুরী বলেন, বাড়তি টাকা তিনি আদায় করেননি। এটা নিয়মের মধ্যেই নিয়েছেন। এ ছাড়া কলমাকান্দা সরকারি ডিগ্রি কলেজে ২ হাজার ৫০০ টাকা, মদনে সরকারি হাজী আবদুল আজিজ খান ডিগ্রি কলেজে ১ হাজার ৮০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে।

তবে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জেলা শহরের সাতপাই এলাকায় নেত্রকোনা সরকারি কলেজে ভর্তি হওয়া ১ হাজার ২৮৫ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১ হাজার ৪৬০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। আর মোক্তারপাড়া এলাকায় সরকারি মহিলা কলেজে ১ হাজার ৭২৪ থেকে ১ হাজার ৮২৪ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। এ দুই কলেজে ২০০০ টাকা করে নেওয়ার কথা। তারা ফি কিছুটা কম রেখেছে।

সুসং সরকারি কলেজে টাকা বেশি নেওয়ায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা খানমের কাছে অভিযোগ করেন। পরে ইউএনও গত বৃহস্পতিবার কলেজে গিয়ে অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলে অতিরিক্ত টাকা ফেরত দিতে অনুরোধ জানান। কিন্তু এখনো ওই টাকা ফেরত দেওয়া হয়নি। ইউএনও বলেন, ওই কলেজে ভর্তিতে সরকারি বিধিবহির্ভূত বাড়তি টাকা আদায় করা হচ্ছে। তিনি ওই টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য বলে এসেছেন।

কলেজের অধ্যক্ষ মো. মিজানুর রহমান বলেন, ইউএনও বলার পরে তাঁরা স্টাফ কাউন্সিলের সভা করে শিক্ষার্থীদের বাড়তি টাকা ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। টাকা দ্রুত ফেরত দেওয়া হবে।

Also Read: একাদশে ভর্তি নীতি না মানলে এমপিও বাতিল