খুলনার তিন হাসপাতালে ৮ জনের মৃত্যু
খুলনা মহানগরে অবস্থিত দুটি বেসরকারিসহ পাঁচটি করোনা হাসপাতালের মধ্যে তিনটিতে আটজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে আজ শনিবার সকাল পর্যন্ত হাসপাতালগুলোয় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁরা মারা যান। বাকি দুটি হাসপাতালে এই সময়ের মধ্যে কোনো করোনা রোগীর মৃত্যু হয়নি। এটা নিয়ে টানা দুদিন খুলনার হাসপাতালগুলোয় রোগীর মৃত্যুর সংখ্যা দুই অঙ্কের নিচে থাকল।
গত ২৪ ঘণ্টায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিচতলায় অবস্থিত ২০০ শয্যার করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে ছয়জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালে একজন ও বেসরকারি গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন একজন করোনা রোগী। ওই সময়ের মধ্যে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট খুলনা সদর হাসপাতাল ও বেসরকারি সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। ওই সময়ের মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোয় কোনো রোগী মারা যাননি।
খুলনা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, খুলনার তিনটি হাসপাতালে যে আটজন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে, তার মধ্যে খুলনা জেলার তিনজন। বাকিরা অন্য জেলা থেকে খুলনায় চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় খুলনায় ৪৭৬টি নমুনা পরীক্ষা করে ৯৫টি নমুনায় করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। শনাক্তের ওই হার ১৯ শতাংশ।
খুলনা ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালের মুখপাত্র চিকিৎসক সুহাস রঞ্জন হালদার জানান, আজ সকাল পর্যন্ত ২০০ শয্যার এই হাসপাতালে রোগী ভর্তি আছে ১১৭ জন। এর মধ্যে করোনা আক্রান্ত রোগী ৪১ জন ও করোনার উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন ৪৫ জন। এ ছাড়া ওই হাসপাতালে থাকা ২০টি এইচডিইউতে রোগী ভর্তি ১১ জন। ২০টি আইসিইউ শয্যার কোনোটিই খালি নেই। হাসপাতালটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৬ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এ ছাড়া ওই সময়ের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন চারজন।
এদিকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট খুলনা সদর (জেনারেল) হাসপাতালে (৮০ শয্যার করোনা ইউনিট) বর্তমানে করোনা আক্রান্ত রোগী ভর্তি আছেন ৩৪ জন। ওই হাসপাতালের মুখপাত্র চিকিৎসক কাজী আবু রাশেদ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ওই হাসপাতালে একজন নতুন করোনা রোগী ভর্তি হয়েছেন। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন পাঁচজন।
খুলনার শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের মুখপাত্র চিকিৎসক প্রকাশ চন্দ্র জানান, ওই হাসপাতালের ১০টি আইসিইউসহ ৪৫ শয্যার করোনা ইউনিটে বর্তমানে রোগী ভর্তি রয়েছে ৪৩ জন। তবে কোনো আইসিইউ শয্যা খালি নেই। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে তিনজন করোনা রোগী ভর্তি হয়েছেন। এ ছাড়া ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি গেছেন চারজন।
বেসরকারি গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গাজী মিজানুর রহমান জানান, ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। ১৫০ শয্যার করোনা ইউনিটে বর্তমানে রোগী ভর্তি ৭৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে রোগী ভর্তি হয়েছেন ২০ জন এবং ছাড়পত্র নিয়েছেন ৯ জন।
খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপক (প্রশাসন ও মানবসম্পদ) মো. হামিদুল ইসলাম খান বলেন, ৮৭ শয্যার করোনা ইউনিটে কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। বর্তমানে রোগী ভর্তি আছে ৬৬ জন। ২৪ ঘণ্টায় সেখানে ১২ জন ভর্তি ও ৪ জন ছাড়পত্র নিয়েছেন।