Thank you for trying Sticky AMP!!

গাড়ি ঠেলে ঠেলেই ২০০ মিটার পার

কাদামাটিতে বন্ধ হয়ে গেছে অটোরিকশা। যাত্রীরা ঠেলে গাড়ি সচল করার চেষ্টা করছেন। গত শনিবার ইসলামপুর-দেওয়ানগঞ্জ সড়কের মার্কাস মসজিদের সামনে। ছবি: প্রথম আলো

পুরো সড়কের কোথাও দুর্ভোগ নেই। তবে ২০০ মিটার সড়কে দুর্ভোগ সীমাহীন। কাদাপানিতে নেমে চালকের সঙ্গে যাত্রীদেরও ২০০ মিটার সড়কে গাড়ি ঠেলতে হয়। মাটি আর পানি মিশে সড়কে কাদায় একাকার। দীর্ঘদিন ধরে জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার মার্কাস মসজিদের সামনে এসে চলাচলকারী যাত্রী ও পথচারীরা এই দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।

ইসলামপুর থেকে দেওয়ানগঞ্জ পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার সড়ক। পুরো সড়কের কোথাও ভাঙাচোরা নেই। কিন্তু ইসলামপুরের মার্কাস মসজিদের সামনের ২০০ মিটার সড়কে কাদাপানিতে একাকার। দেখে বোঝার উপায় নেই এটি একটি মহাসড়ক। এই অংশটুকু এক বছরে প্রায় ১০ বার মেরামত করা হয়েছে। তবে এক মাসের বেশি যায় না, আবার আগের অবস্থার সৃষ্টি হয়। সড়কের দুই পাশে পানিনিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থাও নেই।

গত শনিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, মার্কাস মসজিদের সামনে থেকে খানাখন্দের শুরু। পুরো সড়কে কোনো পাকা অংশ দেখা যায় না। পিচঢালাই অনেক আগেই উঠে গেছে। অসংখ্য ছোট–বড় গর্ত। গর্তের মধ্যে ফেলা হয়েছে মাটি। মাটি-পানি মিশে শুধু কাদা আর কাদা। সড়কের দুই পাশে পানি জমে রয়েছে। ইজিবাইক কাদার মধ্যে যাত্রী নিয়ে আটকে গেছে। যাত্রীরা ইজিবাইক থেকে নেমে কাদাপানিতে হেঁটে যাচ্ছে। চালক ঠেলে ঠেলে ইজিবাইক গর্ত থেকে তুলছেন। একই অবস্থা এই সড়কে সব যানবাহনের ক্ষেত্রে। যাত্রীসহ একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা কাদায় আটকে গেছে। পরে যাত্রী ও চালক মিলে অটোরিকশা ঠেলা দিচ্ছেন।

ইজিবাইকচালক আমিনুর ইসলাম এ সড়কে দিয়ে তেমন একটা চলাচল করেন না। এদিনও আসতে চাননি। শহরের ভেতরে তীব্র যানজট। সেই যানজট থেকে রক্ষা পেতে এ সড়কে ঢুকে পড়েন। কিন্তু এখানে এসে তিনি আরও বড় বিপদে পড়েন। তাঁর ইজিবাইক কাদায় আটকে পড়ে। যাত্রী নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করায় তাঁর গাড়ির ব্যাটারি বসে গেছে। এখন আর ইজিবাইক চলছেও না। তিনি যাত্রী নামিয়ে দিয়ে ঠেলে ঠেলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

আমিনুর বলেন, ‘এটি একটি মহাসড়ক। সড়কের কোথাও কোনো ভাঙা নেই। শুধু এখানেই ভাঙা। এমন অবস্থা যে এখানে এসে বিপদে পড়তেই হবে। পানি আর মাটিতে সড়কটির এই অবস্থা। যাত্রীরাও যেমন দুর্ভোগের শিকার, আমরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। প্রায়ই গাড়ি উল্টে যাচ্ছে বা নষ্ট হচ্ছে।’

সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক জালাল উদ্দিন বলেন, সারা রাস্তায় কোথাও একটুও দাঁড়াতে হলো না। এই অংশটুকুর মধ্যে আসা-যাওয়ার সময় কষ্টের শেষ নেই। যাত্রীদের নামিয়ে গাড়ি ঠেলে ঠেলে পার হতে হয়। এতে যাত্রীরা বিরক্ত হয়। যাত্রীদের গায়ে কাদাপানি লেগে যায়। তিনি বলেন, এখানে প্রায় ১০ বার মেরামত করেছে। কিন্তু লাভ কী? দুই পাশের সড়কে পানি যাওয়ার ব্যবস্থা নেই। ফলে পানি জমে আবারও একই অবস্থা হয়। একটাই সহজ হিসাব, এখানে সড়কের দুই পাশে নালা করতে হবে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সেটা করে না, শুধু কিছুদিন পরপর মেরামত করে।

জামালপুরের সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ওই অংশে অনেকবার মেরামত করা হয়েছে। সেখানে সড়কটি দ্রুত সময়ের মধ্যে খারাপ হয়ে যায়। সড়কের দুই পাশে পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই। ফলে পানি আটকে দ্রুত সময়ের মধ্যে সেখানে এমন অবস্থা হয়। তিনি উপজেলার সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলবেন। দুই পাশে পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হবে। তাহলে আর সড়কটির এমন হাল হবে না। ভাঙা অংশ আজ (রোববার) থেকেই মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হবে যাতে যানবাহন চলাচলের উপযোগী হয়।