খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে সিন্ডিকেট সভা শুরু, স্যালাইন চলছে ২ ছাত্রের
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভা শুরু হয়েছে। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে প্রশাসন ভবনের সম্মেলনকক্ষে ওই সভা শুরু হয়। ওই সভায় তিন শিক্ষকের বরখাস্ত করার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে মনে করছেন
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা। অন্যদিকে, নিজেদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে অনড় রয়েছেন দুই শিক্ষার্থী। পঞ্চম দিনের মতো আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন তাঁরা। শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ায় দুজনকেই স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার বেলা দুইটার দিকে অনশনরত শিক্ষার্থী ইমামুল ইসলাম অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাঁকে স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে অনশনরত মোহাম্মদ মোবারক হোসেন ওরফে নোমান অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকেও স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়।
মোহাম্মদ মোবারক হোসেন বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী। ইমামুল ইসলাম ইতিহাস ও সভ্যতা বিভাগের শিক্ষার্থী। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটা থেকে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেছেন।
এদিকে গতকাল খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করে উপাচার্য বরাবর আবেদন করার অনুরোধ করেন। এরপর শিক্ষার্থীরা উপাচার্য বরাবর আবেদন করলেও মাধ্যম হিসেবে উল্লেখ করেন মেয়রকে। বিকেলের দিকে ওই চিঠি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মেয়রের কাছে নিয়ে যান ২৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলী আকবর।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, যেহেতু চিঠিতে মাধ্যম হিসেবে মেয়রকে উল্লেখ করা হয়েছে, এ কারণে মেয়রের কাছ থেকে অনুমোদন না নিয়ে আসা পর্যন্ত ওই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। চিঠি আসার পর শৃঙ্খলা বোর্ডের সভা আহ্বান করে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
গত বছরের ১ ও ২ জানুয়ারি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন করেন। এ সময় শিক্ষকদের সঙ্গে অসদাচরণ, তদন্ত কমিটিকে সহযোগিতা না করাসহ বিভিন্ন কারণে ওই দুই শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ড। ওই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে তাঁরা আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটা থেকে শুরু হওয়া অনশন কর্মসূচি এখনো অব্যাহত আছে। এর আগে রোববার সন্ধ্যা সাতটা থেকে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের জন্য ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়ে একই স্থানে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছিলেন ওই দুই শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতন-ফিস কমানো, আবাসন সংকট নিরসনসহ পাঁচ দফা দাবি আদায়ে শত শত শিক্ষার্থীর সঙ্গে ইমামুল ইসলাম ও মোহাম্মদ মোবারকও আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন। ওই সময় দুই শিক্ষকের সঙ্গে অসদাচরণ করার অভিযোগ তোলা হয় তাঁদের বিরুদ্ধে। তবে ওই দুই শিক্ষার্থী দাবি করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ ভিত্তিহীন ও প্রহসনমূলক।