Thank you for trying Sticky AMP!!

কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে আমদানি-রপ্তানি

যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর

ভারত থেকে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশের সময় দুই দফায় জীবাণুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে। একই সঙ্গে চালক ও সহকারীদের স্যানিটাইজ এবং তাপমাত্রা পরিমাপ করে বন্দরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশি ট্রাক প্রবেশের সময়ও একই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আমদানি-রপ্তানির কার্যক্রম চালু রয়েছে। এ ছাড়া ভারত থেকে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ৭৫ জন যাত্রী দেশে ফিরেছেন। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত তাঁরা দেশে ফেরেন। তাঁদের সবাইকে বেনাপোলের দুটি আবাসিক হোটেলে ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।

স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৬ এপ্রিল থেকে ১৪ দিনের জন্য ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এ সময় স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সাধারণ মানুষের চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে। তবে সে দেশে অবস্থানরত যেসব বাংলাদেশির ভিসার মেয়াদ ১৫ দিন বা তারও কম রয়েছে, তাঁরা যথাযথ অনুমোদন সাপেক্ষে বেনাপোল, আখাউড়া ও বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে তাঁদের ১৪ দিন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। সূত্র জানায়, ওই তিন বন্দর দিয়ে বাংলাদেশিদের প্রবেশের জন্য দিল্লি, কলকাতা ও আগরতলা মিশন থেকে অনুমোদন নিতে হবে এবং প্রবেশের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে করোনা নেগেটিভ সনদ থাকতে হবে।

স্ত্রী তাপসী রানী বাইনকে নিয়ে ভারতে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মিয়াপাড়া এলাকার দীলিপ বাইন। আজ মঙ্গলবার বেলা আড়াইটার দিকে স্ত্রীকে নিয়ে তিনি বেনাপোল স্থলবন্দর হয়ে দেশে ফিরেছেন। বেলা পৌনে তিনটার দিকে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের ভিসার মেয়াদ ১৫ দিনের কম রয়েছে। গতকাল (সোমবার) সকাল থেকে চেষ্টা করে বিকেলে কলকাতায় বাংলাদেশি মিশন থেকে অনুমোদন পেয়েছি। প্রবেশের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে করোনা নেগেটিভ টেস্ট রিপোর্ট নিতে হবে, তা–ও নিয়েছি।’ তিনি বলেন, ভিড় না থাকায় ভারতের পেট্রাপোল ও বাংলাদেশের বেনাপোল বন্দরের ইমিগ্রেশনেও তেমন সমস্যা হয়নি। বেনাপোল স্থলবন্দরে ইমিগ্রেশনের কার্যক্রম শেষ করার পর সব কাগজপত্র জমা দিয়েছেন। এখন নিজ খরচে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ইউসুফ আলী বলেন, ভারতে করোনাভাইরাসের একটি নতুন ধরন শনাক্ত হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ভারত থেকে যেসব যাত্রী ফিরছেন তাঁদের নিজস্ব খরচে ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকার বাধ্যবাধকতা করা হয়েছে। গতকাল ৬ জন এবং আজ মঙ্গলবার ৭৫ জন ভারত থেকে ফিরেছেন। তাঁদের বেনাপোলে দুটি আবাসিক হোটেল রজনীগন্ধা ও পোর্ট ভিউতে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।

বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্র জানায়, স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক রয়েছে। স্বাস্থ্যবিধিসহ সব নির্দেশনা মেনে সোমবার থেকে স্থলবন্দর দিয়ে দুই দেশের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানিসহ বন্দরের ভেতরের সব কার্যক্রম চালু রয়েছে। ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক বন্দরে প্রবেশের সময় দুই দফায় জীবাণুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে। একই সঙ্গে এর চালক ও সহকারীদের স্যানিটাইজ করে এবং তাপমাত্রা পরিমাপ করে বন্দরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশি ট্রাককেও একইভাবে বন্দরে প্রবেশ করানো হচ্ছে।

স্থলবন্দর সূত্রে আরও জানা গেছে, বন্দরে প্রবেশের ক্ষেত্রে শ্রমিকসহ সবার জন্য হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাস্ক পরা নিশ্চিত করা হয়েছে। কাগজপত্রের কাজকর্ম, মালামাল আনলোড করা এবং খাওয়া ও বিশ্রাম—এসব কাজ যতটা সম্ভব যেন ওই চালক গাড়িতে বসেই সারতে পারেন, সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিশ্রাম এবং প্রাতঃকর্ম সারতে হলে ট্রাকচালকদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হয়েছে, যেখানে তাঁদের সঙ্গে অন্যদের সংস্পর্শে আসবেন না।

বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) আবদুল জলিল বলেন, স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে অনুসরণ করে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক রয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি ঠিকমতো অনুসরণ করা হচ্ছে কি না, তা তদারকি করা হচ্ছে।

বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবিব বলেন, স্থলবন্দরটি দিয়ে আজ মঙ্গলবার ভারত থেকে ৭৫ জন যাত্রী দেশে ফিরেছেন এবং বাংলাদেশ থেকে ১৬ জন ভারতে গেছেন।