Thank you for trying Sticky AMP!!

খুনিদের ফাঁসি কার্যকর দাবি

টাঙ্গাইল

বেলা ২টা। হঠাৎ টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা সদরের মির্জাপুর গ্রামের সাহাপাড়া এলাকায় অবস্থিত সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের শাটার বন্ধ করে দিলেন ব্যবসায়ীরা। উদ্দেশ্য, দানবীর রণদা প্রসাদ সাহার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। তাঁর ১২৩তম জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠানস্থল রণদা নাটমন্দির প্রাঙ্গণে যাবেন সবাই।

বেলা ৩টার মধ্যে মির্জাপুর গ্রামবাসীর আয়োজনে অনুষ্ঠানস্থল হয়ে ওঠে পরিপূর্ণ। অতিথিদের আগমনের পর যন্ত্রে বেজে ওঠে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান ‘আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে। এ জীবন পুণ্য কর দহন-দানে।’

গানের সঙ্গে সঙ্গে ১২৩টি মোমবাতি প্রজ্বালনের মধ্য দিয়ে গতকাল মেঘে-ঢাকা মির্জাপুরের কালো আকাশের অন্ধকার দূর হয়ে যায়। এরপরই শুরু হয় রণদার কর্মজীবন নিয়ে আলোচনা। ফাঁকে ফাঁকে চলে শিশুশিল্পীদের নৃত্যানুষ্ঠান, কবিতা আবৃত্তি ও গান।

মির্জাপুর বাজার বণিক সমিতির সভাপতি গোলাম ফারুক সিদ্দিকী ও রণদা জন্মজয়ন্তী উদ্‌যাপন কমিটির সদস্যসচিব নিরঞ্জন পাল বক্তৃতায় বলেন, মানুষের দেওয়া দানবীর খেতাবপ্রাপ্ত রণদা এক দিনে সৃষ্টি হয়নি। তাঁকে যুদ্ধের সময় যাঁরা হত্যা করেছেন, তাঁদের ফাঁসির রায় হয়েছে। এ রায় দ্রুত কার্যকর করতে হবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি নাট্যকার মামুনুর রশীদ ছাড়াও অন্যদের মধ্যে কুমুদিনী কল্যাণ সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাজীব প্রসাদ সাহা, পরিচালক মহাবীর পতি, মির্জাপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র মোশারফ হোসেন, উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আবু আহমেদ, মির্জাপুর পৌর বিএনপির সভাপতি হযরত আলী মিঞা, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান সরকার হিতেশ চন্দ্র, মির্জাপুর হরিসভার কার্যকরী সভাপতি বিমান বিহারী বসু ও রণদা জন্মজয়ন্তী উদ্‌যাপন কমিটির আহ্বায়ক দে সুধীর চন্দ্র বক্তব্য দেন।

প্রধান অতিথি মামুনুর রশীদ বলেন, শিক্ষা শুধু সার্টিফিকেট বা বর্ণ শিক্ষা নয়। শিক্ষার বাণী বুকে ধারণ করতে হবে। নারীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। আর নারী শিক্ষার কথা বলতে গেলে বেগম রোকেয়ার সঙ্গে দানবীর রণদার কথা অবশ্যই বলতে হবে। কারণ, রণদা নারীশিক্ষার বিস্তারের জন্য আজন্ম কাজ করে গেছেন। নারীশিক্ষার জন্য তাঁর স্থাপিত ভারতেশ্বরী হোমস, কুমুদিনী নার্সিং স্কুলসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আজও দাঁড়িয়ে আছে।

কুমুদিনী কল্যাণ সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাজীব প্রসাদ সাহা বলেন, রণদা আজীবন মানবসেবায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। তাঁর রেখে যাওয়া কাজগুলো এগিয়ে নিতে তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

১ অক্টোবর রণদার জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে শিশুকিশোরদের জন্য নাচ, গান ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে গতকাল পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

এর আগে গতকাল সকাল ৬টায় মির্জাপুর গ্রামবাসীর উদ্যোগে প্রভাতফেরি হয়, যা সাহাপাড়া এলাকা থেকে শুরু হয়ে কুমুদিনী চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে গ্রামবাসী রণদার প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন।