Thank you for trying Sticky AMP!!

করোনাকালে দিন-রাত ৪০ জনের ব্যস্ততা

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে খাগড়াছড়ি শহরের হবংপূজ্জ্যা পাড়ায় প্রবেশ করার আগে আগতকে জীবাণুনাশক স্প্রে করছেন এলাকার তরুণেরা। ছবিটি আজ রোববার সকালে তোলা। ছবি: নীরব চৌধুরী

খাগড়াছড়িকে করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা করতে দিন–রাত কাজ করে যাচ্ছেন একদল তরুণ–তরুণী। সব মিলিয়ে তাঁরা ৪০ জন।

জেলায় যে কারো প্রয়োজনে তাঁরা ছুটে যাচ্ছেন পাহাড়ের দুর্গম এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায়। কখনো তাদের সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন চাল, ডাল, তেল, লবণ, আলু, পেঁয়াজ, সাবানসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস। আবার কখনো নিয়ে যাচ্ছেন রান্না করা খাবার। কারো ওষুধ লাগবে জানলে তা পৌঁছে দিচ্ছেন। 'খাগড়াছড়ি স্বেচ্ছাসেবী করোনা সচেতনতা ও প্রতিরোধ কমিটি' এই নামে কাজ করছেন তাঁরা। তাদের উদ্যোগ দেখে এগিয়ে এসেছে প্রশাসন ও জেলার বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ।


করোনাভাইরাস রোধে সামাজিক সচেতনতা বাড়াতে এবং কর্মহীন ঘরবন্দী মানুষদের পাশে দাঁড়াতে নানাভাবে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। জেলার বাইরে থেকে আসা শ্রমিকেরা নাম নিবন্ধন ছাড়া যেন প্রবেশ করতে না পারেন, সে জন্য ২৪ ঘণ্টা তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে ৬-৭ জন পাহারা দিচ্ছেন খাগড়াছড়ির প্রবেশ মুখ জিরো মাইল এলাকায়। প্রতি দিন ২-৩ জন মিলে শহরের বাজার, বাসা–বাড়ি, অফিস ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন এলাকায় জীবাণুনাশক ওধুষ ছিটাচ্ছেন। এ ছাড়া চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা ভাষায় করোনাভাইরাস সম্পর্কে সর্তকতা ও করণীয় সম্পর্কে মাইকিং করছেন জেলা শহর থেকে প্রত্যন্ত পাহাড়ি এলাকাগুলোতে।


আজ রোববার সকালে শহরের প্রবেশমুখ জিরো মাইল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সংগঠনের সদস্যরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে কাজ করছেন। একদল জেলায় প্রবেশ করা গাড়ি ও যাত্রীদের জীবাণুনাশক ওষুধ ছিটিয়ে জীবাণুমুক্ত করার চেষ্টা করছেন। আরেক দল ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা প্রত্যেক শ্রমিকের নাম–ঠিকানা লিখে রাখছেন। পরে তা পাঠিয়ে দিচ্ছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের কাছে। শ্রমিকদের কাউকে সন্দেহভাজন মনে হলে নিয়ে যাচ্ছেন হাসপাতালে।


এ ছাড়া জীবাণুনাশক ওষুধ দিয়ে ভিজিয়ে সড়কের ওপর বিছিয়ে রেখেছেন পাটের বস্তা। এই বস্তাগুলোর ওপর দিয়ে প্রত্যেকটি গাড়ি শহরে প্রবেশ করছে।



সংগঠনটির সদস্য রানা হামিদ বলেন, 'প্রগতি সংঘ নামের একটি ক্লাব তাদের জায়গা সংগঠনটিকে ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছে। বর্তমানে ওখানে আমাদের ত্রাণ সামগ্রী রাখা হচ্ছে। অনেকে চাল, ডালসহ নানা ধরনের ত্রাণ সামগ্রী দিয়ে যাচ্ছেন। অনেকে আবার আর্থিকভাবেও সাহায্য করছেন।'

সংগঠনটির পরিচালক অপু দত্ত বলেন, 'প্রথমে সংগঠনটি নিজেদের অর্থায়নে চললেও এখন সম্পূর্ণ চলছে জেলার শুভানুধ্যায়ীদের সহযোগিতায়। সংগঠনের প্রত্যেক সদস্য স্বেচ্ছায় এগিয়ে এসেছেন সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে। আমরা প্রত্যেকের মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছি।'