Thank you for trying Sticky AMP!!

লকডাউন এলাকা ঘুরে আসায় কমলগঞ্জে ৪ বাড়িতে লাল পতাকা

করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে কমলগঞ্জের পতনউষার ইউনিয়নের একটি গ্রামের চারটি বাড়িতে লাল পতাকা লাগিয়ে দিচ্ছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক। ছবি: প্রথম আলো

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার পতনউষার ইউনিয়নের একটি গ্রামের চার বাড়িকে লকডাউন করে লাল পতাকা লাগিয়ে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। ওই চার বাড়ির লোকজন পার্শ্ববর্তী রাজনগর উপজেলার লকডাউন এলাকা থেকে আসায় গতকাল সোমবার বিকেল চারটায় কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশেকুল হক বাড়িগুলোতে লাল পতাকা লাগিয়ে লকডাউন ঘোষণা করেন।

অন্যদিকে কমলগঞ্জের চারটি ইউনিয়নের আটটি গ্রাম ও একটি চা–বাগানের বাসিন্দারা স্বেচ্ছায় নিজেদের গ্রামকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন। গ্রামের প্রবেশপথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গ্রামগুলো হচ্ছে শমশেরনগর ইউনিয়নের শিংরাউলী, বাদাইরদেউল, মাধবপুর ইউনিয়নের মাঝেরগাঁও, শিমুলতলা, আদমপুর ইউনিয়নের তেতইগাঁও, ঘোড়ামারা, পশ্চিম কান্দিগাঁও, আলীনগর ইউনিয়নের উত্তর তিলকপুর ও আলীনগর চা–বাগান। গ্রামে প্রবেশের পথ বন্ধ করে দিয়ে ‘লকডাউন’ লেখা ঝুলিয়ে রাখতে দেখা গেছে।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, লকডাউন উপজেলা থেকে কিছু লোকজনের ঘুরে আসার খবর পেয়ে গতকাল বিকেলে নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও আশেকুল হক, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সৌমিত্র সিনহা ও পতনউষার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী তওফিক আহমদ গ্রামটিতে যান। গ্রামের চারটি বাড়ির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, তাঁরা রাজনগর উপজেলার লকডাউন এলাকা থেকে এসেছেন। সেখানে এক ব্যবসায়ী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। পরে ওই বাড়িগুলোতে লাল পতাকা লাগিয়ে দেওয়া হয়।

এদিকে স্বেচ্ছায় অবরুদ্ধ হওয়া গ্রামগুলোর একটি শমশেরনগর ইউনিয়নের শিংরাউলী গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন (অব.) সাজ্জাদুর রহমান বলেন, গ্রামের রাস্তা ব্যবহার করে অবাধে ট্রাকে করে ইট, বালু ও মাটি পরিবহন করছে একটি চক্র। গ্রামে বহিরাগতদের রয়েছে আনাগোনা। তাই এ সময় গ্রামবাসীর সুরক্ষার কথা ভেবে গ্রামের ছাত্র, যুবক ও তরুণেরা নিজ উদ্যোগে গ্রামের প্রবেশপথ বাঁশ পুঁতে বন্ধ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, বহিরাগতদের গ্রামে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। গ্রামের মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে বা জরুরি প্রয়োজনে বাইরে গেলে হাত–মুখ ধুয়ে যাচ্ছেন। আবার হাত–মুখ ধুয়ে গ্রামে প্রবেশ করছেন।

করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে স্বেচ্ছায় আদমপুর ইউনিয়নের পশ্চিম কান্দিগাঁও গ্রামকে অবরুদ্ধ করেন গ্রামটির বাসিন্দারা। ছবি: প্রথম আলো

মঙ্গলবার সকাল থেকে আলীনগর চা–বাগানে প্রবেশপথের ফটক তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে চা ছাত্র যুব পরিষদ এ উদ্যোগ নেয়। আলীনগর চা–বাগান চা ছাত্র যুব পরিষদের সভাপতি সজল কৈরী বলেন, এ বাগানের চা–শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সুরক্ষায় স্বেচ্ছায় এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, যে চারটি বাড়িকে লকডাউন করা হয়েছে, সেখানে বসবাসরত কেউ করোনাভাইরাস আক্রান্ত নন। তাঁরা লকডাউন এলাকা ঘুরে এসেছেন বলে আপাতত কিছুদিন আলাদাভাবে থাকতে হবে। কমলগঞ্জের বিভিন্ন ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের স্বেচ্ছায় অবরুদ্ধ হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গ্রামবাসী নিজেদের সুরক্ষায় এ ব্যবস্থা নিয়েছে।