Thank you for trying Sticky AMP!!

ক্লাস হয় খোলা মাঠে

শ্রেণিকক্ষ–সংকটের কারণে মাঠে বসে ক্লাস করতে হয় শিশুদের। সম্প্রতি পাবনার চাটমোহরের শালিখা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ছবি: প্রথম আলো

বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠা ১৯২৯ সালে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে চার শ। কিন্তু শ্রেণিকক্ষ আছে মাত্র চারটি। ফলে রোদ–বৃষ্টি উপেক্ষা করে প্রায় ৯০ বছরের পুরোনো বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা ক্লাস করছে খেলার মাঠে।

দীর্ঘদিন নতুন কোনো ভবন তৈরি না হওয়ায় এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে পাবনার চাটমোহর উপজেলা সদরের শালিখা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। শিক্ষকদের দাবি, শ্রেণিকক্ষের পাশাপাশি বিদ্যালয়ে আসনসংকট আছে। ফলে শুধু খেলার মাঠই নয়, শিক্ষার্থীদের ক্লাস করতে হচ্ছে দাঁড়িয়ে ও মাটিতে বসে।

বিদ্যালয়ের শিক্ষক–শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতি করতে ১৯২৯ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। তখন থেকেই এখানে শিক্ষার্থীর চাপ বেশি। শুরু থেকে দুটি টিনের ঘরে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করানো হতো। এরপর ২০০১ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অর্থায়নে দুই কক্ষের একটি ভবন তৈরি হয়। দ্বিতীয় দফায় ২০০৯ সালে তিন কক্ষের আরও একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে পরিত্যক্ত হয় টিনের ঘরগুলো। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে প্রাক্‌–প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় সাড়ে চার শ শিক্ষার্থী আছে।

গত ২৭ নভেম্বর বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, পরিত্যক্ত টিনের ঘরগুলো তালা দেওয়া। দুই ভবনের পাঁচ কক্ষের একটিতে শিক্ষকেরা বসেন, বাকি চারটিতে গাদাগাদি বসে ক্লাস করে প্রাক্‌–প্রাথমিক, প্রাথমিক, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। কক্ষে জায়গা না থাকায় দ্বিতীয় শ্রেণির ক্লাস চলছিল খেলার মাঠে। মাটিতে চট বিছিয়ে বসে ক্লাস করছে খুদে শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানায়, সকাল নয়টা থেকে প্রাক্‌–প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস শুরু হয়। দুপুর ১২টায় প্রাক্‌–প্রাথমিক, প্রাথমিক ও দ্বিতীয় শ্রেণির ক্লাস ছুটি হওয়ার আগপর্যন্তআসনসংকট প্রকট আকার ধারণ করে। রোদ–বৃষ্টি উপেক্ষা করে প্রতিদিন অন্তত দুটি শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মাঠে ক্লাস করতে হয়।

চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী তানিয়া আক্তার জানায়, মাঠে ক্লাস করে তাদের অভ্যাস হয়ে গেছে। প্রতিদিন কোনো না কোনো ক্লাসের শিক্ষার্থীদের মাঠেই বসতে হয়। তীব্র রোদ উঠলে কষ্ট হলেও কিছু করার থাকে না।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ারা খাতুন বলেন, কক্ষসংকটের পাশাপাশি বিদ্যালয়ে আসনসংকট আছে। কিন্তু বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে বাধ্য হয়ে শিশুদের মাঠে বসিয়ে পড়াতে হচ্ছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য চাহিদাপত্র দেওয়া হয়েছে। সমস্যা বিবেচনায় শিগগিরই নতুন ভবন নির্মাণ করা হবে।