Thank you for trying Sticky AMP!!

গ্রাম করোনামুক্ত রাখতে স্বেচ্ছাশ্রমে ধান কাটছেন শিক্ষার্থীরা

কৃষকদের সঙ্গে মিলেমিশে ধান কাটছেন শিক্ষার্থীরা। ছবিটি খাগড়াছড়ির কমলছড়ি মঙ্গলচাঁনপাড়া থেকে তোলা

নিজেদের গ্রামকে করোনামুক্ত রাখতে স্বেচ্ছাশ্রমে ধান কাটছেন শিক্ষার্থীরা। বর্তমান পরিস্থিতিতে গ্রামের বাইরে থেকে শ্রমিক নিয়ে আসা ক্ষতিকর হবে, এ চিন্তা থেকে ধান কাটার উদ্যোগ নেন খাগড়াছড়ির কমলছড়ি মঙ্গলচাঁনপাড়া গ্রামের শিক্ষার্থীরা। এতে একদিকে যেমন গ্রাম সুরক্ষিত থাকছে, অন্যদিকে কৃষকদেরও টাকা বেঁচে যাচ্ছে।

স্থানীয় কয়েকজন বলেন, গ্রামে ৪৪টি পরিবারের বসবাস। এলাকার অধিকাংশই কৃষক। কয়েকজন চাকরিজীবী ও ব্যবসায়ী থাকলেও তাঁরা কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত। বর্তমান পরিস্থিতিতে গ্রামের বাইরে থেকে শ্রমিক নিয়ে আসা গ্রামের লোকজনের জন্য ক্ষতিকর। সে জন্য গ্রামের তরুণ-তরুণীরা কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানান, তাঁরা নিজেরা গ্রামের সবার ধান কেটে দেবেন। প্রথমে তরুণ-তরুণীরা মিলে ধান কাটলেও পরবর্তী সময়ে গ্রামের বিভিন্ন বয়সের লোকজন যোগ দেন।

খাগড়ছড়ি সদর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে কমলছড়ি ইউনিয়নের মঙ্গলচাঁনপাড়ায় গতকাল শনিবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, ১২ থেকে ৫০ বছরের লোকজন কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে মিলেমিশে ধান কাটছেন। প্রতি দলে রয়েছে ৮ থেকে ১০ জন।

ধান কাটার মূল উদ্যোক্তা খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী মনোতোষ ত্রিপুরা বলেন, কলেজ বন্ধ। ঘরে বসে না থেকে গ্রামের লোকদের জন্য কিছু করার চিন্তা থেকে ধান কাটার বিষয়টি মাথায় আসে। এরপর গ্রামের তরুণ-তরুণীদের সঙ্গে কথা বলে ধান কাটার বিষয়টি কৃষকদের জানানো হয়। এতে কৃষকদের যেমন লাভ হচ্ছে, তেমনি গ্রামের লোকদেরও করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষা দেওয়া যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু ধান কেটে দিচ্ছি না, মিলেমিশে মাড়াই করে কৃষকের ঘরে ধান তুলে দিয়ে আসছি।’

কৃষক অনিল ত্রিপুরা বলেন, ‘আমার পৌনে তিন একর জমিতে ধান কাটাতে খরচ হতো ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা। এবার গ্রামের সবার সহযোগিতায় কোনো টাকা খরচ হয়নি। এমনকি ধান কাটতে এসে ছেলেমেয়েদের নাশতা খাওয়াতে চাইলেও খাওয়াতে পারিনি।’

কৃষক সত্যবান ত্রিপুরা বলেন, ‘দুই একর জমিতে বোরো ধান লাগিয়েছি। করোনার কারণে গ্রামের লোকজনের কথা চিন্তা করে বাইরে থেকে ধান কাটার শ্রমিক নিয়ে আসতে পারছি না। এদিকে ধান পেকে যাচ্ছিল। এলাকার ছেলেমেয়েরা যখন নিজেরা এসে ধান কাটার কথা বলল, যেন আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছি।’

কমলছড়ি ইউনয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান চাউপ্রু মারমা বলেন, ‘ধান কাটার বিষয়টি শুনেছি। এটি একটি ভালো কাজ। মঙ্গলচাঁনপাড়ার তরুণ-তরুণীদের কাছ থেকে সবার শিক্ষা নেওয়া উচিত।’