Thank you for trying Sticky AMP!!

গরু চুরি ঠেকাতে নির্ঘুম রাত

পাবনার বেড়া উপজেলার চরাঞ্চলে সম্প্রতি ব্যাপক হারে গরু চুরি বেড়ে গেছে। মাস তিনেক হলো চোরের উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন গরুমালিকেরা। পাহারা দিতে অনেকেই গোয়ালঘরে বিছানা করে গরুর সঙ্গে রাত্রিযাপনে বাধ্য হচ্ছেন।

ভুক্তভোগী কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যমুনার চরগুলোয় গরু পালন এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বেড়া উপজেলার চরপেঁচাকোলা, দক্ষিণ চরপেঁচাকোলা, চরনাগদা, চরনাকালিয়া, চরসাফুল্যা, চরসাঁড়াশিয়া, চরকল্যাণপুরসহ প্রায় ২৫টি চরের বেশির ভাগ বাড়িতেই কৃষকেরা দীর্ঘদিন ধরে গরু পালন করছেন। পার্শ্ববর্তী সিরাজগঞ্জ জেলার শাহাজাদপুর ও চৌহালী উপজেলার চরগুলোতেও প্রচুর গরু পালন করা হয়।

চরের কৃষকেরা জানান, সংঘবদ্ধ চোরের দল গভীর রাতে ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়ে প্রায়ই কোনো না কোনো বাড়িতে হানা দিচ্ছে। তারা গৃহস্থের গোয়াল থেকে গরু তুলে নিয়ে নৌকায় করে চম্পট দিচ্ছে।

দক্ষিণ চরপেঁচাকোলা গ্রাম থেকে মাস তিনেক আগে আবদুল হাইয়ের প্রায় দেড় লাখ টাকা দামের একটি ষাঁড় চুরি হয়। দিন দশেক আগে গ্রামের আবদুল লতিফ প্রামাণিকের প্রায় দুই লাখ টাকা দামের একটি গাভি চুরি হয়। দক্ষিণ চরপেঁচাকোলা গ্রামের পার্শ্ববর্তী সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার ওমপুর গ্রামের আয়নাল কারিগরের প্রায় চার লাখ টাকা দামের দুটি গরু মাস দুয়েক আগে একইভাবে চুরি হয়। গত ১৬ মার্চ রাতে বেড়ার চরসাফুল্ল্যা গ্রামের সানোয়ার হোসেনের প্রায় পাঁচ লাখ টাকা দামের চারটি গরু চুরি হয়।

ভুক্তভোগী কৃষকেরা জানান, পুলিশি ঝামেলার কারণে তাঁরা থানায় গিয়ে এ ব্যাপারে অভিযোগ দিতে চান না। এ ছাড়া যমুনা নদী পাড়ি দিয়ে দুর্গম এলাকার চরগুলোয় পুলিশের পক্ষে দ্রুত পৌঁছানোও অনেক সময় হয়ে ওঠে না। এ জন্য কৃষকেরা নিজ উদ্যোগেই তাঁদের গরুগুলো পাহারা দিতে শুরু করেছেন। চরাঞ্চলের বেশির ভাগ বাড়িতেই কৃষকেরা গোয়ালঘরে শুয়ে-বসে বা হাঁটাহাঁটি করে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।

দক্ষিণ চরপেঁচাকোলা গ্রামের খামারি ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ‘আমার খামারে ১৪টি গরু। গরুগুলো রক্ষা করার জন্য বাধ্য হয়া গোয়ালেই রাত কাটাচ্ছি।’ চরসাঁড়াশিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও ওয়ার্কার্স পার্টির পাবনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘গরুচোরেরা চরবাসীর ঘুম কেড়ে নিয়েছে। প্রায়ই কোথাও না কোথাও গরু চুরি হচ্ছে।’

বেড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিদ মাহমুদ খান বলেন, এ ধরনের অভিযোগ এর আগে কেউ দেয়নি। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।