Thank you for trying Sticky AMP!!

কার্যক্রম শুরু, চালু রাখা নিয়ে সংশয়

বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত শনিবার হৃদ্‌যন্ত্রে রিং পরানোর কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়।

বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল

বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে হৃদ্‌যন্ত্রে রিং পরানোর কার্যক্রম শুরু হলেও তা বেশি দিন চালু রাখা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন খোদ চিকিৎসকেরাই। এর কারণ হিসেবে তাঁরা বলছেন, প্রশিক্ষিত জনবল না থাকায় এই কার্যক্রম চালু রাখা সম্ভব হবে না। গত শনিবার এ হাসপাতালে রিং পরানোর কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়।

হাসপাতালের উপপরিচালক আবদুল ওয়াদুদ বলেন, সক্ষমতা না থাকলেও সরকারি সিদ্ধান্তে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আপাতত জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট থেকে অতিথি চিকিৎসক এনে সপ্তাহে দুই দিন কার্যক্রম চালানো হবে। এ ছাড়া ইনস্টিটিউটে নার্স পাঠালে তারা প্রশিক্ষণও দিতে চেয়েছে।

হৃদ্‌রোগ বিভাগে গত দেড় দশকে রিং পরানোর ব্যবস্থা ছিল না। শনিবার এর উদ্বোধন করেন জাতীয় হৃদ্‌রোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মীর জামাল উদ্দিন। এদিন দুজন রোগীর হৃদ্‌যন্ত্রে রিং পরানো হয়। তবে চিকিৎসকেরাই বলছেন, বগুড়া ছাড়াও উত্তরবঙ্গের ৮ থেকে ১০টি জেলার মানুষের চিকিৎসাসেবার ভরসাস্থল শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। এখানে প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক রোগী ভর্তি থাকে।

হাসপাতালের হৃদ্‌রোগ বিভাগের প্রধান শেখ মো. শহিদুল হক বলেন, এই বিভাগে শয্যা আছে ৪০টি। নিয়মিত রোগী ভর্তি থাকে গড়ে ১০০ জন। রোগী সামাল দিতে জনবলসংকটের কারণে চিকিৎসকদের হিমশিম খেতে হয়। এখন রোগী সামলানোর পাশাপাশি নিয়মিত রিং পরানোর কার্যক্রম চালু রাখতে শূন্য পদে প্রশিক্ষিত জনবল ছাড়াও পদ বৃদ্ধি করা দরকার।

শেখ মো. শহিদুল হক আরও বলেন, বিভাগে বর্তমানে একজন অধ্যাপক, দুজন সহযোগী অধ্যাপক, দুজন সহকারী অধ্যাপক এবং একজন রেজিস্ট্রার ও দুজন সহকারী রেজিস্ট্রারের পদ আছে। অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক ছাড়াও রেজিস্ট্রারের পদ শূন্য। রিং পরানোর জন্য নেই প্রশিক্ষিত জনবল। ক্যাথল্যাব যন্ত্র চালানোর জন্য প্রশিক্ষিত টেকনিশিয়ানও নেই। কোনোরকমে একজনকে দিয়ে যন্ত্র চালানো হচ্ছে। নিয়মিত রিং পরানোর কার্যক্রম চালু রাখতে গেলে প্রশিক্ষিত চিকিৎসক ছাড়াও দুজন প্রশিক্ষিত টেকনিশিয়ান, দুজন প্রশিক্ষিত ওয়ার্ড বয় ও কমপক্ষে চারজন প্রশিক্ষিত নার্স দরকার। তা না হলে রিং পরানোর কার্যক্রম চালু রাখা সম্ভব হবে না।

প্রশিক্ষিত চিকিৎসক, টেকনিশিয়ান, ওয়ার্ড বয় ও সেবিকা দরকার। তা না হলে রিং পরানোর কার্যক্রম চালু রাখা সম্ভব হবে না।
শেখ মো. শহিদুল হক, হৃদ্‌রোগ বিভাগের প্রধান

হাসপাতাল প্রশাসনের দাবি, এখন থেকে এই অঞ্চলের রোগীরা স্বল্প খরচে (৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা) নিয়মিত হৃদ্‌যন্ত্রে রিং পরানোর সুযোগ পাবে। সপ্তাহে দুই দিন করে চলবে রিং পরানো কার্যক্রম।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এখানে ২০০৭ সালে পরীক্ষামূলকভাবে এনজিওগ্রাম কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। কিন্তু লোকবলের অভাব ও ক্যাথল্যাব যন্ত্র বিকল হওয়ায় এনজিওগ্রাম কার্যক্রম ২০১৪ সাল পর্যন্ত বন্ধ থাকে। একাধিকবার মেরামতের পরও পুরোনো যন্ত্র সচল না হওয়ায় ২০১৯ সালে নতুন আরেকটি যন্ত্র স্থাপন করা হয়। কিন্তু করোনার সংক্রমণের কারণে দীর্ঘ সময় কার্যক্রম বন্ধ ছিল। সম্প্রতি এনজিওগ্রাম কার্যক্রম চালু হয়। এরপরই রোগীদের হৃদ্‌যন্ত্রে রিং পরানোর উদ্যোগ নেওয়া হলো। তবে হৃদ্‌রোগ বিভাগে এক্সারসাইজ টলারেন্স টেস্ট (ইটিটি) যন্ত্রটি বিকল।