Thank you for trying Sticky AMP!!

আখাউড়া পৌরসভায় এজেন্ট খুঁজে পাচ্ছেন না বিএনপির প্রার্থী

তাকজিল খলিফা , জয়নাল আবেদীন, নুরুল হক ভূঁইয়া, শফিকুল ইসলাম খান

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌরসভা নির্বাচনের শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় গতকাল শুক্রবার সারা দিন ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী (নৌকা প্রতীক) বর্তমান মেয়র তাকজিল খলিফা ও তাঁর লোকজন। উল্টো চিত্র দেখা গেছে বিএনপি শিবিরে। দলীয় বিভক্তি, রাতে নেতা-কর্মীদের বাড়িতে পুলিশের হানা, মামলা ও গ্রেপ্তারের ভয়ে কেউই বিএনপির মেয়র প্রার্থী (ধানের শীষ প্রতীক) জয়নাল আবেদীনের এজেন্ট হতে চাইছেন না।

একই অবস্থা আওয়ামী লীগের দুই ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী সাবেক পৌর মেয়র নুরুল হক ভূঁইয়া (নারকেলগাছ) ও পৌর মৎস্যজীবী লীগের সাবেক সহসভাপতি শফিকুল ইসলাম খানেরও (মোবাইল ফোন প্রতীক)। শেষ তিনজন সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন।

কাল রোববার চতুর্থ ধাপে আখাউড়া পৌরসভা নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে মেয়র পদে চারজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বিএনপিসহ অপর দুই মেয়র প্রার্থীর লোকজনের অভিযোগ, নির্বাচনকে ঘিরে পুলিশ রাতে উপজেলা বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাড়িতে হানা দিচ্ছে। আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের এজেন্টদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

গত বুধবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম খানের আপন ভাই উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম খানকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। তিনি শফিকুল ইসলামের নির্বাচনের প্রধান সমন্বয়ক ছিলেন। তাঁকে একটি অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

একই রাতে উপজেলার দুর্গাপুর গ্রাম থেকে স্থানীয় কামাল মিয়া ও ঢাকা থেকে আসা বিএনপির প্রার্থীর স্বজন সাহারুল ইসলামকে (৩১) বিনা কারণে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে তাঁদের ছেড়েও দেয় পুলিশ।

উপজেলা বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি উপজেলা ছাত্রদলের আনন্দ মিছিল নিয়ে আখাউড়া থানায় একটি মামলা হয়। মামলায় মেয়র প্রার্থী জয়নাল আবেদীনকে প্রধান আসামি করে ১৭ জন এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৩০০-৪০০ জনকে আসামি করা হয়। সেটি নিয়েই বিএনপি প্রার্থীর মূল ভয়। অজ্ঞাতনামা আসামি থাকায় গ্রেপ্তারের ভয়ে বিএনপি প্রার্থী নেতা-কর্মীদের নিয়ে তেমন প্রচারণা চালাতে পারেননি। প্রচারণায় বের হলেই বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্নজনের ফোনে নেতা-কর্মীরা সরে গেছেন। বিএনপির প্রার্থী অনেকটা একাই লোকজনের বাড়ি বাড়ি এবং কাছে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন, প্রচারপত্র বিতরণ করছেন।

জয়নাল আবেদীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাতে প্রতিটি ওয়ার্ডে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুলিশে হানা চলছে। লোকজন বাড়িতে থাকতে পারছেন না। সবার মধ্যে মামলা ও গ্রেপ্তারের ভয়। এখন এজেন্ট খুঁজে পাচ্ছি না। কেউ এজেন্ট হতেও রাজি হচ্ছেন না। যে অবস্থা দেখছি, আমি তো নির্বাচনে এজেন্টই দিতে পারব না। সুষ্ঠু নির্বাচন কোনোভাবেই আশা করা যায় না।’

আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী শফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কায় আছি। বুধবার পর্যন্ত আমার চারপাশে লোকে লোকারণ্য ছিল। কিন্তু আমার আপন ভাইকে গ্রেপ্তারের পর থেকে ভয়ে কেউ আসতে চাইছেন না। এজেন্ট নিয়ে বিরাট সংকটে। প্রত্যেকের বাড়ি গিয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।’

আরেক বিদ্রোহী প্রার্থী নুরুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘এজেন্টদেরও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমার ওপর হামলাও চালানো হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আমার শঙ্কা রয়েছে। নৌকার প্রার্থী জানে ভোট হলে তিনি জয়ী হবেন না।’

নৌকার প্রার্থী বর্তমান মেয়র তাকজিল খলিফা বলেন, অন্য মেয়র প্রার্থীদের অভিযোগ সঠিক নয়। নিজেদের সমস্যা ও দোষ অন্যের ওপর চাপালে হবে না।

আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রসুল আহমেদ বলেন, এসব অবাস্তব কথা। নির্বাচন হলেই অযথা কথা বলা একটা স্বভাব হয়ে গেছে। পুলিশ বিনা কারণে কারও বাড়ি যাচ্ছে না। কারও বিরুদ্ধে কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকলে পুলিশ দায়িত্ব পালনে বের হয়।