Thank you for trying Sticky AMP!!

গৃহবধূকে মারধরের অভিযোগে স্বামী-শ্বশুর ও শাশুড়ির নামে মামলা

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় যৌতুকের টাকা না পেয়ে গৃহবধূকে মারধর করে গুরুতর জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় গতকাল রোববার রাতে মারধরের শিকার ওই নারী নালিতাবাড়ী থানায় যৌতুক আইনে তাঁর স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ির নামে মামলা করেছেন।

ওই নারীর নাম খাদিজাতুল কোবরা। তাঁর বাবার বাড়ি শেরপুর জেলা সদরের লুকাইরপাড় গ্রামে। খাদিজাতুল কোবরার ভাষ্য, প্রায় পাঁচ বছর আগে উপজেলার বেকীকুড়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের সময় তাঁর স্বামীকে নগদ দেড় লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার দেওয়া হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে যৌতুকের জন্য তাঁকে ফের চাপ দিতে থাকেন স্বামী ও তাঁর পরিবারের লোকজন। যৌতুক দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাঁর স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি প্রায়ই তাঁকে মারধর করতেন। অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে তাঁকে শারীরিক নির্যাতনও করা হতো। তাঁদের সংসারে তিন বছরের এক কন্যাসন্তান আছে। মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবে এত দিন তিনি সব মুখ বুজে সহ্য করতেন। এখন তাঁর সহ্য সীমা ছাড়িয়ে গেছে।

মামলার এজাহার ও পরিবার সূত্র জানায়, ১৯ সেপ্টেম্বর খাদিজাতুলের কাছে তিন লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন তাঁর স্বামী সাইফুল ইসলাম। বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাঁকে লাঠি দিয়ে বেদম মারধর করা হয়। মারধরের একপর্যায়ে সাইফুল দা দিয়ে কোপ দিলে খাদিজাতুল সরে গেলে তাঁর পায়ে লাগে। এতে তাঁর বাঁ পায়ের গোড়ালির ওপরে কেটে যায়। এমন পরিস্থিতিতে তালাক দেওয়ার হুমকি দিয়ে সাইফুল ও তাঁর পরিবারের লোকজন খাদিজাতুলকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। নিরুপায় হয়ে তিনি পাশের বাড়িতে আশ্রয় নেন। পরে খবর পেয়ে তাঁর বাবা ২০ সেপ্টেম্বর অসুস্থ অবস্থায় মেয়েকে চিকিৎসার জন্য শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে এক সপ্তাহ চিকিৎসা শেষে বাবার বাড়িতে ওঠেন তিনি। গতকাল রাতে খাদিজাতুল বাদী হয়ে স্বামী সাইফুল ইসলাম, শ্বশুর আলী আকবর ও শাশুড়ি শাহানাজ বেগমের নামে যৌতুক আইনে থানায় মামলা করেন। মামলার পর থেকে সাইফুল ও তাঁর বাবা মা বাড়িতে নেই।

খাদিজাতুলের বাবা গোলাম মোস্তাফা বলেন, ‘যৌতুকের টাকার জন্য মেয়েটাকে প্রতিনিয়ত মারধর করা হয়। বিয়ের সময় দেড় লাখ টাকা দিয়েছি। এখন আরও তিন লাখ টাকার জন্য মেয়েকে মারধর করা হয়েছে, দা দিয়ে পায়ে কোপানো হয়েছে। অসুস্থ অবস্থায় মেয়েটাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে সাইফুল ও তার পরিবার।’

এ বিষয়ে খাদিজাতুল বলেন, ‘বিয়ের পর থেকে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে আমাকে মারধর করত তারা। শ্বশুর-শাশুড়ির কথা মতো স্বামী যৌতুকের জন্য চাপ সৃষ্টি করত। আমাদের এক মেয়ে আছে। মেয়ের কথা চিন্তা করে অনেক নির্যাতন সহ্য করেছি। আমি এখন এর উপযুক্ত বিচার চাই।’

অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য সাইফুল ইসলামের মুঠোফোনে কল করা হলে তাঁর নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সহকারী পরিদর্শক (এসআই) জুলহাস উদ্দিন বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে। সাইফুলসহ তাঁর পরিবারের লোকজন বাড়ি ছেড়ে অন্য কোথাও আত্মগোপনে চলে গেছেন।

নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাতে ওই নারী থানায় মামলা করার পর থেকে আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।