Thank you for trying Sticky AMP!!

‘গরিব অইয়া ঠেকি গেছি’

‘বাজারো পঞ্চাশ ট্যাকার নিচে কোনো সবজি পাওয়া যায় না। আগে পঞ্চাশ টাকায় দুই কেজি সবজি কিনা যাইত ওখন ওউ টেকায় এক কেজিও মিলে না। পরিবার লইয়া টাউনে থাকা কষ্ট ওই যার। গরিব অইয়া ঠেকি গেছি।’ সিলেট নগরের বন্দরবাজার এলাকার ব্রহ্মময়ী বাজারে সবজি কিনতে এসে কথা গুলো বলছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী আবদুল হাকিম।

করোনা পরিস্থিতর কারণে অনেকের আয় কমেছে, আবার অনেকে কর্মহীন হয়ে রয়েছেন। এমন সময়ে বাজারে নিত্যপণ্য সবজির ঊর্ধ্বগতির কারণে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ থেকে শুরু করে মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যরা। এমন পরিস্থিতিতে পরিবার–পরিজন নিয়ে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে।

নগরের বাজার ঘুরে জানা গেছে, বাজারের অধিকাংশ সবজির কেজি ৫০ টাকা। প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা, বরবটি ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, পুঁইশাক ৩৫ থেকে ৫০ টাকা, পটোল ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, পেঁপে ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ থেকে ৬৫ টাকা, বেগুন ৭০ থেকে ৭৫ টাকা, টমেটো ১০০ থেকে ১২৫ টাকা, কুমড়া আকারভেদে ৪০ থেকে ৮০ টাকা।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৯০ টাকা, আলু ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। প্রতি হালি হাঁসের ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬৫ টাকায় এবং মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৪৮ টাকায়। আর মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়।
নগরের মির্জাজাঙ্গাল এলাকার বাসিন্দা প্রকাশ কুমার বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল প্রায় তিন মাস। কয়েক মাস হলো আবার চালু করেছেন। কিন্তু ক্রেতা নেই। জমানো যা টাকাপয়সা ছিল, সেগুলো শেষ হয়ে গেছে। সবকিছু খুলে যাওয়ার পরে সবজির বাজারে আগুন লেগেছে। কীভাবে কী করবেন তা জানেন না।

কাঠমিস্ত্রির কাজ করেন নগরের শেখঘাট এলাকার আলমগীর হোসেন। করোনা পরিস্থিতির আগে পারিশ্রমিক হিসেবে দিনে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় করতেন। এখন আগের মতো আর কাজ নেই। কাজ পেলেও মজুরি কম বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘আগের লাখান কামও মিলে না, মজুরিও মিলে না। এরপরও বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে টিকিয়া থাকতো লাগব। আগে আলু আর ডাল দিয়া চালাইতাম। ওখন আলুর কেজি ৫০ টাকা। সবজিও মিলে না ৫০ টাকার নিচে। আমরা গরিবেরা মরছি। করোনায় সব শেষ করি দিছে।’

বন্দর বাজারে সবজি বিক্রেতা আলী হোসেন বলেন, ক্রেতারা মনে করেন, তাঁরা দাম বাড়িয়েছেন। আসলে তাঁদেরও বেশি দামে কিনে আনতে হচ্ছে।
এদিকে সবজির পাশাপাশি বেড়েছে চালের দামও। নগরের বিভিন্ন চাল বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আতপ চাল এখন কেজি ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা টাকা, সেদ্ধ চাল ৫২ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।