Thank you for trying Sticky AMP!!

করোনা পরীক্ষায় যা করলেন তাঁরা

শাহনাজ পারভীন ও তুষার আলম।

‘৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়। ১৬ মার্চ স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) কেন্দ্রীয় সভাপতি ইকবাল আর্সলান ফোন করেন। তিনি খুলনায় করোনাভাইরাস শনাক্তের পিসিআর ল্যাব স্থাপন ও পরিচালনার সক্ষমতা আছে কি না, জানতে চান। সঙ্গে সঙ্গে “হ্যাঁ” জানিয়ে দিই।’

কথাগুলো খুলনা মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এস এম তুষার আলমের। করোনা পরীক্ষায় খুলনায় পিসিআর ল্যাব স্থাপনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন তিনি। এ কাজে নেতৃত্ব দিয়েছেন বিভাগের প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক শাহনাজ পারভীন।

কলেজ সূত্রে জানা যায়, প্রথম দিকে ল্যাব পরিচালনার কাজে ১৫ জন জনবল নিয়োগ করা হলেও এখন এই সংখ্যা ৩২। ল্যাবে পর্যায়ক্রমে দায়িত্ব পালন করেন সবাই। তবে মূল টেকনোলজিস্ট রয়েছেন মাত্র তিনজন। ল্যাবে পর্যায়ক্রমে দায়িত্ব পালন করার কথা থাকলেও ছুটি নেই তুষার ও শাহনাজের। যন্ত্র চালনা, নমুনা পরীক্ষা ও সংরক্ষণ—সবকিছুতে তাঁদের ওপরই ভরসা করেন সবাই। এসব কাজে একটু এদিক-ওদিক হলেই ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা।

>

খুলনায় পিসিআর ল্যাব স্থাপনে ভূমিকা রেখেছেন মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শাহনাজ পারভীন ও এস এম তুষার আলম।
করোনা পরীক্ষায় যা করলেন তাঁরা

বিভাগের সভাপতি শাহনাজ পারভীন বলেন, ল্যাব স্থাপন ও পরীক্ষা শুরু করতে গিয়ে প্রথম দিকে রাত ১০টার বেশি সময় পর্যন্ত কাজ করতে হয়েছে। পরিবারের অন্য সদস্যরা এতে আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করেছেন। কাজ করতে করতে গত মাসের শেষের দিকে হঠাৎ তাঁর শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। এরপর করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা ঘিরে ধরে তাঁকে। পরে নমুনা পরীক্ষা করে দেখা যায়, তিনি করোনামুক্ত রয়েছেন।

তুষার আলমের তিন বছর বয়সের সন্তান তাঁর স্ত্রী ল্যাব স্থাপনের কাজে সাহস জুগিয়েছেন বলে জানান। তিনি বলেন, ‘চিকিৎসক হিসেবে জীবন গড়ায় যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করার মতো মানসিকতা তৈরি ছিল। তবে কখনো এমন মহামারিতে সামনের সারিতে কাজ করতে হবে, তা ভাবতেও পারিনি। এমন সংকটকালে মানুষের পাশে না থাকলে, কখন করবেন? তাই ল্যাব স্থাপনের প্রশ্নে “না” বলার সুযোগ ছিল না।’

খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক মেহেদী নেওয়াজ বলেন, ল্যাব স্থাপনের ব্যাপারে সবাই সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছেন। তবে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন শাহনাজ পারভীন ও তুষার আলম। তাঁদের আন্তরিকতা ও সফল নেতৃত্বে এখনো ভালোভাবেই ল্যাব চলছে।