Thank you for trying Sticky AMP!!

এবার নিশ্চিত হলো এক বছরের পড়ালেখার খরচ

চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করা এই তিন যমজ ভাই। ববগুড়ার ধুনট উপজেলার বথুয়াবাড়ির গ্রামে

বগুড়ার ধুনট উপজেলার বথুয়াবাড়ির গ্রামের তিন যমজ ভাই শাফিউল হাসান, মাফিউল হাসান ও রাফিউল হাসান। ২০০৪ সালের ১০ জানুয়ারি আরজিনা বেগমের গর্ভে তাদের জন্ম। জন্মের পর থেকেই তাদের মানুষ করতে কম সংগ্রাম করেননি তিনি। ১১ বছর আগে স্কুলশিক্ষক স্বামী গোলাম মোস্তফা তাঁদের অকূল পাথারে ফেলে পরপারে চলে যান। এই তিন যমজ সন্তান তখন শিশুশ্রেণির ছাত্র। তাদের জন্মের আগেই গোলাম মোস্তফা-আরজিনা দম্পতির আরও এক ছেলে ও এক মেয়ে ছিল। পাঁচ সন্তানকে নিয়ে আরজিনাকে পাড়ি দিতে হয় দুঃখের সমুদ্র।

Also Read: আঁধার মাড়িয়ে আলো ছড়াল তিন যমজ ভাই

পাঁচ সন্তানের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে স্বামীর সব সম্পদ অন্যের কাছে বন্ধক রাখেন আরজিনা। একপর্যায়ে পরিবারের বড় ছেলে মাহমুদ হাসান এইচএসসি পাস করে অভাবের সংসারের হাল ধরতে ধারদেনা করে পাড়ি জমান বিদেশে। কিন্তু ভাগ্য সহায় হয়নি। ফিরে আসেন দেশে। জীবনযুদ্ধে বিপর্যস্ত হয়ে এখন তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন। আর মেয়ে মৌসুমী খাতুন কাহালুর একটি কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী। এমন টানাপোড়েনের মধ্যে যমজ তিন ভাই শাফিউল, মাফিউল ও রাফিউল ধুনট সরকারি এনইউ পাইলট উচ্চবিদ্যালয় থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দেয়। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করে তারা।

কিন্তু তাদের অগ্রযাত্রা থমকে যায় কলেজে ভর্তির টাকা জোগাড় করতে গিয়ে। তিনজনই এইচএসসি প্রথম বর্ষে ভর্তির সুযোগ পায় বগুড়া সরকারি শাহ সুলতান কলেজে। কিন্তু ছেলেদের কলেজে ভর্তির জন্য কোনো টাকা ছিল না আরজিনা বেগমের হাতে। খবর পেয়ে ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপাসিন্ধু বালা তিন ভাইকে ভর্তির জন্য সাত হাজার টাকা দিয়ে সহযোগিতা করেন। প্রতিশ্রুতি দেন পরবর্তী সময়ে আরও সহযোগিতা করার।

Also Read: কলেজে ভর্তি হতে পারছে যমজ তিন ভাই

এবার কলেজের প্রথম বর্ষের পড়ালেখার যাবতীয় খরচের দায়িত্ব নিলেন শহীদ গোলাম রব্বানী ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান আসিফ সিরাজ রব্বানী। আরজিনা বেগম বলেন, ‘ছেলেদের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে পারছি না। তাই শহীদ গোলাম রব্বানী ফাউন্ডেশন এক বছর প্রতি মাসে ছয় হাজার করে টাকা দেওয়ার কথা দিয়েছে।

প্রসঙ্গত, প্রথম আলোতে এই তিন যমজের অগ্রযাত্রা নিয়ে এর আগে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেখান থেকেই জানতে পেরে আসিফ সিরাজ রব্বানী তিন ভাইকে সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছেন বলে জানিয়েছেন।

আসিফ সিরাজ রব্বানী প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রথম আলোতে প্রতিবেদন দেখে যমজ তিন ভাইয়ের একাদশ শ্রেণিতে পড়ালেখার এক বছরের জন্য দায়িত্ব নিয়েছি আমরা। মানবিক দিক বিবেচনা করে শহীদ গোলাম রব্বানী ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে তাদের এই সহযোগিতা দেওয়া হবে।’