Thank you for trying Sticky AMP!!

কোনো সম্মাননাতেই শিক্ষকদের ঋণ শোধ হয় না

শিক্ষকদের ঋণ কখনোই শোধ করা যায় না। কোনো সম্মাননা দিয়ে বা আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে এ ঋণ শোধ করা সম্ভব নয়। তবে এসবের মাধ্যমে শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রকাশ করা যায়, ঋণ শোধের প্রচেষ্টা চালানো যায়। আইপিডিসি ও প্রথম আলো এমন আয়োজনের মধ্য দিয়ে প্রশংসনীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করল।

আজ বুধবার আইপিডিসি-প্রথম আলো প্রিয় শিক্ষক সম্মাননা উপলক্ষে সিলেট অঞ্চলের জন্য আয়োজিত অনলাইন সুধী সংযোগে বক্তারা এসব কথা বলেন। করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার ভার্চ্যুয়ালি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলো।

বিকেল চারটায় ওই সুধী সংযোগ শুরু হয়। এতে প্রিয় শিক্ষক সম্মাননার মনোনয়ন জমা দেওয়ার বিষয়েও আলোচনা হয়। এতে জানানো হয়, অনলাইনে www.priyoshikkhok.com ওয়েব ঠিকানায় নির্দিষ্ট ফরমে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত মনোনয়ন দেওয়া যাবে।

কেবল শিক্ষকদের সালাম-শ্রদ্ধা করলেই হবে না। কীভাবে তাঁরা শিক্ষা দিয়েছেন, সেটাও লালন করতে হবে, জীবনে প্রয়োগ করতে হবে।
বাবলী পুরকায়স্থ, প্রধান শিক্ষক, সিলেট সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর যুব কার্যক্রম ও ইভেন্টস বিভাগের প্রধান মুনির হাসান। তিনি বলেন, ‘আমার, আপনার প্রিয় শিক্ষককে সারা দেশের শিক্ষক হিসেবে পরিচিত করতে “প্রিয় শিক্ষক সম্মাননা” অনুষ্ঠান গত বছর থেকে শুরু হয়েছে। শিক্ষকদের মর্যাদা দেওয়া আমাদের অঞ্চলের যুগ যুগের ঐতিহ্য। সে ঐতিহ্যকেই আইপিডিসি ও প্রথম আলো ধারণ করে এ উদ্যোগ নিয়েছে।’

সিলেট সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের প্রধান শিক্ষক বাবলী পুরকায়স্থ অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আমি এখন চাকরিজীবনের শেষ প্রান্তে আছি। আমাদের মনের মধ্যে শিক্ষাগুরুরা এখনো স্থান করে আছেন। তাঁদের আমি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি। জীবনভর আমার প্রিয় শিক্ষকদের উপদেশ মাথায় রেখে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেছি। শিক্ষকদের মর্যাদা অনেক ওপরে। কেবল শিক্ষকদের সালাম-শ্রদ্ধা করলেই হবে না। কীভাবে তাঁরা শিক্ষা দিয়েছেন, সেটাও লালন করতে হবে, জীবনে প্রয়োগ করতে হবে। শিক্ষার্থীদের প্রতি শিক্ষকদের ভালোবাসা মা-বাবার মতোই নিঃস্বার্থ।’

প্রিয় শিক্ষক সম্মাননা আয়োজন শিক্ষকদের ত্যাগকে স্বীকৃতি দেওয়ার এক চমৎকার উদ্যোগ।
মোস্তাক আহমাদ দীন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, লিডিং ইউনিভার্সিটি

অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে আবৃত্তিকার নাজমা পারভীন কবি কাজী কাদের নেওয়াজের লেখা ‘শিক্ষাগুরুর মর্যাদা’ কবিতা আবৃত্তি করেন। ফাঁকে ফাঁকে একাধিক ভিডিও চিত্র দেখানো হয়।

লিডিং ইউনিভার্সিটির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোস্তাক আহমাদ দীন তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘আমাদের শিক্ষকদের বিস্তৃতি একজন ব্যক্তির জীবনে সারাটা জীবন ধরে থাকে। সারা জীবন তাঁদের দেওয়া শিক্ষা আমরা বয়ে বেড়াই। কোনো শিক্ষার্থীই তাঁর শিক্ষকের ঋণ শোধ করতে পারে না। পিতৃ-মাতৃঋণের মতোই শিক্ষকের ঋণও শোধ করা যায় না। শিক্ষকের জীবনযাত্রা ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত। প্রিয় শিক্ষক সম্মাননা আয়োজন শিক্ষকদের ত্যাগকে স্বীকৃতি দেওয়ার এক চমৎকার উদ্যোগ।’

বর্ডার গার্ড পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. ফয়জুল হক বলেন, ‘গত বছর আমরা একটি মিলনায়তনে অংশ নিয়েছিলাম। এবার অনলাইনে সুধীজনের এই সমাবেশ হলো। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতেও শিক্ষকদের প্রতি এই শ্রদ্ধা জানানোর ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন থাকায় আমরা উদ্বেলিত হয়েছি। দেশকে সভ্য দেশে পরিণত করতে শিক্ষকদের ভূমিকাই সবচেয়ে বেশি।’

আমি গর্বিত, কারণ, আমি একজন শিক্ষক।
রাজকুমার সিং, শিক্ষক, দি খাজাঞ্চি বাড়ি স্কুল অ্যান্ড কলেজ

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক প্রণব কান্তি দেব, এমসি কলেজের গণিত বিভাগের প্রভাষক দিলীপ চন্দ্র রায়, শাহজালাল আদর্শ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. আতাউর রহমান, ক্ল্যাসিক ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের শিক্ষক মো. লবিবুর রহমান প্রমুখ।

দি খাজাঞ্চি বাড়ি স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রবীণ শিক্ষক রাজকুমার সিং বলেন, ‘আমি গর্বিত, কারণ, আমি একজন শিক্ষক। প্রবীণ হয়ে গেছি আমরা, তথ্যপ্রযুক্তিতে খুব দক্ষ নই। এরপরও শিক্ষার্থীদের শিক্ষা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে জন্য কোভিড পরিস্থিতিতেও আমরা অনলাইনে ক্লাস নিচ্ছি।’

প্রথম আলোর সিলেট বন্ধুসভার সদস্যরা অনুষ্ঠান আয়োজনে সার্বিক সহযোগিতা করেন। এ বন্ধুসভার সভাপতি তামান্না ইসলাম এটি সঞ্চালনা করেন। সমাপনী বক্তব্য দেন প্রথম আলোর সিলেট প্রতিনিধি সুমনকুমার দাশ।