Thank you for trying Sticky AMP!!

এবার এইচএসসি পাস করলেন মলি রানী

এইচএসসির ফলাফলের পর মা মলি রানীকে মিষ্টি খাওয়াচ্ছেন ছেলে মৃন্ময় কুমার কুণ্ডু। বাগাতিপাড়া, নাটোর, ১৭ জুলাই। ছবি: মুক্তার হোসেন

বয়সের বাধাকে উপেক্ষা করে নাটোরের বাগাতিপাড়ায় ছেলের সঙ্গে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া সেই মলি রানী (৩৯) এবার এইচএসসি পাস করেছেন। আজ বুধবার প্রকাশিত ফলাফলে তিনি জিপিএ ৩ দশমিক ৯৬ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। চলতি বছর বাগাতিপাড়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট থেকে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি। তিনি ওই কলেজের উদ্যোক্তা উন্নয়ন ট্রেডের ছাত্রী ছিলেন।

এদিকে ছেলে মৃন্ময় কুমার কুণ্ডু এসএসসি পাসের পর নাটোরে টিএমএস পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে বর্তমানে চতুর্থ সেমিস্টারের ফাইনাল পরীক্ষা দিচ্ছেন।

এর আগে ২০১৭ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ছেলের চেয়ে ভালো ফলাফল করেন মলি রানী। এসএসসিতে তিনি পেয়েছিলেন জিপিএ ৪ দশমিক ৫৩ এবং ছেলে মৃন্ময় কুমার কুণ্ডু পান জিপিএ ৪ দশমিক ৪৩। সে সময় কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মলি বাগাতিপাড়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ড্রেস মেকিং অ্যান্ড টেইলারিং ট্রেডের এবং ছেলে মৃন্ময় বাগাতিপাড়া মডেল পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের বিল্ডিং মেইনটেন্যান্স ট্রেডের শিক্ষার্থী ছিলেন।

উদ্যমী এই মলি রানীকে নিয়ে ২০১৭ সালে প্রথম আলোতে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছিল। সে সময় মলি রানীর সাফল্যে তৎকালীন সাংসদ আবুল কালাম, জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন, সদ্য প্রয়াত বইপ্রেমী পলান সরকার তাঁর বাড়িতে ছুটে আসেন। তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ মা ও ছেলেকে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে ডেকে এনে আনুষ্ঠানিকভাবে ল্যাপটপ উপহার দেন। উপজেলা প্রশাসন মা দিবসে সংবর্ধনা দেয় মলি রানীকে। এরপর কলেজে ভর্তি হলে অধ্যক্ষ শরীফ উদ্দিন আহম্মেদ বিনা খরচায় তাঁর পড়ালেখার দায়িত্ব নেন।

মলি রানী বলেন, যখন তিনি নবম শ্রেণির ছাত্রী তখন বাগাতিপাড়ার গালিমপুরের মিষ্টি ব্যবসায়ী দেবব্রত কুমার মিন্টুর সঙ্গে তাঁর বাবা বিয়ে দেন। তাঁর বাবার বাড়ি নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার প্রসাদপুরে। বাবার নাম অসিত কুণ্ডু। এরপর আর পড়ালেখা করার সুযোগ হয়নি। সংসারের চাপে পিষ্ট হয়ে গৃহিণীই রয়ে যান।

মলি রানী বলেন, এরই মধ্যে দুটি সন্তানের জন্ম দেন তিনি। বড় ছেলে মৃন্ময় কুমার কুণ্ডু এবং ছোট ছেলে পাপন কুণ্ডু। ছেলেদের পড়ালেখা করাতে গিয়ে তিনি অনুভব করেন তাঁর নিজের পড়ালেখা জানা দরকার। সেই ভাবনা থেকেই পুনরায় স্কুলে ভর্তি হন।