Thank you for trying Sticky AMP!!

এখন ওরা সাইকেলে স্কুলে যাবে

নতুন বাইসাইকেল পেয়ে উচ্ছ্বসিত স্কুলছাত্রীরা। গতকাল এক অনুষ্ঠান আয়োজন করে রাজশাহীর বাগমারার উপজেলা পরিষদ চত্বরে তাদের হাতে বাইসাইকেল তুলে দেওয়া হয়। ছবি: প্রথম আলো

‘প্রধানমন্ত্রী মুকে সাইকেল দিছে, মুই স্কুল যাবি’ (প্রধানমন্ত্রী আমাকে সাইকেল দিয়েছেন, আমি তা নিয়ে স্কুলে যাব)। প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন সহায়তা কর্মসূচির আওতায় উপহার হিসেবে বাইসাইকেল পেয়ে সাঁওতালি ভাষায় এভাবেই নিজের প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছিল স্কুলছাত্রী বৃষ্টি। শুধু বৃষ্টি নয়, তার মতো ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর আরও ২৯ শিক্ষার্থীর হাতে গতকাল শনিবার সকালে এ বাইসাইকেল তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া এই সম্প্রদায়ের আরও ১০৫ জন শিক্ষার্থী পেয়েছে শিক্ষাবৃত্তি ও শিক্ষা উপকরণ।

গতকাল উপজেলা পরিষদের মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের হাতে প্রধানমন্ত্রীর উপহার তুলে দেওয়া হয়। এ উপহার পেয়ে তারা খুশি এবং উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে।

 উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে পাওয়া উপহার গতকাল সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে উপজেলার ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ১৩৫ শিক্ষার্থীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২০ ছাত্রী ও ১০ ছাত্রকে একটি করে বাইসাইকেল এবং ১০৫ শিক্ষার্থীকে শিক্ষাবৃত্তির নগদ টাকা ও শিক্ষা উপকরণ দেওয়া হয়। এর মধ্যে স্নাতক (সম্মান) পর্যায়ের দুই শিক্ষার্থী রয়েছেন। তাঁদের ৯ হাজার টাকা করে এবং বাকিদের আড়াই থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হয়।

বাইসাইকেল পাওয়া আচিনঘাট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও মাদারীগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা তমা জানায়, প্রতিদিন তাকে সাড়ে তিন কিলোমিটার হেঁটে বিদ্যালয়ে যেতে হয়। এত দিন অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। প্রায়ই নির্দিষ্ট সময়ে বিদ্যালয়ে পৌঁছা সম্ভব হয়নি। তবে সাইকেল পেয়ে তার সুবিধা হয়েছে। এখন সাইকেল চালিয়ে সময়মতো বিদ্যালয়ে যেতে পারবে। সাইকেল পাওয়ায় একই রকম অনুভূতি ব্যক্ত করে হাটগাঙ্গোপাড়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও হরিজন সম্প্রদায়ের রিপা ও শম্পা। বিনা মূল্যে সাইকেল পাওয়া যাবে, তা ভাবতেই পারেনি তারা।

শিক্ষাবৃত্তি পাওয়া হরিজন সম্প্রদায়ের স্নাতকপড়ুয়া শিক্ষার্থী সুব্রত কুমার বলেন, তাঁরা বরাবরই অবহেলিত ছিলেন। এই প্রথম কোনো সহযোগিতা পেলেন। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে এ সহযোগিতা তাঁকে আরও অনুপ্রাণিত করবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শরিফ আহম্মেদ বলেন, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর এ শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করে তাদের কাছে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে বাইসাইকেল ও শিক্ষা উপকরণ দিয়েছেন তাঁরা। ফলে এই শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার আগ্রহ বাড়বে এবং ঝরে পড়াও কমবে বলে মনে করছেন তিনি।

এ বিষয়ে কলেজশিক্ষক সমরেশ কুমার বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এ উপহার পেয়ে সবাই খুশি। এই উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের কষ্ট লাগব হবে। লেখাপড়ার প্রতি তাদের আগ্রহ বাড়বে।

চানপাড়া আদর্শ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমা খাতুন বলেন, তাঁর প্রতিষ্ঠানের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর এক ছাত্রী বাইসাইকেল পেয়েছে। ছাত্রীটি কষ্ট করে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করত। এখন আর তাকে কষ্ট করতে হবে না। নির্দিষ্ট সময়ে বিদ্যালয়ে আসতে পারবে।