Thank you for trying Sticky AMP!!

গুরুদাসপুরে সাংসদের মদদে উপজেলা চেয়ারম্যানকে মারধরের অভিযোগ

নাটোরের গুরুদাসপুরে উপজেলা চেয়ারম্যানকে মারধরের ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেনকে (৪৫) সাংসদের মদদে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে উপজেলার চাপিলা ইউনিনের রায়পুর গ্রামে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। চেয়ারম্যান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

এ হামলার পেছনে স্থানীয় সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আবদুল কুদ্দুস, তাঁর ছেলে শোভন ও শ্যালক রয়েলের ইন্ধন রয়েছে বলে উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগ, অঙ্গসংগঠনের ওই পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়।

এ ঘটনায় গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিকে রায়পুর এলাকার আয়ুব আলী (৫০), মামুনুর রশিদ (৩৬), রাজীব (২৫), তারেক হোসেন (২০), সবুর হোসেন (৫০), চান্দু মিয়া (৬০), মন্টুসহ (৪২) নয়জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। চেয়ারম্যানের বোনজামাই আবদুল মান্নান বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলায় ইন্ধনদাতা হিসেবে স্থানীয় সাংসদ মো. আবদুল কুদ্দুস, তাঁর ছেলে শোভন ও শ্যালক রয়েলের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুর রাজ্জাক তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের ওপর হামলার ঘটনার পর শহরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হলেও রাত নয়টায় সংবাদ সম্মেলনের পর ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করা হয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে।

শহরের চাঁচকৈড় বাজারের দলীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাহিদুল ইসলাম এতে বক্তব্য দেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনিসুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মো. শাহনেওয়াজ আলী, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আনিসুর রহমান মোল্লা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা দাবি করেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির মানুষ। সম্প্রতি শেষ হওয়া পৌরসভা নির্বাচনে সাংসদ মো. আবদুল কুদ্দুস দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দলীয় প্রার্থীর (নৌকা) পক্ষে সক্রিয় ছিলেন। এ কারণে স্থানীয় সাংসদ, তাঁর ছেলে ও শ্যালক ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েন আনোয়ার হোসেনের ওপর।

গতকাল দুপুরে মো. আনোয়ার হোসেন চাপিলা ইউনিয়নের রায়পুর গ্রামে একটি বিরোধ মীমাংসার জন্য যান। তার আগে সাংসদ তাঁর সমর্থকদের নিয়ে একই জায়গায় গিয়েছিলেন। সেখান থেকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে হত্যার নির্দেশ দেওয়া হয় বলে আওয়ামী লীগের নেতারা অভিযোগ করেন। সাংসদ এলাকা ছাড়ার ১০ মিনিট পর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সেখানে পৌঁছালে এজাহারে উল্লেখিত ব্যক্তিরা তাঁকে মারধর করেন বলে অভিযোগ। পরে চেয়ারম্যানের চালক, সঙ্গে থাকা এক আওয়ামী লীগ নেতাসহ স্থানীয় লোকজনের হস্তক্ষেপে প্রাণে বাঁচেন তিনি।

আওয়ামী লীগ নেতারা অভিযোগ করেন, স্থানীয় সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হয়ে মো. আবদুল কুদ্দুস আর দলের সঙ্গে নেই। সব সময় নৌকার বিপক্ষে অবস্থান করেন তিনি।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আনোয়ার হোসেনের ভাষ্য, তিনি সম্প্রীতির রাজনীতি করেন। দলের প্রতি আনুগত্য থাকায় সাংসদের নিষেধ উপেক্ষা করে নৌকার পক্ষে পৌর নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। পক্ষান্তরে সাংসদের মনোনীত প্রার্থী (দলের বিদ্রোহী) নির্বাচনে হেরে যাওয়ায় তাঁর ওপর ক্ষিপ্ত হয়েছেন সাংসদ আবদুল কুদ্দুস। তিনি দলের হাইকমান্ডের কাছে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের ওপর হামলা ও আওয়ামী লীগের অভিযোগ প্রসঙ্গে স্থানীয় সাংসদ মো. আবদুল কুদ্দুস মুঠোফোনে গতকাল রাতে বলেন, ‘কুকুর দিয়েছে কামড়। তাই বলে কি কুকুরের পায়ে কামড় দেওয়া মানুষের শোভা পায়!’