Thank you for trying Sticky AMP!!

কক্সবাজার সৈকতের অভুক্ত ৫৫ ঘোড়ার দায়িত্ব নিল ইয়ামাহা রাইডার্স ক্লাব

কক্সবাজার সৈকতের ঝাউবাগানের ভেতরে অভুক্ত ঘোড়াগুলোকে খাবার দেওয়া হয়েছে। আজ রোববার বিকেলে

কক্সবাজার সৈকতের অভুক্ত ৫৫টি ঘোড়ার খাবারের দায়িত্ব নিয়েছে ইয়ামাহা রাইডার্স ক্লাব। আগামী এক মাস গোড়াগুলোর প্রয়োজনীয় খাদ্যের জোগান দেবে প্রতিষ্ঠানটি। আজ রোববার বিকেল সাড়ে চারটায় সৈকতের কবিতা চত্বরের ঝাউবাগানের ভেতরে ৫৫ ঘোড়ার ১৬ জন মালিকের হাতে খাদ্য হিসেবে ভুসি ও পাতার মিড়া (একধরনের গুড়) তুলে দেওয়া হয়।

২৮ মে প্রথম আলোতে ‘খাবার জুটছে না কক্সবাজার সৈকতের ঘোড়াগুলোর, এক মাসে ২১টির মৃত্যু’ শীর্ষক শিরোনামে একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর বিভিন্ন মহলে আলোচনা শুরু হয়। অনেকে মানবিক দিক বিবেচনা করে ঘোড়াগুলো রক্ষার উদ্যোগ নিচ্ছেন, কেউ কেউ ঘরে নিয়ে পালার জন্য ঘোড়ার দত্তক নিতেও আগ্রহ প্রকাশ করছেন। এর মধ্যে প্রথম দফায় ইয়ামাহা রাইডার্স ক্লাব ৫৫টি ঘোড়ার এক মাসের খাবারের দায়িত্ব নিল।

ঝাউবাগানের ভেতরে খাবার বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন এসিআই মোটরস কক্সবাজার অঞ্চলের ব্যবস্থাপক এ কে এম নাজিম উদ্দিন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন এসিআই মোটরসের ডিলার মো. বোরহান উদ্দিন, ঘোড়া মালিক সমিতির সভাপতি আহসান উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক ফরিদা বেগম প্রমুখ।

এসিআই কর্মকর্তা এ কে এম নাজিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ঘোড়া নিয়ে প্রকাশিত প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিবেদনটি এসিআই মোটরস কর্তৃপক্ষের নজর কেড়েছে। অভুক্ত থেকে ঘোড়াগুলো এভাবে মারা যাবে, কল্পনা করাও কঠিন। তাই মানবিকবোধ থেকে এসিআই মোটরস অভুক্ত ঘোড়ার পাশে দাঁড়িয়েছে। আপাতত ৫৫টি ঘোড়া পেয়েছে, ঘোড়ার পেছনে দৈনিক ছয় হাজার টাকার খাদ্য সরবরাহ দেওয়া হবে টানা এক মাস। এরপরও পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ঘোড়া মালিক সমিতির সভাপতি আহসান উদ্দিন বলেন, সমিতির আওতাধীন ২১ জন মালিকের ঘোড়া ছিল ৯০টির বেশি। প্রথম লকডাউনের চার মাসে (গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে ১৭ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে) অভুক্ত থেকে মারা গেছে ২০টি ঘোড়া। গত ১ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া দ্বিতীয় দফার লকডাউনের মারা গেছে আরও ১০টি ঘোড়া। এর মধ্যে আব্দুল কাদেরের একটি, আহসান উদ্দিনের নিজের দুটি, ফরিদা বেগমের তিনটি, আমির হোসেনের একটি, কায়সার হামিদের একটি ও আবুল কালামের দুটি ঘোড়া রয়েছে।

তবে এর আগে সমিতির পক্ষ থেকে গত এক মাসে ২১টি ঘোড়ার মৃত্যুর কথা বলা হয়েছিল।

সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফরিদা বেগম বলেন, অধিকাংশ মালিক ঠিকমতো ঘোড়াগুলোকে খাওয়াতে পারছিল না, তাই ঘোড়াগুলো ঘরের বাইরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। ঘোড়াগুলো খাদ্যের সন্ধানে শহরের অলিগলি, বাঁকখালী নদীর তীরে নেমেছে। রাস্তায় হাঁটার সময় গাড়ির ধাক্কায় আহত হয়েছে, প্লাস্টিক বর্জ্য খেয়েও কয়েকটি ঘোড়া মারা গেছে। প্রথম আলোতে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর সব মহল থেকে যোগাযোগ করছেন। ঘোড়ার পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। তাঁরা আর কোনো ঘোড়ার মৃত্যু দেখতে চান না।

এসিআই মোটরসের ডিলার মো. বোরহান উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনা করে ঘোড়ার পাশাপাশি ১৬ জন মালিককেও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ত্রাণসহায়তা দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেককে ১০ কেজি করে চাল, ৫ কেজি আলু, ২ কেজি ডাল, ২ কেজি পেঁয়াজসহ প্রয়োজনীয় নিত্যপণ্য সরবরাহ করা হয়।

Also Read: খাবার জুটছে না কক্সবাজার সৈকতের ঘোড়াগুলোর, এক মাসে ২১টির মৃত্যু